।। জয় বাংলা।।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সাবেক নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী, আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠানিক সম্পাদক ছিলেন। তিনি জয় বাংলাকে সাক্ষাতকার দেন। জয়বাংলার পক্ষ থেকে তাকে বর্তমান বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের প্রতিনিধি নানা প্রশ্ন করেন। আত্মবিশ্বাসী এই রাজনীতিক উত্তর দেন সাবলীলভাবে।
প্রথমেই স্বাগত জানিয়ে তাকে প্রশ্ন করা হয়, আওয়ামীলীগ রাজনীতির মাঠে নেই কেন, বা রাজনীতিতে নামছে কেন?
উত্তরে নাকচ করে দিয়ে বলেন তিনি, আওয়ামীলীগ রাজনীতির মাঠে নেই, কথা ঠিক নয়।আওয়ামীলীগ রাজনীতির মাঠে আছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক মাঠে একমাত্র আওয়ামীলীগ এখন প্রধান আলোচ্য। আলোচনায় আওয়ামীলীগ শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক দল। এ হিসাবে রাজনীতির মাঠে আওয়ামীলীগ আছে। রাজপথ বা প্রকাশ্যে জনসভায় নেই এটা সত্য, এটা কৌশল। বর্তমান প্রেক্ষাপেট কৌশল হিসাবে সক্রিয় রয়েছে সর্বত্র। আওয়ামীলীগ ছাড়া দেশে বিদেশে আর কোন দল এতো বেশি করে আলোচনায় নেই। অতএব আওয়ামীলীগ জনগণের দল, জনগণের আত্মায় আওয়ামীলীগ জীবন্ত একটি রাজনৈতিক সংগঠন। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ ঐক্যবদ্ধ আছে। সক্রিয় আছে।
সম্পুরক কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ইউনুস সরকার বা তার সহযোগীরা বঙ্গবন্ধুকে নিষিদ্ধ করেছে, জয় বাংলা শ্লোগান নিষিদ্ধ করেছে, জঙ্গীরা আওয়ামীলীগের নেতাকার্মীদের ৪০ হাজারের মতো বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে বা ধ্বংস করে দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু ভবন, সুধা সদন গুড়িয়ে দিয়েছে।এছাড়া সংখ্যা লঘু নির্যাতন দেশে মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছেছে। তারা এখনএকটা ভতিকন অবস্থার মদ্যে জীবনযাপন করছে। নারী স্বাধীনতা বিলুপ্তের পথে। এই অবস্থায় কৌশলেই রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতে হচ্ছে। আওয়ামীলীগ গণতান্ত্রিক দল, গণতন্ত্রের জন্যে লড়াই জারি রেখেছে, লড়াই
বর্তমান সরকার নির্বাচন দিলে নির্বাচনে আওয়ামীলীগ যাবে কিনা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই অবৈধ সরকার নির্বাচন দিতে পারবে না, বা নির্বাচন করতেও পারবে না, নিবার্চন করবে না। যদি কোনো নিবার্চন করে তা হবে পাতানো। এই পাতনো বির্চান জনগণ মানবে না। পাতানো নির্বাচনে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হবে না।
বাংলাদেশের রাজনীতির বর্তমান সংকট তথা জঙ্গী উত্থানের পেছনে কওমীদের সাথে সমজোতা বা নানা ছাড় দেওয়া দায়ী কিনা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, রাজনীতি হলো সমগ্র জনগোষ্ঠীকে নিয়ে। একটা জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের ধারার বাইরে রেখে দেশ চলে না। আওয়ামীলীগ কওমী শিক্ষার স্বীকৃতি দিয়ে বিপুল সংখ্যক আমাদেরই একটি পিছিয়েপড়া জনগোষ্ঠীকে দেশের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করেছে। এতে কোনো দোষ দেখিনা।দেশের শৃঙ্খলা সৃষ্টি বা শান্তি বজায় রাখার স্বার্থে দেশের জন্য এটা ভালো উদ্যোগ ছিল আওয়ামীলীগ সরকারের।
জঙ্গী শুধু মাদ্রাসায় সৃষ্টি হয়েছে, এটা অমূলক ধারণা। স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়সহ সর্বক্ষেত্রে এদের বিচরণ রয়েছে বা সৃষ্টি হয়েছে। এটা আর্ন্তজাতিক একটি প্রবাহ। এ থেকে আমাদের দেশ মুক্ত নয়। এরপরও জঙ্গীদের আওয়ামীলীগ সরকার ধরেছে, শাস্তি দিয়েছে। প্রমাণ, হলিআর্টিজান হত্যাকাণ্ডসহ আরো অনেক ঘটনা। বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধের ধারার বিপরীতে দেশ চালিত হচ্ছে, ইউনুস জঙ্গীদের সাথে অনুঘটক হিসাবে এই ধারার রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচর্যায় লিপ্ত।
দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ও সংকট নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বলেন, বাংলাদেশ একটি উন্নয়শীল থেকে উন্নত দেশে রুপান্তর শুরু হয়েছিল। অবৈধ ইউনুস সরকার এই অগ্রযাত্রা ধ্বংস করে দিচ্ছে, একের পর এক ইণ্ডস্ট্রি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিচ্ছে, মব জাস্টিজের মাধ্যমে দখল করছে মানুষের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, আর্থিক খাত বিপন্ন এখন। এই অবস্থায় ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে বিদেশের দ্বারস্থ হচ্ছে। দেশ ও জাতিকে ভিক্ষুকের দেশ ও জাতিতে রূপান্তরিত করছে। মানুষ না-খেয়ে মরছে, এসব সংবাদ মিডিয়ায় আসছে না।
গণমাধ্যম সম্পর্কে বলেন তিনি, গণমাধ্যম এখন হাতপা বাধা। তাদের অপকর্মের কোনো সংবাদ প্রকাশ করতে পারছে না, এই হাতপা বাধা গণমাধ্যম শুধু তাদের প্রেসক্রিপশন সরবরাহ করছে। ভয়াবহ অবস্থার মধ্যদিয়ে সাংবাদিকরা জীবনযাপন করছেন। প্রকৃত সংবাদ কেউ প্রকাশ করলে নির্যাতন নেমে আছে তাদের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা যে দেশে নেই, সে দেশে সুস্থ রাজনীতি বা সঠিক নির্বাচন আশা করাই যায় না।