।। দেওয়ান মাবুদ।।
পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করা, জয় বাংলা শ্লোগান দেওয়া, বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণ করা কড়াভাবে নিষিদ্ধ ছিলো। সিনেমা বা টিভিতে বঙ্গবন্ধুর ছবি ব্লার ও উচ্চারিত শব্দ মুছে দেওয়া হয়েছিলো।
১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে কিন্তু আওয়ামী লীগ সেগুলোর প্রতিশোধ নিতে কারো ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়নি।
২০০৪ সালের আর্জেস গ্রেনেড হামলাও স্মর্তব্য।
২০০৮ সালে আবার ক্ষমতা এসে টানা প্রায় ১৬ বছরেও আওয়ামী লীগ এই সাড়ে সাত মাসের মতো হত্যা, ঘরবাড়ি ধ্বংস, নিপীড়ন-নির্যাতন চালায়নি।
আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধু হত্যা, যুদ্ধাপরাধ, ২০০৪ সালের হামলার বিচার করেছিলো প্রচলিত আইনে বা কিছু আইন সংশোধণ-সংযোজনপূর্বক। যুদ্ধাপরাধের বিচারে আপিলের সুযোগ পর্যন্ত রেখেছিলো, যেটা বিশ্বে অনন্য নজির স্থাপন করেছে।
কিন্তু ৫ই আগষ্ট দুপুরের পর থেকে কী হলো?
মানুষের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে লুটপাট করে ভাঙা হলো, দখলদারিত্ব কায়েম হলো, স্বনামধন্য শিল্প-কারখানা ধ্বংস করা ও বন্ধের ব্যবস্থা করা হলো, ৪৫০টির বেশি থানা ধ্বংস করা হলো, সরকারি স্থাপনা ধ্বংস করা হলো, পুলিশ ও বিপক্ষের মানুষজনকে হত্যা করা হলো, ইতিহাস-ঐতিহ্যকে ধ্বংস করা হলো, স্থানীয় শিল্প-সংস্কৃতিকে বাধাগ্রস্থ করা হচ্ছে, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ছেড়ে দিয়ে সমাজজীবনকে বিপদসঙ্কুল করা হয়েছে, নারী-শিশু অবমাননার রেকর্ড স্থাপিত হচ্ছে…
ভুলত্রুটি থাকতেই পারে, কিন্তু আওয়ামী লীগ বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে আইনের শাসনটাকে নিশ্চিত করতে চেয়েছে; আর গত সাড়ে সাত মাস ধরে প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে প্রতিহিংসাপরায়ণতাকে।
প্রতিহিংসাপরায়ণ ধ্বংসযঞ্জ সংশ্লিষ্ট মন-মানসিকতা জানে ক্রিয়ার সমপরিমাণ প্রতিক্রিয়া প্রকৃতির নিয়ম, তাই উমামারা আওয়ামী লীগের ফিরে আসায় ভয় পায়।
লেখক: সাধারণ নাগরিক