Close Menu

    সাবস্ক্রাইব

    সর্বশেষ খবরের সাথে আপডেট থাকুন।

    জনপ্রিয় সংবাদ

     বাঙালি, পরিচয় সবখানে বাঙালি

    June 2, 2025

    ড: ইউনুস গংরা পরিকল্পিতভাবে  ব্যর্থ রাষ্ট্রের দিকে বাংলাদেশকে ঠেলে দিচ্ছে,  এক গভীর ষড়যন্ত্র

    June 2, 2025

    অর্থনীতির গতি মন্থর, বিনিয়োগ ১০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন

    June 2, 2025
    Facebook Instagram WhatsApp TikTok
    Facebook Instagram YouTube TikTok
    JoyBangla – Your Gateway to Bangladesh
    Subscribe
    • হোম পেইজ
    • বিষয়
      • দেশ (Bangladesh)
      • আন্তজাতিক (International)
      • জাতীয় (National)
      • রাজনীতি (Politics)
      • অথনীতি (Economy)
      • খেলা (Sports)
      • বিনোদন (Entertainment)
      • লাইফ স্টাইল (Lifestyle)
      • শিক্ষাঙ্গন (Education)
      • টেক (Technology)
      • ধম (Religion)
      • পরবাস (Diaspora)
      • সাক্ষাৎকার (Interview)
      • শিল্প- সাহিত্য (Art & Culture)
      • সম্পাদকীয় (Editorial)
    • আমাদের সম্পর্কে
    • যোগাযোগ করুন
    JoyBangla – Your Gateway to Bangladesh
    Home » যেভাবে এলো স্বাধীনতার ঘোষণা
    National

    যেভাবে এলো স্বাধীনতার ঘোষণা

    JoyBangla EditorBy JoyBangla EditorMarch 25, 2025Updated:March 25, 2025No Comments11 Mins Read
    Facebook WhatsApp Copy Link
    Share
    Facebook WhatsApp Copy Link

    ·

    ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জয়ী আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশে তখন তুমুল অসহযোগ আন্দোলন চলছিল। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের মার্চের শুরু থেকেই উত্তাল হয়ে ওঠে ঢাকার রাজপথ। ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের পর পরিস্থিতি হয়ে ওঠে আরও  অগ্নিগর্ভ।

    ৭ মার্চ, ১৯৭১; ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের পরই দেশজুড়ে হানাদার প্রতিরোধ ও রণপ্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। তখন থেকেই বোঝা যাচ্ছিল যে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি কোন দিকে এগুচ্ছে। বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহের মধ্য দিয়ে চলে আসে ২৫ মার্চের কালরাত ও ২৬ মার্চ প্রথমপ্রহরে বঙ্গবন্ধুর সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা।

    বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে ২৫শে মার্চ ছিল একটি নির্মম   রাত। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে নিরস্ত্র বাঙালির উপর পাকিস্তানি বাহিনীর  আক্রমণের ফলশ্রুতিতে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। শুরু হয় বাংলাদেশের নয় মাস ব্যাপী স্বাধীনতার লড়াই। “অপারেশন সার্চ লাইট” নামে পরিচালিত ২৫শে মার্চের সেই অভিযানে প্রায় ৫০ হাজার বাঙালিকে হত্যা করা হয়।

    ওই অপারেশনের উদ্দেশ্য ছিল ঢাকাসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান শহরগুলোতে আওয়ামী লীগ নেতা ও ছাত্র নেতৃবৃন্দ এবং বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের #গ্রেপ্তার করে ও সামরিক অভিযান চালিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত অসহযোগ আন্দোলন কঠোর হস্তে দমন করা এবং তৎকালীর পূর্ব পাকিস্তানে, পাকিস্তান সরকারের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা।

    এর আগে, উত্তাল মার্চের #অগ্নগর্ভ পরিস্থিতে ঢাকায় আসে পাকিস্তানের সামরিক #স্বৈরাচার ইয়াহিয়া খান এবং ১৬ই মার্চ থেকে শুরু হয় মুজিব-ইয়াহিয়া বৈঠক। মার্চের ২৪ তারিখ পর্যন্ত আলোচনায় সময় গড়িয়ে গেলেও সমাধান মেলেনি। পঁচিশে মার্চ রাতে ঢাকায় শুরু হলো সামরিক অভিযান। এরই মধ্যে জানা গেল ইয়াহিয়া খান সেদিনই গোপনে ঢাকা ত্যাগ করেছে।

    একদিকে যখন পাকিস্তানিরা আলোচনার নামে সময়ক্ষেপণ করছিল, তখনই পশ্চিম পাকিস্তান থেকে শিপিং করপোরেশনের জাহাজে করে পূর্ব পাকিস্তানে #অস্ত্র ও সৈন্য আনার খবর প্রকাশ হয়। আলোচনার নামে কৌশলে পাকিস্তানি বাহিনী তাদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করেছে সেই সময়ে।

    পঁচিশে মার্চ আক্রমণ চালানোর সবুজ সংকেত দেয় জেনারেল টিক্কাখান:

    সেই সময়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জনসংযোগ কর্মকর্তা সিদ্দিক সালিক তার বই ‘উইটনেস টু সারেন্ডার’ এ লিখেছেন, ”শেখ মুজিব আর ইয়াহিয়া খানের মধ্যে আলোচনার কী পরিণাম হয়, তা নিয়ে ২৫শে মার্চ দুপুরে মেজর জেনারেল খাদিম হুসেইন নিজের দপ্তরে বসে যখন ভাবছিলেন, তখন তাকে ফোন করেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান। সরাসরি বলেন, “খাদিম, আজই করতে হবে কাজটা।” খাদিম এই নির্দেশের জন্যেই অপেক্ষাই করছিলেন। নিজের কর্মচারীদের সঙ্গে সঙ্গে ওই আদেশ পালনের কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।”

    সিদ্দিক সালিক আরো লিখেছেন, “ক্র্যাকডাউনের সময় ঠিক করা হয়েছিল ২৬শে মার্চ রাত একটায়। আশা করা হচ্ছিল যে ততক্ষণে ইয়াহিয়া খান করাচিতে পৌঁছে যাবেন।”

    পঁচিশ তারিখ রাত প্রায় সাড়ে এগারোটার সময় ঢাকার স্থানীয় কমান্ডার টিক্কা খানের কাছে অনুমোদন চেয়েছিল ক্র্যাকডাউনের সময়টা এগিয়ে আনার। সালিক লিখছেন, “জেনারেল টিক্কা আদেশ দিয়েছিলেন যতটা সম্ভব দেরি করতে। এরপর রাত সাড়ে এগারোটায় পুরো শহরের ওপরে #পাকিস্তানি বাহিনী #হামলা করেছিল। শুরু হয়েছিল অপারেশন সার্চলাইট।”

    যুদ্ধের প্রস্তুতি:

    তৎকালীন আওয়ামী লীগের নেতা ড. কামাল হোসেন বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান ২৫শে মার্চ সন্ধ্যায় তার বাসভবন, ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি থেকে টেলিফোনে সারা দেশে যুদ্ধের প্রস্তুতির নির্দেশনা দেন।

    ড. হোসেন বলেন নির্দেশনা পৌঁছনোর ওই প্রক্রিয়ায় তিনিও সম্পৃক্ত ছিলেন। “পঁচিশ তারিখ সন্ধ্যার দিকে আমরা রিপোর্ট পাওয়া শুরু করলাম যে, সব ট্যাংক ক্যান্টনমেন্টে লাইন আপ করা হচ্ছে, #আক্রমণ করার প্রস্তুতি সেখানে চলছে। আমরা এটা বঙ্গবন্ধুকে রিপোর্ট করলাম, বঙ্গবন্ধু তখন বললেন, হ্যাঁ এখন তো মনে হয় তারা অ্যাকশনে যাবে।

    শেখ মুজিবুর রহমানের যুদ্ধের প্রস্তুতির সেই নির্দেশ ছিল খুবই সুস্পষ্ট। “ইনস্ট্রাকশানের একটা ফর্মূলা ছিল, যে মুহূর্তে তারা আক্রমণ শুরু করবে, সেই মুহূর্ত থেকে আমরা স্বাধীন। আঘাত হওয়ার সাথে সাথেই আমরা স্বাধীন। যে যা কিছু পাই, তা নিয়ে আমরা প্রতিবাদ প্রতিরোধে নেমে যাব। এই কথাটা ফোনে আমরা বলা শুরু করলাম। যে যেখানে যে কোন অস্ত্র ধরতে পার, সেটা নিয়ে নেমে প্রতিরোধ গড়ে তোল,” বলেন ড. হোসেন।

    পাকিস্তানিদের আক্রমণ:

    পাকিস্তানি বাহিনী ২৫শে মার্চ মধ্যরাতে শুরু করে “অপারেশন সার্চ লাইট” নামে পরিচালিত বাঙালিদের নিশ্চিহ্ন করার অভিযান। মধ্যরাতে আক্রমণ চালায় ঢাকায় রাজারবাগ পুলিশ লাইনে এবং পিলখানায় তৎকালীন সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ইপিআর-এর সদর দপ্তরে। সেই রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আবাসিক হল জগন্নাথ হল এবং নীলক্ষেতে শিক্ষকদের একটি আবাসিক এলাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় ট্যাংকসহ ভারী #অস্ত্র নিয়ে নিরস্ত্র মানুষের উপর চড়াও হয় #পাকিস্তানি বাহিনী।

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এই #হামলার ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছিলেন রবিউল আফতাব। তখন তার বয়স মাত্র ছয়। মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আনোয়ার পাশা ছিলেন তার পিতা। বিবিসি বাংলাকে ওই ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, রাত্রি একটু বেশি হতেই শোনা গেল প্রচণ্ড #গোলাগুলির আওয়াজ। তার এটুকু মনে আছে যে অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই তা বেড়ে ভয়াবহ রূপ ধারণ করল। “কান ফাটানো আওয়াজ, কিছুক্ষণের মধ্যে চারিদিকে প্রচণ্ড আলো- এখন যেমন আমরা ফ্লাড-লাইট বলি, সেরকম আলো। কিছুক্ষণের মধ্যে শোনা গেল অনেক গাড়ির আওয়াজ। আমাদের ছাদের ওপর কেমন জানি ভারী মচমচে জুতার আওয়াজ। আমরা ভয়ে খাটের নিচে ঢুকে গিয়েছিলাম।”

    পরে তিনি শুনেছিলেন ছাদের দেয়ালে চারিদিক থেকে পাকিস্তানি সেনারা এলোপাথাড়ি গুলি চালাচ্ছে। চারিদিকে মানুষের “বাঁচাও বাঁচাও” ভয়ার্ত চিৎকারের মধ্যে ২৫শে মার্চের সেই “বিভীষিকাময়” গোটা রাত্রি কাটায় তার পরিবার।

    সেই আক্রমণের মধ্যেই ২৫শে মার্চ দিবাগত রাতে পাকিস্তানি বাহিনী ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি থেকে #গ্রেফতার করে বাঙালি জাতির একচ্ছত্র নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে। তারপর তারা তাকে #গ্রেফতার করে নিয়ে যায় পশ্চিম #পাকিস্তানের কারাগারে।

    #গ্রেফতারের ঘটনার কয়েক ঘন্টা আগে রাত ন’টার দিকে বঙ্গবন্ধুর সাথে শেষ দেখা করে বিদায় নিয়েছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ, ড. কামাল হোসেন এবং আমীর-উল ইসলাম। ড. হোসেন বিবিসিকে বলেন, তারা সেসময় নিরাপদ জায়গায় গিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার নির্দেশ পেয়েছিলেন। তাদের বিদায় দেবার সময় শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন তিনি থেকে যাচ্ছেন অন্য এক হিসাব থেকে।

    ড. কামাল হোসেন আরো বলেন, “বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, দেখ, আমার সারা জীবনে আমি ঘন ঘন #অ্যারেস্ট হয়েছি। আমি জানি আমাকে ধরলে হয়ত তাদের আক্রমণের তীব্রতা অন্তত কিছুটা কমবে। আর আমাকে যদি না পায়, তাহলে প্রতিশোধ নেবে তারা এলোপাথাড়ি আরও লোক মেরে।”

    প্রতিরোধ:

    #পাকিস্তানিদের হামলার পর, বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল সীমান্ত রক্ষী বাহিনী। সেসময় ইস্ট #পাকিস্তান রাইফেলস (ইপিআর) নামের এই বাহিনীর চট্টগ্রাম অঞ্চলের নেতৃত্বে ছিলেন বাঙালি কর্মকর্তা মেজর রফিকুল ইসলাম।

    বিবিসিকে তিনি বলেন, ২৪শে মার্চ রাতেই চট্টগ্রাম অঞ্চলের সীমান্তগুলোতে তাদের বাহিনীতে #পাকিস্তানি সদস্যদের #হত্যা করে পুরো নিয়ন্ত্রণ নেয়া হয়েছিল। তারা ২৫শে মার্চ ষোলোশহরের সেনা হেডকোয়ার্টারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পুরো শহরের দখল তারা গ্রহণ করেন রাত ১১টা বিশ মিনিটে।

    তিনি আরো বলেন, “আমি অবস্থান নিয়ে ফেলেছি রেলওয়ে পাহাড়ে-২৫শে রাত্রি- তখন ১১টা কুড়ি মিনিট। কিছুক্ষণ পর রাত ১১টা তিরিশের দিকে দেখি একটা গাড়ি রেলওয়ে হিল এবং বাটালি হিলের মধ্যে যে রাস্তা, সে রাস্তা দিয়ে পোর্টের দিকে যাচ্ছে। আমার এক সুবেদার, আইজুদ্দীন নায়েব সুবেদার বলল যে, সার এখানে তো অনেকগুলো #পাকিস্তানি সৈন্য আছে- পাঞ্জাবি, একটা রকেট লঞ্চার মারি! আমি বললাম রাখো, ওরা বোধহয় দেখছে রাস্তাটা পরিষ্কার আছে কিনা!”

    মেজর রফিকুল ইসলাম বলেন, তার ধারণা পাকিস্তানি সেনাদের পরিকল্পনা ছিল রাস্তা পরিষ্কার থাকলে পোর্টে যেসব #অস্ত্রশস্ত্র আছে সেগুলো নিয়ে ক্যান্টনমেন্টে যাবে। তিনি তার সুবেদারকে বলেছিলেন সেটা হলে #অস্ত্র নিয়ে ফেরার সময় আমরা #আক্রমণ চালিয়ে #অস্ত্রগুলো ধ্বংস করতে পারব।

    তিনি জানান, ওই গাড়িটা কিছুদূর গিয়ে আগ্রাবাদে ঢোকার মুখে একটা পেট্রল পাম্পে থামে। ওখানে আমাদের বাঙালিরা টায়ার #জ্বালিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিল। এর দু তিন মিনিটের মধ্যে দেখি খুব দ্রুত একটা জিপ সেখানে গিয়ে পৌঁছয়। সেটাও ওখানে থামে এবং কিছুক্ষণ পর দুটো গাড়িই একসাথে ফিরে আসে। পরে জেনেছিলাম প্রথম গাড়িতে জিয়া সাহেব পোর্টে যাচ্ছিলেন। সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র খালাস করার জন্য তাকে দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয়েছিল। তখনও শহর আমাদের নিয়ন্ত্রণেই ছিল।

    তিনি বলেন, ওই ব্যারিকেডে আটকে যাবার সময় বাঙালিদের ওপর #পাকিস্তানি সেনাদের #আক্রমণের খবর জিয়াউর রহামনের কাছে পৌঁছে দেয়া হয় বলে তিনি পরে জেনেছিলেন।

    স্বাধীনতার ঘোষণা:

    বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে আটক হবার আগেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। সেই ঘোষণা তিনি দেন ধানমন্ডির ৩২ নম্বর থেকেই। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র তাদের সম্প্রচার শুরু করে ২৬শে মার্চ। তৎকালীন রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত বেতারের চট্টগ্রামের কয়েকজন কর্মী শহর থেকে অনেকটা দূরে নিরাপদ জায়গা হিসাবে কালুরঘাটে বেতারেরই ছোট্ট একটি কেন্দ্রে তাদের প্রথম অনুষ্ঠান করেছিলেন।

    স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সংগঠক বেলাল মোহম্মদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, ওই অনুষ্ঠানেই স্বাধীনতার সেই ঘোষণা প্রথম সম্প্রচার করা হয়। শেখ মুজিবুর রহমানের নামে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন রাজনীতিকদের মধ্যে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান।

    তিনি জানান, সকালবেলা ২৬শে মার্চ আমরা শুনতে পেয়েছি একটা মাইকিং যে গত রাতে ঢাকায় আকস্মিকভাবে #পাকিস্তান #আর্মি #নিরস্ত্র জনপদে #আক্রমণ করেছে। এবং খণ্ড খণ্ড যুদ্ধ চলছে। এই অবস্থায় আমাদের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন। এইটুক মাইকিং আমরা শুনেছি। ওই সময় দুপুরবেলা একটা লিফলেট পেলাম হাতে। আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন পর্যায়ের ড. আনোয়ার আলি একটা কাগজ আমার হাতে দিলেন। উনি নিজে বললেন একটা তারবার্তা এসেছে ঢাকা থেকে। আমরা এটার অনুবাদ করে এখন লিফলেট আকারে ছেড়েছি আর মাইকিংও করেছি আমরা।

    একটি ভবনের মাথায় ট্রান্সমিটার যন্ত্র:

    বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা পরবর্তীতে কয়েকদফায় সম্প্রচারিত হয় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে।  এ ব্যাপারে বেলাল মোহম্মদ জানান, কালুরঘাট থেকে প্রথম সেই ঘোষণা সম্প্রচারের ব্যবস্থা তারা করতে পেরেছিলেন সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে। সেই প্রথম অনুষ্ঠানে এম এ হান্নান স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণাটি পড়েন এবং তার ভিত্তিতে একটি বক্তৃতাও দেন।

    তিনি বলেন, “আর আমরা বেতার কর্মীরা নিজেদের ভয়েসে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার তারবার্তার অনুবাদ যেটা লিফলেট আকারে পেয়েছিলাম, সেটা বিভিন্ন কণ্ঠে বারবার প্রচার করি ২৬শে মার্চ প্রথম ট্রান্সমিশানের এক ঘন্টার মত অনুষ্ঠানে।”

    কালুরঘাট কেন্দ্র থেকে ২৭শে মার্চ সন্ধ্যাতেও দ্বিতীয়বারের মত অনুষ্ঠান সম্প্রচারে সক্ষম হয় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র। সেদিনের অনুষ্ঠানে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করার কথা ছিল সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে মেজর রফিকুল ইসলামের। কিন্তু তিনি যুদ্ধে ব্যস্ত থাকায় সেই ঘোষণা পাঠ করানো হয় জিয়াউর রহমানকে দিয়ে। সেসময় তিনিও সেনবাহিনীতে মেজর পদমর্যাদায় কর্মরত ছিলেন।

    বেলাল মোহম্মদ জানান, জিয়াউর রহমান ওই ঘোষণা পাঠ করেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমানের নামে।

    এ ব্যাপারে তিনি বলেন, “স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার জন্য আমি যখন এদিক ওদিক খোঁজ করছি, এক বন্ধু আমাকে বললেন যে, একজন মেজর আছেন পটিয়াতে। তিনি সোয়াতের অস্ত্র নামাবার অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে দেড়শ সৈন্য নিয়ে হেডকোয়ার্টারের বাইরে আছেন পটিয়াতে। এ খবর শুনে ২৭শে মার্চ দিনের বেলায় আমি পটিয়াতে চলে যাই।”

    বেলাল মোহম্মদ জানান, তার অনুরোধে বেতার কেন্দ্রের নিরাপত্তা রক্ষায় পটিয়া থেকে সৈন্য নিয়ে কালুরঘাটে যান জিয়াউর রহমান। এরপর কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে ২৭শে মার্চ রাত সাড়ে সাতটার অনুষ্ঠানে শেখ মুজিবের নামে যে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন জিয়া।

    আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণার খবর:

    বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত থেকে দেখা যায়, ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতের ঢাকার পরিস্থিতি ও শেখ মুজিবকে আটকের ঘটনা ২৬ ও ২৭শে মার্চেই বিশ্বের অন্তত ২৫টি দেশের পত্রিকা বা সংবাদ সংস্থার খবরে প্রকাশিত হয়। তখন ইন্টারনেট না থাকায় অধিকাংশ সংবাদ প্রকাশিত হতে দুই বা একদিন বেশি সময় লাগতো।

    বিবিসির খবরে তখন বলা হয়, “…কলকাতা থেকে সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠানের খবরে প্রকাশ যে পূর্ব পাকিস্তানের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান এক গুপ্ত বেতার থেকে জনসাধারণের কাছে প্রতিরোধের ডাক দিয়েছেন।…”

    ভয়েস অব আমেরিকার খবরে বলা হয়: “…ঢাকায় পাকিস্তান বাহিনী আক্রমণ শুরু করেছে। মুজিবুর রহমান একটি বার্তা পাঠিয়েছেন এবং সারা বিশ্বের নিকট সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন।…”

    দিল্লির দ্য স্টেটসম্যান-এর খবর ছিল: “বাংলাদেশ স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে, সামরিক অভিযানের প্রতিবাদে রহমানের পদক্ষেপ। একটি গোপন বেতার থেকে প্রচারিত ভাষণে শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের পূর্বাংশকে স্বাধীন বাংলাদেশ হিসেবে নতুন নামকরণ করেছেন।”

    দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ, (লন্ডন) পত্রিকাযর ২৭ মার্চের বলা হয়: ‘সিভিল ওয়ার ফ্লেয়ারস ইন ইস্ট পাকিস্তান: শেখ এ ট্রেইটর, সেইস প্রেসিডেন্ট’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণা ও ইয়াহিয়া খান তার বেতার ভাষণে শেখ মুজিবকে বিশ্বাসঘাতক বলার কথা উল্লেখ করা হয়।

    ব্রিটেনের দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকায় ২৭শে মার্চের এক খবরে বলা হয়, “…২৬শে মার্চ প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান জাতির উদ্দেশ্যে রেডিওতে ভাষণ দেয়ার পরপরই দ্য ভয়েস অব বাংলাদেশ নামে একটি গোপন বেতারকেন্দ্র থেকে শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁর এই ঘোষণা অপর এক ব্যক্তি পাঠ করেন।”

    এর বাইরে ভারতের বহু সংবাদপত্র এবং আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, ক্যানাডা, দক্ষিণ আফ্রিকা, জাপান, হংকং, নরওয়ে, তুরস্ক, সিঙ্গাপুরসহ অনেক দেশের খবরে স্থান পায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার খবর।

    আর্জেন্টিনার বুয়েনস আয়ারস হেরাল্ডের ২৭শে মার্চের সংখ্যার একটি খবরের শিরোনাম ছিলো, “বেঙ্গলি ইন্ডিপেন্ডেন্স ডিক্লেয়ার্ড বাই মুজিব।”

    নিউইয়র্ক টাইমস-এও শেখ মুজিব ও ইয়াহিয়ার ছবি ছাপানো হয়। পাশেই লেখা হয় “স্বাধীনতা ঘোষণার পরই শেখ মুজিব আটক”।

    বার্তা সংস্থা এপির খবর ছিল: “ইয়াহিয়া খান পুনরায় মার্শাল ল দেয়ার ও আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার পর পূর্ব পাকিস্তানে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে।”

    আয়ারল্যান্ডের দ্য আইরিশ টাইমস-এর শিরোনাম ছিল – পূর্ব #পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণা আর সাথে ছিল শেখ মুজিবের ছবি।

    ব্যাংকক পোস্ট-এর খবরে বলা হয়, “শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ নাম দিয়ে পূর্ব #পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণার পর #পাকিস্তানে #গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।”

    স্বাধীনতা যুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য মুক্তি বাহিনীর প্রস্তুতি:

    ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা ছড়িয়ে যাওয়ার পর, ১৯৭১ এ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সূত্রপাত ঘটায় এবং বাঙালিরা দখলদারী #পাকিস্তানি বাহিনীকে বিতাড়িত করার সংগ্রামে লিপ্ত হয়।

    #পাকিস্তানি বাহিনীর ২৫শে মার্চের আক্রমণের মুখে যে প্রতিরোধ গড়ে উঠেছিল পূর্ব #পাকিস্তানে, যে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বাঙালি জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছিল শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা, নিরস্ত্র বাঙালির সেই প্রতিরোধ রূপ নিয়েছিল নয় মাস ব্যাপী #সশস্ত্র রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধে। অবশেষে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান বুকে লালন করে স্বাধীনতার সূর্য ছিনিয়ে আনে বাংলার বীর জনতা।

    picks
    Share. Facebook WhatsApp Copy Link
    Previous Articleমহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কর্মসূচি
    Next Article আওয়ামী লীগ প্রতিহিংসার রাজনীতি করেনি কখনও, করবেও না
    JoyBangla Editor

    Related Posts

    বিশ্লেষণ || তোমরা কি ভুলে গেছো মল্লিকাদের নাম?

    June 2, 2025

    অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চীফ প্রসিকিউটর তাজুলের অপসারণ চায় ছাত্র ইউনিয়ন

    June 2, 2025

    ক্ষমতা দখল করলেই সরকার হওয়া যায় না — এটা দুনিয়া দেখিয়ে দিল ইউনুসকে

    June 1, 2025

    মৃত সোলাইমান সাক্ষী দিবেন আদালতে কিভাবে!

    June 1, 2025
    Leave A Reply Cancel Reply

    সম্পাদকের পছন্দ

    বিশ্লেষণ || তোমরা কি ভুলে গেছো মল্লিকাদের নাম?

    June 2, 2025

    অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চীফ প্রসিকিউটর তাজুলের অপসারণ চায় ছাত্র ইউনিয়ন

    June 2, 2025

    ক্ষমতা দখল করলেই সরকার হওয়া যায় না — এটা দুনিয়া দেখিয়ে দিল ইউনুসকে

    June 1, 2025

    মৃত সোলাইমান সাক্ষী দিবেন আদালতে কিভাবে!

    June 1, 2025
    • Facebook
    • Twitter
    • Instagram
    • TikTok
    মিস করবেন না
    Lifestyle

     বাঙালি, পরিচয় সবখানে বাঙালি

    By JoyBangla EditorJune 2, 20250

    ।। মহিউদ্দিন মোহাম্মদ।। ‘বাঙালি’ আর ‘বাংলাদেশী’ এক জিনিস নয়। বাঙালি হলো জাত, জাতি, নির্দিষ্ট খাসলতের…

    ড: ইউনুস গংরা পরিকল্পিতভাবে  ব্যর্থ রাষ্ট্রের দিকে বাংলাদেশকে ঠেলে দিচ্ছে,  এক গভীর ষড়যন্ত্র

    June 2, 2025

    অর্থনীতির গতি মন্থর, বিনিয়োগ ১০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন

    June 2, 2025

    বিশ্লেষণ || তোমরা কি ভুলে গেছো মল্লিকাদের নাম?

    June 2, 2025

    সাবস্ক্রাইব

    সর্বশেষ খবরের সাথে আপডেট থাকুন।

    About Us
    About Us

    মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও লালন করে দেশ ও বিদেশের খবর পাঠকের কাছে দুত পৌছে দিতে জয় বাংলা অঙ্গিকার বদ্ধ। তাৎক্ষণিক সংবাদ শিরোনাম ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পেতে জয় বাংলা অনলাইন এর সঙ্গে থাকুন পতিদিন।

    Email Us: info@joybangla.co.uk

    Our Picks

    বিশ্লেষণ || তোমরা কি ভুলে গেছো মল্লিকাদের নাম?

    June 2, 2025

    অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চীফ প্রসিকিউটর তাজুলের অপসারণ চায় ছাত্র ইউনিয়ন

    June 2, 2025

    ক্ষমতা দখল করলেই সরকার হওয়া যায় না — এটা দুনিয়া দেখিয়ে দিল ইউনুসকে

    June 1, 2025

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.