বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমানের পর এবার জামায়াত ও সমন্বয়কদেরকে কঠোর ভাষায় আক্রমণ করলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। তিনি বলেছেন, “যাঁরা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করেন, মুক্তিযুদ্ধকে পাশ কাটিয়ে কথা বলেন, তাঁরা এই দেশের জনগণের পক্ষে রাজনীতি করার অধিকার নেই। যাঁরা ৭১’কে অস্বীকার করেন, তাঁদের বাংলাদেশে ভোট চাওয়ার, ভোটে দাঁড়ানোর এবং রাজনীতি করারও কোনো অধিকার নেই।” এছাড়াও, তিনি বৈষম্য আন্দোলনের মাধ্যমে রাজনীতিতে প্রবেশ করা সমন্বয়কদের উদ্দেশ্যেও কঠোর ভাষায় মন্তব্য করেছেন।
৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের পরিবারে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের উপহার সামগ্রী বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন। বৈষম্য আন্দোলনের কোটায় নিয়োগ পাওয়া উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “কয়েকজন উপদেষ্টা আছেন, যাঁরা ছাত্র রাজনীতি করতেন, হলে থাকতেন, মেসে থাকতেন, টিউশনি করতেন। তাঁরা এখন পাঁচ-ছয় কোটি টাকার গাড়িতে চড়েন। আগে-পিছে আরও ৩০-৪০ কোটি টাকার গাড়ি থাকে। কয়েক দিন আগে এক নেতা গিয়েছেন তাঁর বাড়িতে। এক শর বেশি গাড়ি নিয়ে গেছেন।”
বরকত উল্লা বুলু এনসিপি নেতাদের সাম্প্রতিক কার্যক্রমের সমালোচনা করে বলেন, “ওনারা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে পাঁচ কোটি টাকা খরচ করে ইফতার পার্টি করেছেন। ১৫-২০ কোটি টাকা খরচ করে দলের আত্মপ্রকাশের অনুষ্ঠান করেছেন। আগে তাঁরা পরতেন ৫০০ টাকার পাঞ্জাবি, এখন পরেন ৩০ হাজার টাকার পাঞ্জাবি। জুতা পরেন ৫০ হাজার টাকার, হাতের ঘড়ি ৪০ হাজার টাকার। তাঁরা প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন, অমুককে বদলি করতে হবে, অমুকখানে অমুককে দিতে হবে। সচিবরা বলছেন, তাঁরা তাঁদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। প্রকৌশলীদেরও চাপ দেওয়া হয়, অমুককে এই জায়গায় দিতে হবে, অমুকে এই কাজ দিতে হবে।”
এই দেশে মব জাস্টিস ও হামলায় বৈষম্য আন্দোলনের সমন্বয়করা জড়িত—এমন ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, “এই যে দেশে নৈরাজ্য মব জাস্টিসের নামে মানুষের বাড়িঘরে হামলা করা হচ্ছে। এর থেকে মুক্তি পেতে হলে নির্বাচন ছাড়া কোনো উপায় নেই।”
বিএনপি নেতা বরকত উল্লা বুলু সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে যারা বিতর্কিত করতে চান, তাঁরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে নয়।”
তিনি জামায়াতের উদ্দেশ্যে বলেন, “যাঁরা বাংলাদেশের ৭১’কে অস্বীকার করেন, যাঁরা ৪৭-এর পূর্বে ফিরে যেতে চান, যাঁরা ৩০ লাখ শহীদের রক্তকে অস্বীকার করতে চান, যাঁরা এই মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করেন, মুক্তিযুদ্ধকে পাশ কাটিয়ে যাঁরা কথা বলেন, তাঁরা এই দেশের জনগণের পক্ষে রাজনীতি করেন বলে আমরা মনে করি না। যাঁরা ৭১’কে অস্বীকার করেন, তাঁদের বাংলাদেশে ভোট চাওয়ার কোনো অধিকার নেই। ভোটে দাঁড়ানোর কোনো অধিকার নেই, রাজনীতি করারও কোনো অধিকার নেই।”
বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী শহরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাখ্যা চন্দ্র দাস, জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য শামীমা বরকত প্রমুখ।