মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্য রপ্তানির ওপর যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন, তার জেরে বিশ্বজুড়ে আর্থিক বাজারে ধস নেমেছে। গতকাল সোমবার মন্দার তীব্রতা আরও বেড়েছে। বিনিয়োগকারীরাও ট্রাম্পের শুল্কনীতি পরিবর্তনের আশা ছেড়ে দিয়েছেন।
শেয়ারের দাম ব্যাপকভাবে পড়ে যাওয়ায় গত তিন দিনে বৈশ্বিক আর্থিক বাজারে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৯ ট্রিলিয়ন ডলার। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ইকুইটি ফিউচারে ৩ শতাংশ পতনের ইঙ্গিত মিলেছে এবং ভিআইএক্স সূচক ৫০-এর ওপরে উঠেছে। ইউরোপের স্টক্স ৬০০-এর সূচকের পতন হয়েছে ৫ শতাংশ। বাজার বিশ্লেষকদের ধারণা, ফেডারেল রিজার্ভ এবার সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত নেবে।
এদিকে বাজারের অস্থিরতা ও বাণিজ্যযুদ্ধ এড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বান সত্ত্বেও নিজেদের অবস্থানে অনড় রয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। টেলিভিশনে একাধিক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট সাম্প্রতিক শেয়ারবাজারের পতনকে গুরুত্বহীনভাবে উল্লেখ করেছেন। বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক জোর দিয়ে বলেছেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী পারস্পরিক শুল্ক কার্যকর করা অব্যাহত থাকবে। আরেক শীর্ষস্থানীয় উপদেষ্টা কেভিন হ্যাসেট বলেছেন, ৫০টির বেশি দেশ একটি চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি প্রধান শেয়ারের সূচক ৫ শতাংশের বেশি কমেছে, যেখানে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ প্রায় ৬ শতাংশ কমেছে। এটি ছিল ২০২০ সালের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারের জন্য সবচেয়ে খারাপ সপ্তাহ।
বাজারের এই নাজুক অবস্থা চলতি সপ্তাহেও অব্যাহত থাকতে পারে এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। যেমন সৌদি আরবের শেয়ারবাজারে যেখানে রোববারও লেনদেন হয়, সেখানে প্রায় ৭ শতাংশ দরপতন হয়েছে। এটি করোনা মহামারির পর থেকে এ পর্যন্ত এক দিনে সবচেয়ে বড় ক্ষতি বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকিং জায়ান্ট জেপি মরগান ভবিষ্যদ্বাণী করেছে, ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার পর বৈশ্বিক মন্দার আশঙ্কা ৬০ শতাংশ।
রোববার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, ইউরোপ ও এশিয়ার দেশগুলো একটি চুক্তির জন্য মরিয়া হয়ে আছে।
সূত্র আজকের পত্রিকা।