ঢাকা, ৮ এপ্রিল ২০৫৫ (মঙ্গলবার): প্রখ্যাত সমাজকর্মী ও সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান আজ তার টুইটার অ্যাকাউন্টে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) প্রাক্তন কৌঁসুলী তুরিন আফরোজের গ্রেপ্তারির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বার্গম্যান, যিনি বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের একজন পরিচিত সমালোচক, তিনি এই গ্রেপ্তারির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যকলাপের ওপর।
বার্গম্যান তার টুইটে উল্লেখ করেন, “যদি গ্রেপ্তারের পেছনে হত্যাকাণ্ড বা হত্যাচেষ্টার প্রমাণ না থাকে—যা সম্ভবত নেই—তাহলে এটি শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিশোধ নেওয়ার একটি পন্থা, যা ক্রিমিনাল জাস্টিসের নামে চালানো হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে তুরিন আফরোজকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে এবং মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “যদি কেউ মনে করে যে আফরোজ বা অন্যান্য কৌঁসুলীরা আইসিটির বিচার প্রক্রিয়া বা প্রচারণার মাধ্যমে অন্যায় করেছে, তবে সেটা খোলামেলা আলোচনা করা উচিত; না হলে এই ধরনের কাল্পনিক মামলায় জড়ানো উচিত নয়।”
তুরিন আফরোজকে গত সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয় ২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলনের সাথে সম্পর্কিত হত্যা চেষ্টার অভিযোগে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার মুহিদুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আফরোজ আগে আইসিটির কৌঁসুলী ছিলেন এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের যুদ্ধাপরাধ বিষয়ে ট্রাইব্যুনালে কাজ করেছেন।
বার্গম্যানের প্রতিবাদ বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তিনি দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধ অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়া এবং কার্যকলাপের কঠোর সমালোচনা করে আসছেন। তার মতে, ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়া প্রায়ই রাজনৈতিক প্রভাবিত এবং ন্যায্য নয়। তবে, এই গ্রেপ্তারির বিষয়ে তিনি স্পষ্টতই বলেছেন, যদি এটি আইসিটির প্রাক্তন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিশোধ নেওয়ার উদ্দেশ্যে হয়ে থাকে, তবে এটি আইন শাসনের প্রতি সম্পূর্ণ অশ্রদ্ধা।
তুরিন আফরোজের গ্রেপ্তারি বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশে নতুন প্রশ্ন তুলেছে। গত বছরের আগস্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে অনেক আইসিটি কর্মকর্তা ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা দায়ের হচ্ছে। তুরিন আফরোজের গ্রেপ্তারি এ ধরনের ঘটনার একটি নতুন অধ্যায় হতে পারে।
এই বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে নানা মতামত উঠেছে। কিছু ব্যক্তি মনে করছেন যে, এটি রাজনৈতিক প্রতিশোধের একটি অংশ, যা পূর্ববর্তী সরকারের সমর্থকদের বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টির চেষ্টা। অন্যদিকে, কিছু মানুষ আইসিটির পূর্ববর্তী কার্যকলাপ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন এবং মনে করছেন যে তুরিন আফরোজের গ্রেপ্তারি সেই সমালোচনারই প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
এই ঘটনার বাংলাদেশের আইনি ব্যবস্থার এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে । সামাজিক মাধ্যমে এবং বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে এই বিষয়ে আলোচনা চলছেই, এবং অনেকে বার্গম্যানের মতামতের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছেন।