জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) রাজস্ব আহরণে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। জানুয়ারিতে শতাধিক পণ্যে ভ্যাট ও শুল্ক বাড়ানো হলেও রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৫ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকা।
সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী এই ৯ মাসে এনবিআরের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্য ছিল ৩ লাখ ২২ হাজার ১৫২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। তবে আদায় হয়েছে ২ লাখ ৫৬ হাজার ৪৮৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। বাস্তবায়নের হার দাঁড়ায় ৭৯.৬২ শতাংশ।
এনবিআরের হালনাগাদ তথ্য বলছে, ভ্যাট খাতে আদায় হয়েছে ৯৫ হাজার ৩১১ কোটি টাকা, যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা থেকে ১৯ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা কম। এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ২.০৯ শতাংশ।
শুল্ক খাতে আদায় হয়েছে ৭৪ হাজার ২৫৫ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৬ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা কম এবং প্রবৃদ্ধি মাত্র ০.৩৮ শতাংশ।
অন্যদিকে, আয়কর খাতে আদায় হয়েছে ৮৬ হাজার ৯২০ কোটি টাকা, যেখানে ঘাটতির পরিমাণ ২৯ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা। এই খাতে প্রবৃদ্ধির হার মাত্র ৫.৬৭ শতাংশ।
শুধু মার্চ মাসেই রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪২ হাজার ৯৩ কোটি টাকা, অথচ আদায় হয়েছে ৩৪ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা। মাসিক ঘাটতি দাঁড়ায় ৭ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা। তবে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় মার্চে রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯.৬৪ শতাংশ।
মার্চ মাসে আয়করের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ৭৯.২৩ শতাংশ, ভ্যাটের ৮০.৫২ শতাংশ এবং শুল্কের ৮৯.৬৫ শতাংশ। ওই মাসে আদায় হয় ১৩ হাজার ৭৬৬ কোটি টাকা আয়কর, ১১ হাজার ৮৮ কোটি টাকা ভ্যাট এবং ৯ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা শুল্ক।
এনবিআর কর্মকর্তারা জানান, রমজান ও ঈদকে ঘিরে দীর্ঘ সরকারি ছুটির প্রভাব রাজস্ব সংগ্রহে পড়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) প্রদত্ত ৫ হাজার কোটি টাকা মার্চ মাসের হিসাবে যুক্ত হয়নি এবং ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানির কারখানা স্থানান্তরের কারণে দেড় হাজার কোটি টাকার মতো রাজস্ব আহরণ বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করেন, এপ্রিল মাসে এসব রাজস্ব হিসাবভুক্ত হলে ঘাটতির পরিমাণ কিছুটা কমে আসবে।
উল্লেখ্য, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এনবিআরের সংশোধিত রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।