ব্রিটিশ লেবার পার্টির সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশি সংস্থা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), মন্তব্য করেছেন তার আইনজীবীরা।
লন্ডনের দ্য স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত ১৩ই এপ্রিল ঢাকার একটি আদালত টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে এবং তাকে ২৭শে এপ্রিলের মধ্যে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। একইসাথে তার মা, ভাই ও বোনের বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
দুদকের অভিযোগ, টিউলিপ সিদ্দিক তার খালা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রভাব ব্যবহার করে পূর্বাচল আবাসিক প্রকল্পে পরিবারের জন্য ৩টি প্লট জমি অবৈধভাবে বরাদ্দ নিয়েছেন। দুদকের এই তদন্ত, ঢাকার অবকাঠামো প্রকল্প থেকে তহবিল আত্মসাতের ব্যাপকতর তদন্তেরই অংশ ছিল।
তবে টিউলিপ সিদ্দিকের আইনজীবী দল স্টিফেনসন হারউড ল ফার্মের বক্তব্য, গত ১৮ই মার্চ থেকে তারা দুদকের কাছে লিখিতভাবে প্রমাণ চেয়ে আসছেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা কোনো প্রমাণ বা দলিলপত্র উপস্থাপন করতে পারেনি। তারা এই অভিযোগগুলোকে “ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত” বলে আখ্যায়িত করেছেন।
আইনজীবীরা আরো অভিযোগ করেছেন, দুদক ইচ্ছাকৃতভাবে গণমাধ্যমে ‘অপ্রমাণিত’ তথ্য উপস্থাপন এবং ইন্টারপোল রেড নোটিশের হুমকি দিয়ে তাদের মক্কেলের সম্মানহানি করার চেষ্টা করছে।
গত জানুয়ারিতে লেবার পার্টির ক্যাবিনেট থেকে পদত্যাগ করেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত সকল দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে একে তার রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত সুনাম ধ্বংসের চক্রান্ত বলে উল্লেখ করেছেন।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একজন বিদেশি সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ আনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করা উচিত ছিল দুদকের। কিন্তু তারা তা না করে বরং ইউনূস-সরকারের প্রতিহিংসামূলক কর্মকাণ্ডে অবতীর্ণ হয়েছে।
এদিকে, দুদক এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করতে না পারায় এই মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আদালতের নির্ধারিত তারিখ ২৭শে এপ্রিলের মধ্যে টিউলিপ সিদ্দিকের হাজির হওয়ার কথা থাকলেও তার আইনজীবীরা ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন যে প্রমাণের অভাবে এই মামলার টিকে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম।