আইনের শাসন ও মানবাধিকারের পক্ষে সরব কণ্ঠস্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ এখন নিজেই আইনি জটিলতায় বন্দি। পুলিশি হেফাজতে তার বিরুদ্ধে মামলার শুনানি চলাকালেই এবার চরম মানবিক সঙ্কটের মুখোমুখি তার একমাত্র কন্যা তেজস্বী তুরিন সুমেধা (১৭)।
সম্প্রতি উত্তরা পশ্চিম থানায় করা একটি সাধারণ ডায়েরিতে (জিডি নম্বর: ১৭৩৬, তারিখ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫) সুমেধা অভিযোগ করেছেন— তার সৎ মামা শাহনেওয়াজ আহম্মেদ শিশির (৪৯) তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের হুমকি দিয়েছেন। একইসাথে তার প্রাণনাশের হুমকিও দেয়া হয়।
জিডিতে সুমেধা উল্লেখ করেছেন, গত ৭ই এপ্রিল তার মা তুরিন আফরোজ গ্রেপ্তার হওয়ার পর তিনি ঘরে একা ছিলেন। ৮ই এপ্রিল সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শাহনেওয়াজ জোরপূর্বক তাদের বাসায় প্রবেশ করে তাকে বাসা ছাড়ার নির্দেশ দেন। অন্যথায়, তাকে অপহরণ ও ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়। থানায় যাওয়ার পথে রিকশায় উঠলে পথরোধ করে একই হুমকি পুনর্ব্যক্ত করা হয় এবং বাসার চাবি জমা দিতে বাধ্য করার চেষ্টা করা হয়।
সুমেধা তার জিডিতে আরও বলেন, “আমার সাথে যদি খারাপ কিছু ঘটে, তবে আমার মামা শিশিরসহ শামসুন্নাহার তসলিম, বেলাল, মোহাজারুল ও শিতুল দায়ী থাকবে।”
এই ঘটনায় কিশোরী সুমেধার নিরাপত্তাহীনতার যে করুণ চিত্র ফুটে উঠেছে, তা সমাজের বিবেককে নাড়িয়ে দেয়। একজন কিশোরী যখন নিজ বাসায়ও নিরাপদ বোধ করতে পারে না এবং বিচারপ্রার্থী হয়ে থানায় গিয়ে নিরাপত্তার আকুতি জানাতে হয়, তখন তা শুধু একটি ব্যক্তিগত ঘটনা নয়— এটি রাষ্ট্রের নিরাপত্তা কাঠামোর প্রতি প্রশ্নবোধক চিহ্ন।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি, এমন ঘটনায় কেবল অভিযুক্তদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনাই যথেষ্ট নয়; ভুক্তভোগী তরুণীর মানসিক ও সামাজিক নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে হবে।
তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে মামলা বিচারাধীন থাকলেও তার পরিবারের অন্য সদস্যরা যেন এর জের টেনে নিরাপত্তাহীনতায় না ভোগেন— এমন আহ্বান জানাচ্ছেন সমাজের সচেতন মহল।এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে এখনও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।