ঢাকা ইপিজেডের (ডিইপিজেড) বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ারের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। এর ফলে ২৮শে এপ্রিল, সোমবার দুপুর ১টা ১০ মিনিট থেকে ইপিজেডের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় এবং উৎপাদন কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে পড়ে। বাধ্য হয়ে কারখানাগুলো শ্রমিকদের ছুটি দিতে শুরু করেছে।
ডিইপিজেডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড পাওয়ারের গ্যাস সংযোগ হঠাৎ করে বিচ্ছিন্ন করে দেয়, ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। কিছু কারখানা জেনারেটর চালিয়ে অল্প সময়ের জন্য উৎপাদন চালু রাখার চেষ্টা করলেও ব্যয়বহুল ব্যবস্থার কারণে তা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। এরপরই কারখানাগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে নিরাপত্তার স্বার্থে পল্লী বিদ্যুতের সহায়তায় সড়ক বাতিসহ জরুরি আলো জ্বালিয়ে রাখা হয়েছে।
বর্তমানে ডিইপিজেডের বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় ৪৫ মেগাওয়াট, অথচ পল্লী বিদ্যুতের পক্ষ থেকে মাত্র ২৫ মেগাওয়াট সরবরাহের আশ্বাস পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে ইপিজেড কর্তৃপক্ষ।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, “কোনো পূর্ব নোটিশ ছাড়া ইউনাইটেড পাওয়ারের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে, যার ফলে পুরো ইপিজেড বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এখানে বেপজার কোনো দায় নেই, মূল বিষয়টি ইউনাইটেড পাওয়ার ও তিতাস গ্যাসের মধ্যে চলমান বকেয়া বিল সংক্রান্ত। এই আকস্মিক ঘটনায় বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ঝুঁকির মুখে পড়েছে। যদি মঙ্গলবারের মধ্যেও সমস্যার সমাধান না হয়, তবে সংকট আরও গভীর হবে।”
ইউনাইটেড পাওয়ার প্লান্টের ব্যবস্থাপক মো. মমতাজ হাসান জানান, “তিতাস কর্তৃপক্ষ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলেও, স্থানীয় তিতাসের কর্মকর্তারা এর কারণ পরিষ্কারভাবে জানাননি। আমরাও বিষয়টি সম্পর্কে যথেষ্ট অবগত নই।”
তিতাস গ্যাসের আশুলিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খাদেমুদ্দীন বলেন, “ইউনাইটেড পাওয়ারের গ্যাস বিল দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া থাকায় ঊর্ধ্বতন নির্দেশে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানাধীন এলাকায় অবস্থিত ঢাকা ইপিজেডে প্রায় ৯০টি কারখানা চালু রয়েছে, যেখানে প্রায় ১ লাখ শ্রমিক কর্মরত। বিদ্যুৎ সংকটের কারণে এসব কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম এবং শ্রমিকদের ভবিষ্যত এখন অনিশ্চয়তার মুখে।