ময়মনসিংহে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন উদ্যানে অভিযান চালিয়ে সাহিত্য সংসদ মঞ্চ ও বিজয়ী পিঠা ঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন ও জেলা প্রশাসনের যৌথ অভিযানে এগুলো উচ্ছেদ করা হয়। সাহিত্য সংসদ মঞ্চ কবি সাহিত্যিকদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। তারা এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন।
এদিকে সাহিত্য সংসদ মঞ্চ ভাঙতে এসে বাঁধার মুখে পড়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে ইজারা না নিয়ে স্থাপনা গড়ে তুলায় বুলডোজার দিয়ে মঞ্চটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
এসময় কবি, সাহিত্যিক ও সংস্কৃতিকর্মীদের কাঁদতে দেখা গেছে। স্থানীয় কবি-সাহিত্যিকরা জানিয়েছেন, ১৯৮১ সালে ময়মনসিংহে সাহিত্য সংসদ মঞ্চ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এর দুই বছর পর শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন উদ্যানে সাহিত্য সংসদ মঞ্চ তৈরি করা হয়। কবি-সাহিত্যিকরা এখানে বিভিন্ন উৎসব উদযাপনসহ কবিতা ও সাহিত্যের চর্চা করতেন। হঠাৎ বুলডোজার দিয়ে মঞ্চটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
কবি শামীম আশরাফ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ময়মনসিংহ সংস্কৃতির নগরীর। এখানে সাহিত্য পল্লী করার কথা ছিল। কিন্তু তা হয়নি। আমাদের সাহিত্য সংসদের মঞ্চে সাহিত্য চর্চার জন্য সারা বাংলাদেশ থেকে মানুষ আসে। এখানে সাহিত্যের আয়োজন চলত। এখান থেকে কবি-সাহিত্যিকরা সমাজের আলো বিলাতেন। এটা ভাঙ্গা মানে আমাদের মন ভাঙা, আমাদের সাহিত্যের সবকিছু ভেঙে দেওয়া। সাহিত্য সংসদের মঞ্চ ভেঙে দেওয়া মানে, সংস্কৃতিতে ভেঙে দেওয়া।
তিনি জানান, এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদী কথা, কবিতা ও গান হবে। ময়মনসিংহের সব কবি, সাহিত্যিক ও সংস্কৃতি প্রেমীরা উপস্থিত থাকবেন।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব সুমনা আল মজীদ বলেন, সিটি কর্পোরেশন ও জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত যৌথ অভিযান চালিয়ে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন উদ্যানে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা সাহিত্য সংসদ মঞ্চ ও বিজয়ী পিঠা ঘরসহ ৫টি স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে। এগুলোর বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই। ইজারা দেওয়া হতো না। তাই ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অভিযান চলমান থাকবে।
ইত্তেফাক/এপি