ঢাকা, ৯ই মে,২০২৫ঃ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে হঠাত করেই সরব হয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), জামাত-শিবিরসহ ইসলামিক রাজনৈতিক দলগুলোর একাংশ। গত বছর থেকে বিভিন্ন সময় এই দাবি তারা করলেও গত কয়েক মাসে এ বিষয়ে কোন আন্দোলন করেনি।
এর মধ্যে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, শেয়ারবাজারে লুটপাট, এনসিপি নেতাদের সীমাহীন দুর্নীতিস বিভিন্ন বিষয়ে ব্যাপক সমালোচনা এবং নিন্দার ঝড় বয়ে যায় ইউনুস সরকারের বিরুদ্ধে। সাধারণ জনগণ এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব বিষয় থেকে চোখ ফেরাতেই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসা হয়েছে। এছাড়াও আলোচিত-সমালোচিত করিডোর ইস্যু থেকে চোখ ঘুরাতে এই আন্দোলন শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তারা।
শুক্রবার আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন আন্দোলনকারীরা। এর আগে ‘শাহবাগ ব্লকেড’ কর্মসূচির ঘোষণা দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তার পরপরই শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা।
শুক্রবার বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটের দিকে মিন্টো রোড থেকে শাহবাগ অভিমুখে মিছিল নিয়ে আসেন আন্দোলনকারীরা। এরপর শাহবাগ মোড়ে বসে পড়েন আন্দোলনকারীরা। এতে এনসিপি, শিবির, আপ বাংলাদেশ, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা দলে দলে যোগ দেন।
শাহবাগে ব্লকেডে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা বলছেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বেন না তারা।
শুক্রবার আন্দোলন চলাকালে শাহবাগ এলাকায় আবদুল আলীম নামে ব্যবসায়ী বলেন, যা বলতে চাই, সে বিষয়ে বলতে ভয় করে। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা তো মুখের কথা না। দেশের সংস্কার আর উন্নয়ন বাদ দিয়ে এসবের তো কোন মানে নেই। আগেও দুর্নীতি হয়েছে, এখনও হচ্ছে। এসব দুর্নীতি থেকে মানুষের চোখ ফেরাতেই এসব আন্দোলনের নাটক শুরু হয়েছে।
এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক মো. রোকনুজ্জমান বলেন, এসব নিষিদ্ধ নিষিদ্ধ খেলা রাজনীতির পুরোনো চাল। আমরা জানি গত কয়েক মাসে দেশে কি হয়েছে। এনসিপি নেতাদের কমিশন বাণিজ্য, দুদকের অনুসন্ধান, বিভিন্ন জায়গায় তদবির এবং ক্ষমতার অপব্যবহার হয়ে উঠেছিল নিত্যদিনের আলোচনার বিষয়। সার্বিকভাবে মনে হচ্ছে নির্বাচন পেছানো এবং সকল কিছু থেকে চোখ ফিরিয়ে নিতেই এসব শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, শেয়ারবাজারে লুটপাট, মায়ানমারের সাথে করিডোর ইস্যু নিয়ে সমালোচনার মুখে রয়েছে এই সরকার। এসব কিছু সমাধান না করে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিষয়ে এতো গুরুত্ব দেওয়া সত্যিই দুঃখজনক।