আবারও কি ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইলের ফাঁদে জাতিকে নামানো হচ্ছে? ইউনুসের পদত্যাগ গুঞ্জন ঘিরে রাজধানীর রাজনীতিতে নতুন করে আলোড়ন তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে জামায়াত ও শিবিরের অভ্যন্তরে যে ধরনের আতঙ্ক ও ছটফটানি দেখা যাচ্ছে, তা ন্যূনতম কৌশলগত আত্মবিশ্বাসের সংকটকেই সামনে এনে দিচ্ছে। একদিকে এনসিপি ভেতর থেকে প্রায় ফাঁপা, বিএনপির সাথে সম্পর্ক এখন কার্যত ছিন্ন, অন্যদিকে সমন্বয়ক নামে পরিচিত কিছু ভাসমান শক্তি এখন ‘প্রয়োজন ফুরালে দূরে ঠেলো’ নীতিতে কাজ করছে। ফলে ইউনুসের পদত্যাগ সম্ভাবনার খবরে সবচেয়ে বেশি দিশেহারা হয়ে পড়েছে জামায়াত-শিবির গোষ্ঠীই।
জামায়াতের শীর্ষ নেতৃত্ব ইতিমধ্যে একটি জরুরি বৈঠক ডেকেছে যাতে ‘ঐক্য’ টিকিয়ে রাখার আপিল জানানো হয়েছে। রাজনৈতিকভাবে এটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ—কারণ, এই ‘ঐক্য’ কথাটিই বর্তমানে বড় প্রশ্নবোধক চিহ্নের মুখে। শিবিরের সাবেক ও বর্তমান নেতাদের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট, কান্নাজড়ানো আহ্বান এবং বাঁশেরকেল্লার মতো পেইজে জুলাইয়ের সংঘর্ষের ভিডিও পুনরায় শেয়ার—সব মিলিয়ে একটি বৃহৎ আবেগনির্ভর মোচড় তৈরি করার চেষ্টা চলছে, যার উদ্দেশ্য স্পষ্ট: জাতিকে আবারও ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে রাস্তায় নামানো।
তারা জানেন এই প্রজেক্ট টিকে থাকার সম্ভাবনা কতটা ক্ষীণ। অথচ এখন তারা একজোট হয়ে শেষ চেষ্টাটুকু করছে ইউনুসকে টিকিয়ে রাখার জন্য—কখনো হুমকি, কখনো অনুরোধ, আবার কখনো সর্বদলীয় বৈঠকের প্রস্তাব দিয়ে।
ইউনুস নিজেও জানিয়েছেন, মানবিক করিডোর ও বন্দর সংক্রান্ত বিষয়ে পশ্চিমা শক্তিগুলোর চাপ দিন দিন অসহনীয় হয়ে উঠছে। এই চাপের পরিপ্রেক্ষিতেই তার পদত্যাগের চিন্তা—তবে এর পিছনেও কি কৌশলগত নাটকীয়তা আছে? এই প্রশ্ন এখন গুরুত্বপূর্ণ।
সবকিছু মিলিয়ে এটি এখন স্পষ্ট যে, এনসিপি নেতৃত্বাধীন বর্তমান গোষ্ঠী নিজেরাই জানে, ক্ষমতায় থাকার ন্যূনতম গণতান্ত্রিক ভিত্তি তাদের নেই। তাদের একমাত্র ভরসা হলো জামায়াত-শিবিরের সাংগঠনিক কাঠামো এবং ইমোশনাল অ্যাজিটেশনের অপকৌশল। তাই তারা আবারও চেষ্টা করছে একটি ‘মহান সংকটের’ আখ্যান গড়ে তোলে জাতিকে আবেগ দিয়ে ম্যানিপুলেট করতে। তবে প্রশ্ন হলো—এবারও কি মানুষ এত সহজে ভুলবে ৫ আগস্টের আগের ষড়যন্ত্র, দখলের সেই কলঙ্কিত অধ্যায়?