Close Menu

    সাবস্ক্রাইব

    সর্বশেষ খবরের সাথে আপডেট থাকুন।

    জনপ্রিয় সংবাদ

    প্রধান উপদেষ্টা আমাদের সঙ্গে থাকছেন: বৈঠক শেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা

    May 24, 2025

    সুন্দর বাংলাদেশ, ইউনুস করলো শেষ!

    May 24, 2025

    গণবিরোধী দুঃশাসন থেকে দেশ বাঁচাতে শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তনই এখন একমাত্র আশা

    May 24, 2025
    Facebook Instagram WhatsApp TikTok
    Facebook Instagram YouTube TikTok
    JoyBangla – Your Gateway to Bangladesh
    Subscribe
    • হোম পেইজ
    • বিষয়
      • দেশ (Bangladesh)
      • আন্তজাতিক (International)
      • জাতীয় (National)
      • রাজনীতি (Politics)
      • অথনীতি (Economy)
      • খেলা (Sports)
      • বিনোদন (Entertainment)
      • লাইফ স্টাইল (Lifestyle)
      • শিক্ষাঙ্গন (Education)
      • টেক (Technology)
      • ধম (Religion)
      • পরবাস (Diaspora)
      • সাক্ষাৎকার (Interview)
      • শিল্প- সাহিত্য (Art & Culture)
      • সম্পাদকীয় (Editorial)
    • আমাদের সম্পর্কে
    • যোগাযোগ করুন
    JoyBangla – Your Gateway to Bangladesh
    Home » প্রকৌশলী আবুল হায়াত যেভাবে জনপ্রিয় অভিনেতা হলেন
    Art & Culture

    প্রকৌশলী আবুল হায়াত যেভাবে জনপ্রিয় অভিনেতা হলেন

    JoyBangla EditorBy JoyBangla EditorMay 24, 2025No Comments8 Mins Read
    Facebook WhatsApp Copy Link
    Share
    Facebook WhatsApp Copy Link

    মঞ্চ, টিভি, চলচ্চিত্র থেকে বিজ্ঞাপনচিত্র—বিচিত্র সব চরিত্রে অভিনয় করে হয়ে উঠেছেন সবার চেনা। সংস্কৃতিক্ষেত্রে অবদানের জন্য পেয়েছেন একুশে পদক। গুণী অভিনয়শিল্পী আবুল হায়াত গতকাল পেলেন ‘মেরিল-প্রথম আলো আজীবন সম্মাননা ২০২৫’। তাঁর জীবনের গল্প শোনাচ্ছেন লতিফুল হক

    আবুল হায়াত মঞ্চ, টিভি, চলচ্চিত্র থেকে বিজ্ঞাপনচিত্র—বিচিত্র সব চরিত্রে অভিনয় করে হয়ে উঠেছেন সবার চেনা মুখ

     ‘এই লও তোমার বিপাশা,’ ছয় দিন বয়সী নবজাতককে কোলে দিতে দিতে বললেন ফুফুশাশুড়ি। দিনটা ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ। যেকোনো বাবার জন্যই প্রথম সন্তান কোলে নেওয়ার মুহূর্তটা আবেগের, আবুল হায়াতের জন্য মুহূর্তটা আরেকটু বিশেষ। কারণ, একাত্তরের সেই উত্তাল দিনে তিনি হাসপাতালে, কোমা থেকে সবে ফিরেছেন! জীবনে আবার এমন প্রবল অসুস্থতায় পড়েছেন পাঁচ দশক পর, ২০২১ সালে, যখন তাঁর কর্কট রোগ ধরা পড়ে। তবে এবারও স্ত্রী, পরিবার আর চিকিৎসকদের প্রেরণায় প্রবল মানসিক শক্তির জোরে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। ১৮ মে সকালে আমরা যখন আবুল হায়াতের বাসায় তাঁর মুখোমুখি হলাম, তখন তাঁকে দেখে কে বলবে বয়স ৮০ পেরিয়েছে! দিব্যি চনমনে, আগের দিনই চট্টগ্রাম থেকে শুটিং করে ফিরেছেন। তবু ক্লান্তির ছাপ নেই। এক দিন বিরতি দিয়ে মাসের ১৫-১৬ দিন কাজ করেন, টানা শিডিউল। এই বয়সেও এত শারীরিক ও মানসিক শক্তির উৎস কী? চায়ে চুমুক দিয়ে হাসলেন। টি–শার্ট আর ট্রাউজার পরা আবুল হায়াত আরাম করে বসলেন। খুলে দিলেন গল্পের ঝাঁপি। সেই ব্রিটিশ ভারতের মুর্শিদাবাদ থেকে, পূর্ব পাকিস্তানের চট্টগ্রাম হয়ে গল্প চলল আজকের ঢাকা পর্যন্ত।

    এলাম নতুন দেশে

    মুনিষের (কুলি) কাঁধে চড়ে স্টেশনে আসা, রেলের কালো ইঞ্জিনের বিকট হুইসেল আর গোয়ালন্দ ঘাটে স্টিমার—এই তিনটা জিনিস মনে আছে। বয়স তখন মোটে তিন। দেশ ছেড়ে নতুন দেশে আসার গল্প এটা। ১৯৪৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ ভারতের মুর্শিদাবাদে জন্ম। বাবা এম এ সালাম ছিলেন রেলের চাকুরে। বদলি হলেন চট্টগ্রামে। পরিবার আর ভিটেমাটি ছেড়ে কেই–বা আসতে চায়। তবে চট্টগ্রামে গেলে রেলের কোয়ার্টার মিলবে। বাবা বলেছিলেন, ‘ভালো না লাগলে ফিরে আসব।’

    তিন বছরের আবুল হায়াত তখন জানতেন না, আর ফেরা হবে না। নতুন সেই দেশই হয়ে যাবে তাঁর জীবনের ঠিকানা। পাহাড় ঘেরা পাড়া আর অনেক অনেক বন্ধু নিয়ে শুরু হবে নতুন জীবন।

    বাটালি আর টাইগারপাস পাহাড়ের পাদদেশে ছিল সুন্দর এক সমতল ভূমি। বাসার ঠিক পেছনটাতেই পাহাড়ের গোড়ায় এক বিশাল বটগাছ। শকুনে ভর্তি থাকত মগডালটা। দিনের বেলায় দল বেঁধে আনন্দে ফুল তুলতে যেতেন, কিন্তু রাতটা ছিল ভীতিকর। বিদ্যুৎ তখনো আসেনি। সন্ধ্যা হতে না হতেই শিয়ালের কোরাস। আর একটু রাত হলে তক্ষকের ডাক। রীতিমতো হরর সিনেমার পরিবেশ। নিজের আত্মজীবনী রবি পথ-এ এভাবেই শৈশবের নিজের পাড়ার বর্ণনা দিয়েছেন আবুল হায়াত। শৈশবে অনাবিল প্রকৃতির সঙ্গে ছিল বন্ধুর দল। রেলওয়ে পাড়াগুলোতে সারা বছরই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান লেগে থাকত।

    ‘সেই আমলে প্রচুর নাটক হতো। অমলেন্দু বিশ্বাস স্কুলে রেলওয়ে এমপ্লয়িজ ক্লাবে এসে নাটক করতেন। আমার বাবা ছিলেন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক। আমি তখন বাচ্চা, মায়ের আঁচল ধরে যেতাম। দেখতাম একটা লোক মঞ্চে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন, বড় বড় সংলাপ বলছেন আর লোকজন তালি দিচ্ছে। ৫ বছর বয়স থেকে ১০ পর্যন্ত এসব নাটক আমাকে অনুপ্রাণিত করল। পাড়ায় আমার এক বন্ধু ছিল মিন্টু। বললাম চল, নাটক করি। নিজেরাই সব করব। মঞ্চ বানিয়ে নাটক করলাম, টিপু সুলতান। সেই শুরু…,’ বলতে বলতে যেন শৈশবে ফিরে গেলেন আবুল হায়াত।

    ক্যাম্পাসের রঙিন দিনগুলো

    ১৯৬২ সালে ভর্তি হন ইস্ট পাকিস্তান ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজিতে (বর্তমানে বুয়েট)। তখন ক্যাম্পাসে প্রচুর নাটক হতো, বিখ্যাত সব শিল্পী আসতেন। ‘ওরা তো আমাকে নাটককে নেবে না, কিন্তু আমি রিহার্সালে গিয়ে বসে থাকতাম। এই করতে করতে নেশা হয়ে গেল, পাস করার পর মনে হলো ঢাকাতে থাকতে হবে, ঢাকাতে থাকলে সব সময় নাটক করতে পারব,’ বলছিলেন আবুল হায়াত।

    ঢাকার মঞ্চে তাঁর প্রথম নাটক সে–ও ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময়, এক মুঠো আকাশ মঞ্চস্থ হয় ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে।

    ১৯৬৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ওয়াসায় যোগ দিলেন আবুল হায়াত। ৩৫০ টাকা স্কেলে বেতন। নাটকের নেশা তখন আরও পেয়েছে। ঢাকার আজিমপুরে মেস নিলেন। সেখানে ছিলেন আরেক ইঞ্জিনিয়ার গোলাম রাব্বানী। তিনিও নাটকের পোকা। তাঁর মাধ্যমেই ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে যোগাযোগ। শুরু হলো জীবনের আরেক অধ্যায়। আবুল হায়াত বলছিলেন, ‘সংস্কৃতি সংসদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেলাম। চাকরি করি আবার সংস্কৃতি সংসদের সঙ্গেও কাজ করি। ১৯৬৯, ’৭০ থেকে শুরু করে ’৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়া পর্যন্ত এভাবেই চলতে থাকল। এই তিন বছরে রাস্তাঘাটে, শহীদ মিনারে, ক্যাম্পাসে প্রচুর নাটক করেছি। সবই ছিল আন্দোলনের নাটক, মুক্তির নাটক।’

    এর আগে ১৯৬৮ সালে ইনামুল হক, জিয়া হায়দার, আতাউর রহমান, গোলাম রাব্বানীদের সঙ্গে মিলে প্রতিষ্ঠা করলেন নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়। বর্তমানে তিনি নাগরিকের উপদেষ্টা।

    ১৯৬৯ সালে টেলিভিশনে অভিষেক, সেটাও ছিল নাগরিকের নাটক, ইডিপাস। তখন দর্শক অনেক সীমিত ছিল, টেলিভিশনই ছিল হাজারখানেক, তা–ও শুধু ঢাকা শহরে, বললেন তিনি।

    ১৯৬০-এর দশক তাঁর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়। টিভিতে অভিষেক, নাগরিক নাট্যদলের প্রতিষ্ঠা; ১৯৬৫ সালে চট্টগ্রাম বেতারে অডিশন দিয়েছিলেন, পাসও করেছিলেন। কিন্তু ঢাকায় থাকায় আর সেখানে নাটক করা হয়নি। তবে দিন সাতেক খবর পড়েছিলেন।

    ‘তোমারে জমিদারের মতো লাগতেছে’

    ১৯৬৮ সাল থেকে রক্তকরবী নাটকে অভিনয় করতে গিয়ে হাসান ইমামের সঙ্গে সম্পর্ক। ১৯৭২ সালে হাসান ইমাম প্রস্তাব দিলেন, সিনেমায় অভিনয় করবেন কি না। ঋত্বিক ঘটকের নাম শুনে তো রোমাঞ্চিত। তিনি এফডিসিতে ডাকলেন। মাথায় চুল লাগিয়ে মেকআপ দিয়ে টেস্ট করে ঋত্বিক ঘটকের সামনে নেওয়া হলে পরিচালক বললেন, ‘চুলটুল লাগবো না। এমনিতেই তোমারে জমিদারের মতো লাগতেছে। তুমি এমনিতেই পাস।’

    অভিনয়জীবনের শুরুর দিকেই ঋত্বিক ঘটকের তিতাস একটি নদীর নাম–এ সুযোগ পাওয়া তাঁর জন্য অবিস্মরণীয় ঘটনা। তিনি বলছিলেন, ‘ভোর পাঁচটায় ঢাকা থেকে নিয়ে গেছে। আরিচা পর্যন্ত যেতে তখন তিনটা ফেরি ছিল। গিয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বসে রইলাম। সারা দিন ওয়েট করলাম। আমাকে বুঝিয়ে দেওয়া হলো, এ-ই হচ্ছে তোমার সিন। ওই হচ্ছে তোমার সিন। এসব করতে করতে সন্ধ্যাবেলায় ঋত্বিকদা বললেন, “আইজক্যা তো পারুম না। কাইলক্যা অইবো তোমারটা।” আমার তো মাথায় হাত। সরকারি চাকরি করি। ছুটি নিয়ে গেছি। এক দিনের ক্যাজুয়াল লিভ নিয়ে আরেক দিন! অনেক হাতেপায়ে ধরে বললাম, আমাকে মাফ করে দেন। পরে যেদিন হবে, সেদিন আর স্ক্রিপ্ট খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। সহকারী পরিচালকের সঙ্গে ঝগড়াটগড়া শেষে ঋত্বিকদা মাটিতে বসে আবার লিখতে বসে গেলেন।’

    সব ছেড়ে অভিনয়ে

    সরকারি চাকরি, বেতন কম। বাবার মৃত্যুর পর সংসারে আর্থিক টানাপোড়েন। নাটক করে তো আর তেমন আয়রোজগার হয় না। দেশ স্বাধীনের কয়েক বছর পর স্ত্রী শিরী হায়াতই একদিন বললেন, ‘অনেকে তো বিদেশে যাচ্ছে, তুমি চেষ্টা করছ না কেন?’

    তখন লিবিয়ায় ইঞ্জিনিয়ারদের বেশ কদর। আবুল হায়াত ঠিক করলেন তিনিও যাবেন। নিজের বইতে তিনি লিখেছেন, ‘ওই সময়টা আমার সংসারের জন্য কোনো পিছুটান ছিল না। আম্মা সিরোসিসের কারণে ইন্তেকাল করেছেন চুয়াত্তরে। ছোট বোনদের বিয়েও দিয়েছি আমরা। বিপাশা ক্লাস থ্রিতে পড়ছে, আর আমার নাতাশার বয়স মাত্র এক বছর। নানান চিন্তাভাবনা করে শিরী বলেছিল, “গিয়ে দেখ না।” গেলাম শেষ পর্যন্ত। হাতে টাকাপয়সার টানাটানি। ধার করলাম স্যুট বানানোর জন্য। একটা ভালো স্যুটকেসও কেনা হলো। বাড়িঘরের দায়িত্ব শিরীর ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে এক সুন্দর সকালে চোখের পানি মুছতে মুছতে উড়াল দিলাম ত্রিপলির উদ্দেশে।’

    ১৯৭৮ সালের ৩০ নভেম্বর লিবিয়া যান আবুল হায়াত। এক মাস পরে তাঁর সঙ্গে যোগ দেয় পুরো পরিবার। তবে ঢাকার অভিনয়ের জীবন ছেড়ে যেতে একটু মন সায় দেয়নি। লিবিয়ায় গিয়ে অভিনয় করেছেন, নির্দেশনা দিয়েছেন, কিন্তু তাতে কি আর মন ভরে। তিন বছর পর ঢাকায় ফিরে চাকরিতে যোগ দেন, কিন্তু আর্থিক টানাপোড়েন থেকেই যায়। সরকারি চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে বেসরকারি চাকরি নেন, কিছুদিন পরামর্শক হিসেবেও কাজ করেন। এই সময় তিন মাস ছিলেন লাওসে। ১৯৯৫ সালের দিকে বিটিভিতে প্যাকেজ যুগের শুরুর দিকেই ভিডিও মাধ্যমে আগ্রহী হয়ে ওঠেন আবুল হায়াত। পুরোপুরিভাবে চাকরি ছেড়ে পেশা হিসেবে এই মাধ্যমকেই বেছে নেন।

    মঞ্চের অনেকেরই তখন টিভি নাটক নিয়ে একটা নাক সিটকানি ভাব থাকলেও সানন্দে নতুন এই মাধ্যমকে লুফে নিয়েছিলেন আবুল হায়াত। তাঁকে বিটিভির স্বর্ণযুগের অন্যতম নায়ক বললেও ভুল হয় না। অয়োময়, বহুব্রীহি, সৈকতে সারস, নক্ষত্রের রাত, আজ রবিবার, ডাকঘর, আগন্তুক, শেষ রক্ষা, মুক্তধারা, মুহূর্ত, খেলা, শিকার, দ্বিতীয় জন্ম, মিসির আলি সিরিজের অন্য ভুবনের সে ও অন্য ভুবনের ছেলেটা ইত্যাদি নাটকের সুবাদে তখন আবুল হায়াত দেশজুড়ে দর্শকের কাছের ‘ঘরের মানুষ’।

    তবে টিভি নাটকের এই সাফল্যের আগেই চলচ্চিত্রে নাম করেছেন তিনি। সেই ঋত্বিক ঘটকের তিতাস একটি নদীর নাম, সুভাষ দত্তর বলাকা মন, রাজেন তরফদারের পালঙ্ক, বেবী ইসলামের চরিত্রহীন, মাজেদ মল্লিকের রক্তশপথ করেছিলেন, এরপর সেভাবে আর তাঁকে সিনেমায় পাওয়া যায়নি। আবার শঙ্খনীল কারাগার, আগুনের পরশমণি, কেয়ামত থেকে কেয়ামত, অবুঝ দুটি মন, স্বপ্নের ঠিকানাসহ নব্বই দশকের একের পর এক আলোচিত সিনেমায় দেখা যায় তাঁকে।

    ৫৫ বছরের সংসার

    মাহফুজা খাতুন ওরফে শিরী সম্পর্কে আবুল হায়াতের মেজ দুলাভাইয়ের ছোট বোন। দুলাভাইয়ের আকস্মিক মৃত্যুর পর ছেলের সঙ্গে শিরীর বিয়ে দিয়ে পারিবারিক বন্ধন মজবুত করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন মা। এভাবেই ১৯৭০ সালে শুরু হয় আবুল হায়াত ও শিরী হায়াতের দাম্পত্যজীবন।

    চাকরি আর অভিনয় নিয়ে প্রচণ্ড ব্যস্ততা, আবুল হায়াত সংসারে তেমন মন দিতে পারেননি। সংসার সামলে দুই কন্যাকে ভালোভাবে মানুষ করা, অসুস্থতায় মানসিক শক্তি জোগানো—সবকিছুর কৃতিত্ব স্ত্রীকে দিলেন আবুল হায়াত, ‘চার বোনের এক ভাই, প্রচণ্ড আদরে বড় হয়েছি। ফলে আমার মানসিক শক্তি ততটা প্রবল ছিল না। কিন্তু বিয়ের পর শিরীই আমাকে সব ব্যাপারে প্রেরণা জুগিয়েছে। আমার জীবনের সব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তই ওর সঙ্গে আলোচনা করে নেওয়া।’

    কথায় কথায় বলছিলেন, তিনি খেলার পোকা। বিশেষত ক্রিকেটের। এতটাই যে সেই সময়ে কেবল ক্রিকেটের ধারাভাষ্য শোনার জন্য দুই হাজার টাকা দিয়ে রেডিও কিনেছিলেন। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজে খেলা হয় বাংলাদেশ সময় গভীর রাতে। স্ত্রীর ঘুমের অসুবিধা হবে ভেবে একটা হেডফোনও কিনে নেন। পরে বের করেন অন্য উপায়। ‘ওকেও ক্রিকেটের ভক্ত বানালাম, এখন তো বাংলাদেশের খেলা থাকলে ও–ই টিভি ছেড়ে বসে থাকে।’ হাসতে হাসতে বলছিলেন আবুল হায়াত।

    তিনি পানি ভয় পান। এ জন্য ছেড়েছেন অনেক কাজও। মাঝেমধ্যে নৌকায় উঠলে শিরী বলতেন, ‘পানিতে পড়লে আমাকে ছুঁয়ে থাকবে, তাহলে ডুববে না।’ আক্ষরিক অর্থেই প্রিয় শিরীকে ছুঁয়ে সব নদী পার হয়েছেন তিনি।

    আলাপের শেষে জানতে চাই, আশিতে দাঁড়িয়ে পেছন ফিরে দেখলে কী মনে হয়।

    ‘জীবন সুন্দর’, দুই শব্দে উত্তর দিলেন, মুখে সেই চেনা হাসি। আমরা চুপ। বুঝলেন আরও বিশদে শুনতে চাই। আবার বলতে শুরু করলেন, ‘জীবন হলো কাজ করার জায়গা। যে যত কাজ করবে, তার জীবন তত সুন্দর। যে কাজটাকে ভালোবাসেন, সেই কাজটা যদি করে যান, তাহলে আপনার চেয়ে সুখী আর কেউ নেই। আমি সেটাই করার চেষ্টা করছি। আমার কাজ আমি ভালোবাসি, সে কারণেই হয়তো বেঁচে আছি। সবাই বলে আপনি জীবনে কতটা সুখী? আমি বলব, আমি পুরোপুরি সুখী। আব্বা বলতেন, সব সময় কম চাইবে, তাহলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তোমার চাওয়া পূরণ হবে; হতাশ হবে না। সেটা মানার চেষ্টা করেছি।’

    কাজের কথা বলতে বলতেই তাঁর মনে পড়ল চলতি মাসেই টানা কাজ। কাল ঢাকা, এরপর গাজীপুর…বলতে বলতেই আমাদের বিদায় জানাতে উঠে দাঁড়ালেন আশি বছরের ‘তরুণ’ আবুল হায়াত।

    Share. Facebook WhatsApp Copy Link
    Previous Article‘ড. ইউনূসকে ঘিরে একটি চক্র’, ভেতরে চার-বাইরে তিন
    Next Article বৈদেশিক ঋণ বেড়ে ১০৩ বিলিয়ন ডলার, বাড়ছে ঝুঁকিও
    JoyBangla Editor

    Related Posts

    কুষ্টিয়ায় গাজী কালু-চম্পাবতী মেলায় জামায়াত-এর হামলা, মেলা বন্ধ

    May 24, 2025

    বুকার ’২৫ বিজয়, বানু মুশতাক : সাম্প্রতিক ভারতীয় সাহিত্যে মুসলিম জীবনধারার বর্ণনাকার

    May 23, 2025

    কানে ‘আলী’ হয়ে উঠল এক খণ্ড বাংলাদেশ

    May 23, 2025

    জামিনে মুক্তি পেলেন নুসরাত ফারিয়া

    May 20, 2025
    Leave A Reply Cancel Reply

    সম্পাদকের পছন্দ

    সুন্দর বাংলাদেশ, ইউনুস করলো শেষ!

    May 24, 2025

    পাঠ্যপুস্তক কেলেঙ্কারি: ৩৫৫ কোটি টাকা লুটে নিল ১৭টি ছাপাখানা!

    May 24, 2025

    সেনা হেফাজতে বিচারপতিরা: ইউনূস সরকার নিয়ে ‘পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের’ রেফারেন্সে উঠেছে প্রশ্ন

    May 24, 2025

    পদত্যাগ নয়, নতুন করে ঘুঁটি সাজানো হচ্ছে

    May 24, 2025
    • Facebook
    • Twitter
    • Instagram
    • TikTok
    মিস করবেন না
    Politics

    প্রধান উপদেষ্টা আমাদের সঙ্গে থাকছেন: বৈঠক শেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা

    By JoyBangla EditorMay 24, 20250

    জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা। এরপরই উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের অনির্ধারিত বৈঠক শুরু হয়।…

    সুন্দর বাংলাদেশ, ইউনুস করলো শেষ!

    May 24, 2025

    গণবিরোধী দুঃশাসন থেকে দেশ বাঁচাতে শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তনই এখন একমাত্র আশা

    May 24, 2025

    পাঠ্যপুস্তক কেলেঙ্কারি: ৩৫৫ কোটি টাকা লুটে নিল ১৭টি ছাপাখানা!

    May 24, 2025

    সাবস্ক্রাইব

    সর্বশেষ খবরের সাথে আপডেট থাকুন।

    About Us
    About Us

    মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও লালন করে দেশ ও বিদেশের খবর পাঠকের কাছে দুত পৌছে দিতে জয় বাংলা অঙ্গিকার বদ্ধ। তাৎক্ষণিক সংবাদ শিরোনাম ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পেতে জয় বাংলা অনলাইন এর সঙ্গে থাকুন পতিদিন।

    Email Us: info@joybangla.co.uk

    Our Picks

    সুন্দর বাংলাদেশ, ইউনুস করলো শেষ!

    May 24, 2025

    পাঠ্যপুস্তক কেলেঙ্কারি: ৩৫৫ কোটি টাকা লুটে নিল ১৭টি ছাপাখানা!

    May 24, 2025

    সেনা হেফাজতে বিচারপতিরা: ইউনূস সরকার নিয়ে ‘পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের’ রেফারেন্সে উঠেছে প্রশ্ন

    May 24, 2025

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.