দেশের রাজনীতিতে আবারও এক নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস। সম্প্রতি তাঁর ডাকে অনুষ্ঠিত তথাকথিত ‘সর্বদলীয় বৈঠক’ নিয়ে সাধারণ জনগণের মাঝে প্রশ্ন উঠেছে যেখানে দেশের ৬০% মানুষের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক জোট ১৪ দলকে বাদ দেওয়া হয়েছে, সেটি কীভাবে সর্বদলীয় বৈঠক হতে পারে?
জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে জনগণের ঐক্য এবং রাজনৈতিক সংলাপ জরুরি হলেও, সেই সংলাপে স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী এবং দীর্ঘদিন রাষ্ট্র পরিচালনায় থাকা আওয়ামী লীগ, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি প্রভৃতি দলগুলোর অনুপস্থিতি একটি গুরুতর উদ্বেগের বিষয়। ১৪ দলীয় জোট দেশের ৬০ শতাংশ জনগণের সমর্থন নিয়ে গঠিত একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক মঞ্চ। অথচ এই বৃহৎ অংশকে পাশ কাটিয়ে, নিবন্ধনহীন ও নামমাত্র দলের সঙ্গে বৈঠক করে সেটিকে ‘সর্বদলীয়’ বলে প্রচার করাটা জাতিকে বিভ্রান্ত করার অপপ্রয়াস ছাড়া কিছুই নয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, জামায়াতে ইসলামীর মতো স্বাধীনতাবিরোধী দলের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানিয়ে এবং নির্বাচনী রাজনীতি থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন, পরিচিতিহীন গোষ্ঠীগুলোর মাধ্যমে ‘সর্বদলীয় বৈঠক’ করার পেছনে রয়েছে সুপরিকল্পিত একটি এজেন্ডা। এটি স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশকে আবারও একটি অন্ধকার ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দেওয়ার প্রয়াস।
প্রশ্ন উঠছে যে বৈঠকে দেশের মূলধারার রাজনীতি, স্বাধীনতার চেতনা ও জনগণের ভোটাধিকার রক্ষাকারী দলগুলোর কোনো উপস্থিতি নেই, সেটি কীভাবে জাতীয় ঐক্যের প্রতিফলন হতে পারে? জনমনে ধারণা হচ্ছে, এটি এক ধরনের নাটক, যার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মহলকে বিভ্রান্ত করে একটি অনৈতিক সরকার কাঠামোকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
এমন পরিস্থিতিতে দেশের সচেতন জনগণ, গণমাধ্যম ও বুদ্ধিজীবীদের সামনে এখন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব এই তথাকথিত ‘সর্বদলীয় বৈঠক’ নামে প্রহসনমূলক রাজনীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া এবং প্রকৃত জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যথাযথ রাজনৈতিক শক্তিকে কেন্দ্রে এনে সংলাপ নিশ্চিত করা।