বর্তমান সময়ের বাংলাদেশ এক গভীর রাজনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে। গণতন্ত্র, জনগণের অধিকার ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা যেন আজ বারবার পদদলিত হচ্ছে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট যে অঘোষিত অভ্যুত্থান ঘটে, তারই ধারাবাহিকতায় দেশের ১০০ জনেরও বেশি সংসদ সদস্য (এমপি) আজ কারাবন্দি তাও আবার মিথ্যা, মনগড়া অভিযোগে এবং বিনা তদন্তে। এটি একটি ভয়াবহ, অমানবিক ও অসাংবিধানিক পদক্ষেপ, যার মাধ্যমে অবৈধ সরকার দেশের আইন, বিচারব্যবস্থা ও জনপ্রতিনিধিত্বশীল ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, আটককৃত এই এমপিদের অধিকাংশই জননন্দিত আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতিনিধি, যাঁরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে ধারণ করে এদেশের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। তারা কখনোই সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেননি। অথচ অবৈধ সরকারের ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখার হীন চেষ্টায় তাদের উপর জুলুম চালানো হচ্ছে। এটি কেবল একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র নয়, এটি মুক্তিযুদ্ধের অর্জন এবং গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে সরাসরি ঘোষণা করা যুদ্ধ।
যেসব এমপি আটক হয়েছেন, তাদের অনেকে দীর্ঘদিন ধরে নিজ নিজ এলাকায় নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন দেশের উন্নয়নের জন্য। বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে তাঁদের অবদান অস্বীকার করার সুযোগ নেই। এই এমপিদের নেতৃত্বেই দেশের মানুষের জীবনমান উন্নত হয়েছিল। আজ সেই জনগণের প্রতিনিধিদের ‘অপরাধী’ সাজিয়ে কারাগারে নিক্ষেপ করা হচ্ছে এ এক ভয়ঙ্কর ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি।
আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আমরা বলতে চাই গণতন্ত্র মানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, জনপ্রতিনিধিদের সম্মান ও জনগণের রায়কে শ্রদ্ধা করা। যেসব বিদেশি চক্র ও অভ্যন্তরীণ অপশক্তি মিলে এই অসাংবিধানিক সরকারকে প্রতিষ্ঠিত করেছে, তাদের উদ্দেশ্য দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও উন্নয়ন পথকে ধ্বংস করা।
জনগণ আজ জেগে উঠছে। জাতির বিবেক আজ প্রশ্ন করছে কেন মুক্তিযুদ্ধের সৈনিকদের বন্দি করা হচ্ছে? কেন বৈধ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের বাইরে রেখে একটি গোষ্ঠী অবৈধভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার চেষ্টা করছে?
এই অবৈধ সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে না। আটককৃত সব সংসদ সদস্যকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। দেশে অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে যেন জনগণের রায়ই হয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বিশ্বাসী প্রতিটি নাগরিক, রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনের প্রতি আহ্বান আসুন, ঐক্যবদ্ধ হই, এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করি। দেশ রক্ষায়, স্বাধীনতা রক্ষায়, গণতন্ত্র রক্ষায় এখনই সময় সোচ্চার হবার।(আওয়ামীলীগ পেইজ)