ঢাকা, ১১ জুলাই ২০২৫: খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ এবং জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্তৃক দায়ের করা একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডিবি পুলিশের একজন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দুদকের মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, আবুল বারাকাত জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান থাকাকালীন এননটেক্স গ্রুপের নামে ২৯৭ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতি ও আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এই মামলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমানসহ মোট ২৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে জাল-জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে মিথ্যা রেকর্ড তৈরি করে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেন।
ড. আবুল বারাকাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ২০০৯ সাল থেকে জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে আসামিরা মেসার্স সুপ্রভ স্পিনিং লিমিটেডের নামে জমির অতিমূল্যায়ন করে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা লঙ্ঘন করে ঋণ অনুমোদন ও বিতরণ করেন, যা পরবর্তীতে আত্মসাৎ করা হয়।
ডিবি কর্মকর্তা জানান, আবুল বারাকাতকে গ্রেপ্তারের পর তাকে দুদকের কার্যালয়ে হস্তান্তর করা হবে। এই মামলায় জড়িত অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে। দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এই মামলায় জনতা ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে।
এ ঘটনায় অর্থনীতি ও ব্যাংকিং খাতে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। আবুল বারাকাতের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে দেশের ব্যাংকিং খাতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদকের কঠোর পদক্ষেপের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে এই মামলার তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার আগে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাবে না বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
এ বিষয়ে আরও তথ্য পাওয়ার জন্য দুদকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। গ্রেপ্তারের পর আবুল বারাকাত বা তার পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।