।। আজম খান।।
১.
বাংলাদেশের রাজনীতিতে জনসমাগমের রসায়নের মূল উপাদান মূলত একটা— ক্ষমতা। কোন দল যখন ক্ষমতায় থাকে বা ক্ষমতায় যাওয়ার সম্ভাবনা চলে আসে তখন সে দলের ছোটখাট মিছিল-মিটিংয়ে দেখবেন হাজারে হাজারে লোক। এসবে উপস্থিত বেশিরভাগ লোকের এখানে আসার কারন দৈনিক মজুরী। এই টাকার বেশিরভাগ আসে ব্যাবসায়ীদের কাছ থেকে। নিরাপদে ব্যাবসা করা এবং ব্যাবসায়িক সুবিধা নেয়ার জন্য তারা এসবে ফান্ডিং করেন। জমায়েতের আরেকটা অংশ যারা এলাকাভিত্তিক বা লোকাল লোকজন তারা ভাই কালচারের মাধ্যমে ধান্দা করার জন্য এসব মিছিল মিটিংয়ে শ্রম, সময় দিয়ে থাকেন।
এনসিপি-জামাত যদি বিএনপিকে ধ্বসায়ে দিতে চায় তবে তাদের এই পাবলিক পার্সেপশন বা ন্যারেটিভ প্রতিষ্ঠিত করে দিতে হবে যে বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়া অনিশ্চিত। এই সিগন্যালটা ঠিক করে দিতে পারলে ফান্ডিং কমে যাবে, ধান্দা হবে কি হবে না এই অনিশ্চয়তা থেকে ভাই কালচারের লোকজনও সটকে পড়বে। বিএনপির লক্ষ লোকের মিছিল আবার শততে নেমে আসবে।
২.
বিএনপি এবং জামাতের বর্তমান ঝগড়া দেখে আওয়ামি লীগের খুশী হবার কিছু নাই। লীগ দুটো মিছিল বা একটু তৎপরতা দেখালেই বিএনপি আবার জামাতের কোলে উঠে বসবে। বিএনপির মুক্তিযুদ্ধের প্রতি যে দরদ এখন দেখা যাচ্ছে ওটা মেকি। গত এক বছরে দেশব্যাপী তারা যে নৃশংসতা, খুন-ধর্ষন, লুটপাট, চাঁদাবাজি করেছে তার কালিমা ঢাকতে শরীরকে মুক্তিযুদ্ধের চাদর দিয়ে আবৃত করার চেষ্টা করছে। আর রাজনীতিতে জামাতের কুইনাইন তো একটাই— মুক্তিযুদ্ধ।
আমার ব্যাক্তিগত মতামত হচ্ছে এই চাদরে বিএনপি নিজেকে ঢাকতে পারছে না বা পারবে না। যে পরিমান জনরোষ তৈরি হয়েছে তা বিএনপির জন্য যে কোন সময়ে ভয়ংকর পরিস্থিতি ডেকে আনতে পারে। আগুনের স্ফুলিঙ্গ কখন কোন ঘটনা দিয়ে শুরু হবে সে প্রশ্নের উত্তরও সময়ে পাওয়া যাবে।