বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের (ইউএনএইচআরসি) মিশন চালুর ঘোষণা দেশের জনগণের মধ্যে গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই মিশনের জন্য যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে, তা একটি অবৈধ, ম্যান্ডেটবিহীন, গণহত্যাকারী ও ফ্যাসিস্ট ইউনূস সরকারের সঙ্গে সম্পাদিত হয়েছে। এই দখলদার সরকারের গোপন চুক্তি ও সমঝোতা, যা জনগণের সামনে প্রকাশ করা হচ্ছে না। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপের সুযোগ সৃষ্টি করছে বলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। এতে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের মানবাধিকার মিশন যদি সত্যিকার অর্থে মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করতে চায়, তবে তা স্বাগতযোগ্য। কিন্তু এই মিশন চালুর জন্য জনগণের ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে আলোচনা এবং সমাজের সর্বস্তরের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল। একটি অবৈধ সরকারের সঙ্গে গোপন চুক্তির মাধ্যমে এই মিশন চালু করা জনগণের মধ্যে সন্দেহ ও অবিশ্বাস সৃষ্টি করেছে। বিশ্বের মাত্র ১৯টি দেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় রয়েছে, যেগুলোর অধিকাংশই গৃহযুদ্ধ, জাতিগত সংঘাত বা যুদ্ধের মতো সংকটে জর্জরিত। এসব দেশে মিশন স্থাপনের পর মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতির পরিবর্তে সংকট আরও গভীর হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশে এই মিশন চালুর উদ্দেশ্য নিয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রশ্ন উত্থাপিত হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আরও উল্লেখ করা হচ্ছে যে, এই অবৈধ সরকার জনগণের অধিকার হরণ, নির্বিচারে গণহত্যা এবং সংবিধান লঙ্ঘনের মাধ্যমে দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার মিশনের নামে বিদেশি শক্তির তাঁবেদারি ও শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর স্বার্থে দেশকে জড়িয়ে ফেলার যে কোনো প্রচেষ্টা জনগণের পক্ষ থেকে তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করবে।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে:
১. এই মিশনের সমঝোতা স্মারক ও শর্তাবলী অবিলম্বে জনগণের সামনে প্রকাশ করা হোক।
২. জনগণের ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করা হোক।
৩. দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুক।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তরফ থেকে জোর দিয়ে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের জনগণ কখনোই বিদেশি হস্তক্ষেপ বা অবৈধ শাসন মেনে নেবে না। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জনগণের অধিকার রক্ষায় সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।