চলতি বছরের জুলাই মাসে দেশে ২৩৫ জন নারী ও কন্যাশিশু ভয়াবহ সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের মাসিক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, আক্রান্তদের মধ্যে ১৪৯ জন নারী এবং ৮৬ জন কন্যাশিশু।
মহিলা পরিষদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত দেশে মোট ১ হাজার ৭৯০ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ২০২৪ সালের একই সময়ে এই সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৬৬৪। অর্থাৎ, সহিংসতার হার উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
প্রতিবেদনে ধর্ষণের ঘটনায়ও উদ্বেগজনক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৪৫ জন কন্যা ও ২৯ জন নারী, মোট ৭৪ জন। মাসভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, মার্চে সহিংসতার ঘটনা ছিল সর্বাধিক (৪৪২ জন)। এপ্রিল মাসে এ সংখ্যা ছিল ৩৩২, জানুয়ারিতে ২০৫, ফেব্রুয়ারিতে ১৮৯, মে মাসে ১৮৪ এবং জুনে ২০৩ জন।
জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত পারিবারিক সহিংসতার ঘটনায় ২২ জন নারী ও কন্যাশিশু শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। যেখানে ২০২৪ সালে পুরো বছরে এই সংখ্যা ছিল ২৫ জন। এতে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছরের প্রথমার্ধেই পারিবারিক সহিংসতার পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে।
জুলাই মাসে আত্মহত্যা করেছেন ১৮ জন নারী, যাদের মধ্যে ৩ জন কন্যাশিশু। একই মাসে হত্যার শিকার হয়েছেন ১৫ জন কন্যা ও ৬৩ জন নারী। এছাড়া যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন ৯ জন কন্যা ও ৬ জন নারী।
প্রতিবেদনে ‘কন্যা’ বলতে ০ থেকে ১৮ বছর বয়সী মেয়েদের বোঝানো হয়েছে। মোট ১৩ ধরনের নির্যাতন ও সহিংসতার বিবরণ উঠে এসেছে এই প্রতিবেদনে।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ বলছে, দেশে নারী ও কন্যাশিশুদের প্রতি সহিংসতার ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। সংস্থাটি এই প্রবণতা বন্ধে সামাজিক সচেতনতা, আইন প্রয়োগে কঠোরতা এবং ভুক্তভোগীদের জন্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।