জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (জাবিপ্রবি) প্রশাসন অবৈধভাবে ৪৫ জন শিক্ষার্থীসহ মোট ৫১ জনকে সাজা দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ছাত্রলীগ করার কারণে তথাকথিত তদন্তের ভিত্তিতে এই সাজা দেওয়া হয়।
সোমবার (২৫ আগস্ট) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. নুর হোসেন চৌধুরী গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে গঠিত ১৩ সদস্যবিশিষ্ট গণতদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৯ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ১৬তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তারা হলেন: সহকারী রেজিস্ট্রার আনিসুজ্জামান, প্রকৌশলী শহীদুজ্জামান, সেকশন অফিসার রাসেল মাহমুদ ও মোতাব্বির হোসেন, কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিষদের সভাপতি মির্জা হালিম এবং উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারী সোহাগ সরকার।
অন্যদিকে, শাস্তিপ্রাপ্ত ৪৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৯ জন ছাত্রী এবং ৩৬ জন ছাত্র। এদের অধিকাংশই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক কাওসার আহমেদ স্বাধীন ও যুগ্ম আহ্বায়ক পলাশকে পাঁচ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
প্রিয়া সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম ইমন এবং ফিশারিজ বিভাগের শিক্ষার্থী শাহরিনসহ মোট ৭ জনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ ছাড়া ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসির আরাফাত সৌরভ, মোকাররম হোসেন, মোশারফ হোসেন, আভিমান সরকার, সেবক দাস, মাসুদ রানা, ইতিসার সানি ইমন, ছাত্র হল শাখার সাধারণ সম্পাদক সকলাইন এবং ছাত্রী হল শাখার সভাপতি ঐশীসহ যেসব শিক্ষার্থী ইতিমধ্যে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন, তাদের সনদপত্র স্থগিত করা হয়েছে।
অপেক্ষাকৃত কম অপরাধে জড়িত ২৪ জন শিক্ষার্থীকে হল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ: ‘আইন না মেনে সাজা’
শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো বৈধ প্রক্রিয়া ছাড়াই তাদের সাজা দিয়েছে। তাদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বিধি অনুযায়ী সঠিক তদন্ত ও আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এক শিক্ষার্থী বলেন, “এটা পরিষ্কার অন্যায়। অনেককে প্রমাণ ছাড়াই সাজা দেওয়া হয়েছে। আমাদের কোনো বক্তব্য শোনার সুযোগই দেওয়া হয়নি।”
আরেক ভুক্তভোগীর ভাষ্য, “এভাবে সাজা দিয়ে আন্দোলন দমন করার চেষ্টা চলছে। আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার করা হচ্ছে।”
প্রশাসনের বক্তব্য
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. নুর হোসেন চৌধুরী দাবি করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আচরণ ও শৃঙ্খলা বিধি, ২০১৯ অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।