বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর যশোরের শার্শা উপজেলার বেনাপোল দিয়ে ভারত থেকে পাঁচটি চালানে মোট ১২৬০ মেট্রিক টন চাল আমদানি করা হয়েছে। এই আমদানি প্রক্রিয়া দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের দাম স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হলেও, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে চলমান বিতর্ক এবং ষড়যন্ত্রের অভিযোগের পটভূমিতে এই আমদানি বিষয়টি নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
বেনাপোল বন্দরের পরিচালক শামীম হোসেন রবিবার (৩১ আগস্ট) সকাল ১০টায় এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, গত বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) ৯টি ট্রাকে ৩১৫ মেট্রিক টন, রবিবার (২৪ আগস্ট) ৬টি ট্রাকে ২১০ মেট্রিক টন, বুধবার (২৭ আগস্ট) দুটি চালানে ১২টি ট্রাকে ৪২০ মেট্রিক টন, বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) ৩টি ট্রাকে ১০৫ মেট্রিক টন এবং শনিবার (৩০ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ৬টি ট্রাকে ২১০ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। এই পাঁচটি চালানে মোট ১২৬০ মেট্রিক টন চাল বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
আমদানিকারকদের মতে, দেশের বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং সরবরাহ স্থিতিশীল করতে সরকার ভারত থেকে বড় আকারে চাল আমদানি শুরু করেছে। তারা বলছেন, “এই আমদানির ফলে বাজারে চালের দাম কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে, যা সাধারণ মানুষের জন্য স্বস্তির কারণ হবে।” তবে, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে উত্থাপিত বিভিন্ন ষড়যন্ত্র তত্ত্ব এবং রাজনৈতিক অভিযোগের প্রেক্ষাপটে এই আমদানি কিছু প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
দেশের একটি বড় অংশের মানুষ এবং রাজনৈতিক মহল ভারতের প্রভাব এবং হস্তক্ষেপকে দেশের বিভিন্ন সমস্যার জন্য দায়ী করলেও, বাণিজ্যিক সম্পর্ক অটুট রয়েছে, যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রয়োজনীয়তা এবং বাস্তবতার প্রতিফলন। স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. আলমগীর হোসেন বলেন, “চালের দাম গত কয়েক মাসে বেশ উর্ধ্বমুখী ছিল। ভারত থেকে এই আমদানি বাজারে সরবরাহ বাড়াবে এবং দাম কিছুটা কমতে পারে। তবে, আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় উৎপাদন বাড়ানোর উপর জোর দেওয়া উচিত।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক অব্যাহত থাকলেও, রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে উত্তেজনা এই সম্পর্কের গতিশীলতাকে প্রভাবিত করছে। এই পটভূমিতে ভারত থেকে চাল আমদানি অব্যাহত থাকায় জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বেনাপোল বন্দরের একজন কর্মকর্তা জানান, আমদানি প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং আগামী দিনগুলোতে আরও চাল আমদানির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, তিনি বলেন, “আমদানি নির্ভরতা কমাতে হলে কৃষি খাতে বিনিয়োগ এবং উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।”