হাতে-পায়ে ব্যান্ডেজ অবস্থায় মাথায় টোপর পরে মানিকগঞ্জ শহরের আফরোজা বেগম জেনারেল হাসপাতালে বেডে শুয়ে আছেন নতুন বর। আর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পান পাতায় মুখ ঢেকে তাকে প্রদক্ষিণ করছেন নববধূ। পুরোহিতের মন্ত্র উচ্চারণের সঙ্গে মালাবদল আর উলুধ্বনির মধ্য দিয়ে হাসপাতালেই হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা।
ঢাকার অদূরে মানিকগঞ্জ জেলা শহরের চানমিয়া লেনের বাসিন্দা অরবিন্দ সাহার ছেলে আনন্দ সাহা এবং একই জেলার ঘিওরের বানিয়াজুড়ি এলাকার বাসিন্দা স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী অমৃতা সরকারের হাসপাতালে বিয়ের এই ঘটনা ব্যাপক আলোড়ন ফেলেছে।
জানা গেছে, বছরখানেক আগে পরিচয় আনন্দ সাহা ও অমরিতা সরকারের। ধীরে ধীরে তাঁদের মধ্যে গড়ে ওঠে ভালোবাসার সম্পর্ক। দুই পরিবারের সম্মতিতে তাঁদের বিয়ের দিনক্ষণও নির্ধারিত হয় এ বছরের ১৫ ডিসেম্বর। তবে গত ৭ আগস্ট রাতে ঢাকা থেকে মোটরসাইকেলে মানিকগঞ্জে ফেরার পথে ট্রাকের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন আনন্দ।
তাঁর দুই হাত ও একটি পা ভেঙে যায়, কোমরে লাগে প্রচণ্ড আঘাত। এখনো তিনি বিছানা থেকে উঠতে পারেন না; চলাফেরাতেও পুরোপুরি অন্যের ওপর নির্ভরশীল।
প্রিয়জনের এমন সংকটময় সময়ে পাশে থাকার সিদ্ধান্ত নেন অমরিতা। তাই দুই পরিবারের আলোচনায় বিয়ের আয়োজন এগিয়ে আনা হয়।
গত বৃহস্পতিবার রাতে মানিকগঞ্জ শহরের আফরোজা বেগম জেনারেল হাসপাতালের হলরুমেই সম্পন্ন হয় তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা।
আফরোজা বেগম জেনারেল হাসপাতালের মেডিক্যাল অ্যান্ড ইউনিট প্রধান সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘রোগীর নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনেই হাসপাতালে বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। অল্পসংখ্যক লোকজন উপস্থিত ছিলেন। এতে অন্য কোনো রোগীর স্বাস্থ্যসেবায় কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি।’