কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রয়াত সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীনকে শেষ শ্রদ্ধা জানালেন শিল্পী, সাংস্কৃতিক কর্মীসহ নানা শ্রেণি–পেশার মানুষ। রোববার দুপুর ১২টার দিকে শ্রদ্ধা নিবেদনে লালনসম্রাজ্ঞীর মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়। বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে শহীদ মিনারে তাকে শ্রদ্ধা জানান সর্বস্তরের মানুষ।
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে তার জানাজা হয়। এরপর ফরিদা পারভীনের মরদেহ নিয়ে পরিবারের সদস্যরা নিয়ে যান কুষ্টিয়ায়। সেখানকার পৌর কবরস্থানে বাদ ইশা মা–বাবার কবরের পাশে দাফন করা হয় বরেণ্য এই লোকসংগীত শিল্পীকে।
আজ শহীদ মিনারে ফরিদা পারভীনের শেষশ্রদ্ধার আয়োজন করে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সংস্থা (জাসাস)।
শিল্পীকে শ্রদ্ধা জানান চিত্রনায়ক উজ্জ্বল। দেশের বাইরে থাকলেও ভিডিও কলে অংশ নেন সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা; ফরিদা পারভীনের প্রতি শেষশ্রদ্ধা জানান তিনি।
এছাড়া বাংলাদেশ বেতার, জাতীয় জাদুঘর, কবি নজরুল ইনস্টিটিউট, বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদ, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, লালনের গানের বাণী ও সুরকে জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে ফরিদা পারভীনের অবদান সর্বজনস্বীকৃত। দেশের পাশাপাশি বিশ্বদরবারেও তিনি লালন সাঁইয়ের বাণী ও সুরের প্রচারে কাজ করে গেছেন।
জাপান, সুইডেন, ডেনমার্ক, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বহু দেশে লালনসংগীত পরিবেশন করেছেন। লালনসংগীতে অবদানের জন্য ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশ সরকারের একুশে পদক পান ফরিদা পারভীন।
১৯৯৩ সালে ‘অন্ধ প্রেম’ সিনেমার ‘নিন্দার কাঁটা’ গানটির জন্য শ্রেষ্ঠ সংগীতশিল্পী (নারী) হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। ২০০৮ সালে তিনি জাপানের ফুকুওয়াকা পুরস্কার লাভ করেন।
লালনশিল্পী হিসেবে সুপরিচিত হলেও, তাঁর কণ্ঠে বেশ কিছু আধুনিক ও দেশের গান জনপ্রিয় হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘তোমরা ভুলে গেছ মল্লিকাদির নাম’, ‘এই পদ্মা এই মেঘনা’ ইত্যাদি।