ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রকাশ্য মবের হুমকির মধ্যেও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে একাধিক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ আয়োজন করেছেন। রাজধানীর হাজারীবাগ বেড়িবাঁধ এবং গুলিস্তান এলাকায় অনুষ্ঠিত দুটি মিছিলে বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী অংশ নেন।
বিক্ষোভকারীরা সমস্বরে স্লোগান দেন— “শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে।” তারা বর্তমান ড. ইউনুস নেতৃত্বাধীন সরকারকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে বিভিন্ন স্লোগান তোলেন।
স্থানীয় জনগণ ও পথচারীদের মধ্যে বিক্ষোভকারীদের প্রতি স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন লক্ষ্য করা গেছে। গুলিস্তানে দেখা যায় বহু মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে অংশগ্রহণকারীদের সমর্থন জানান। হাজারীবাগ বেড়িবাঁধে একই রকম দৃশ্য দেখা যায়। মিছিলকারি নেতাকর্মীদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের ঘোষিত ৫ হাজার টাকার পুরস্কারের প্রতি জনমনে কোনো আগ্রহ দেখা যায়নি।
বিক্ষোভ মিছিলের একজন আহ্বায়ক বিডি ডাইজেস্ট-কে বলেন, “আমাদের এই বিক্ষোভ সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। আমরা জনগণের ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করছি।”
মিছিলের পর পুলিশ ১১ জন নিরীহ পথচারীকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন: জিহাদ হোসেন (২৪), দিপু খা (২৮), ইরান হোসেন (১৯), হৃদয় হোসেন (১৮), মুস্তাফিজুর রহিম (২৬), সাব্বির হোসেন (১৮), বিল্লাল হোসেন (১৯), মিলন মৃধা (২৩), নুর ইসলাম (৫৬), আমির হোসেন (১৮) ও বাদশা মিয়া (৫৫)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাান, মিছিলে অংশ নেওয়াদের অধিকাংশই ছিলেন তরুণ। বেশ কিছু বয়স্ক মানুষকেও মিছিলে অংশ নিতে দেখা যায়। এ সময় তারা ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘শেখ হাসিনা আসবে, রাজপথ কাঁপবে’, ‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশে হাসবে’- এ রকম বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। ঘটনার পর পরই থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযান চালায়।
গণগ্রেপ্তার প্রসঙ্গে হাজারীবাগ থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল চলাকালে পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে কারা মিছিলে অংশ নিয়েছে আর কারা আশপাশ থেকে ধরা পড়েছে- তা যাচাই-বাছাই চলছে। যাচাই শেষে যার বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, এ ধরনের ঝটিকা মিছিল বা অবৈধ কর্মকাণ্ড ঠেকাতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, পুলিশি এই অভিযান শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে ব্যাহত করে এবং সাধারণ পথচারিদের উপর গণগ্রেপ্তারের মাধ্যমে আইনের শাসনকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
তারা অভিযোগ করেন, এমন গ্রেপ্তারের পর প্রায়শই পুলিশ গ্রেপ্তারকৃতদের পরিবারের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে অর্থ নেয় অথবা ভুয়া মামলায় তাদের কারাগারে প্রেরণ করে।