রাইটস অ্যান্ড রিস্কস অ্যানালাইসিস গ্রুপ (আরআরএজি)-এর পরিচালক সুহাস চক্রবর্তী জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের (UNHRC) ৬০তম অধিবেশনে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের ওপর সংঘটিত বর্ণবাদী সহিংসতার বিষয়টি উত্থাপন করেছেন।
এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ২৮শে সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ির গুইমারা গ্রামে সেনাবাহিনীর গুলিতে তিনজন আদিবাসী নিহত হন। নিহতদের পরিবারের সদস্যরা হুমকির কারণে মামলা করতে সাহস পাচ্ছেন না।
আরও বলা হয়, গত বছর ১৯-২০শে সেপ্টেম্বর অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের সহায়তায় সেনাবাহিনী চারজন আদিবাসীকে হত্যা করে, ৭৫ জনকে আহত করে এবং শত শত বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। এ ঘটনায় ইউনূস সরকার তদন্তের কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি, ফলে দায়মুক্তির সংস্কৃতি বজায় রয়েছে।
সুহাস চক্রবর্তী জানান, “সংবিধান সংস্কার কমিশনে একজনও আদিবাসী বা সংখ্যালঘুকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তাদের প্রতিবেদনে আদিবাসী বা সংখ্যালঘুদের উল্লেখও করা হয়নি, যা কার্যত আইনগতভাবে তাদের অস্তিত্ব অস্বীকার করে।”
তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের ১২ই জানুয়ারি বাংলাদেশ জাতীয় পাঠ্যক্রম বোর্ড উচ্চমাধ্যমিক ব্যাকরণ বইয়ের পেছনের প্রচ্ছদ থেকে “আদিবাসী” শব্দটি মুছে ফেলে। এরপর ১৫ই জানুয়ারি ঢাকায় এ ঘটনার প্রতিবাদে আদিবাসী শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করলে তারা ইসলামি মৌলবাদীদের হামলার শিকার হন।
চক্রবর্তী জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদকে আহ্বান জানান, বাংলাদেশে আদিবাসী ও সংখ্যালঘুদের ওপর এই ধরনের বর্ণবাদী বৈষম্যের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে।
এর আগে, একই অধিবেশনে ২৬শে সেপ্টেম্বর গ্লোবাল হিউম্যান রাইটস ডিফেন্স (জিএইচআরডি)-এর মানবাধিকার কর্মকর্তা শার্লট জেহেরও বাংলাদেশের জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সংকটময় পরিস্থিতি তুলে ধরে জরুরি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানান।
তিনি জানান, গত এক বছরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ২,৪০০-এরও বেশি সহিংস ঘটনার রেকর্ড পাওয়া গেছে। এর মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের পাশাপাশি সারা দেশের হিন্দু ও খ্রিস্টান সম্প্রদায় ছিল প্রধান টার্গেট।