ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আ্যলামনাই ইন দ্য ইউকের সদস্যদের পর্যটন শহর আগাদির বেড়ানো
লন্ডন : যুক্তরাজ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্তন ছাত্র সংগঠন ঢাকা ইউনিভার্সিটি আ্যলামনাই ইন দ্য ইউকের সদস্যের একটি দল মরক্কোর একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন শহর আগাদিরে তিন দিনের এক চমৎকার ভ্রমণ উপভোগ করেছেন।
আগাদির উত্তর আফ্রিকার রাষ্ট্র মরক্কোর একটি প্রধান নগরী। এটি এটলাস পর্বতমালার পাদদেশে, আটলান্টিক মহাসাগরের তীরে সুস নদীর মোহনার ঠিক উত্তরে অবস্থিত।
গত ১১ থেকে ১৪ অক্টোবর সংগঠনের প্রায় ৪০ জনের একটি দল পরিবারসহ মনোরম পরিবেশে সুন্দর অরগানা হোটেলে অবস্থান করে সবাই আনন্দে মেতে ছিলেন। সেই সঙ্গে প্রতিদিন তিন বেলা সুস্বাদু খাবার উপভোগ করেছেন। রাতে হোটেল লবিতে জমেছিল মজার আড্ডা। গান, নাচ, কৌতুক, আবৃত্তি কোন কিছু বাদ যায়নি। প্রখ্যাত গানের শিল্পী লুসি রহমান যেখানে সহযাত্রী সেখানে গানের আড্ডাতো জমবেই।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন ইকোর নেতৃত্বে সংগঠনের সদস্য শাহাগীর বখত ফারুক, হাবিব রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা গৌস সুলতান, আবুল কালাম, সকলের মধ্যমণি এম কিউ হাসান, করিৎকর্মা এরিনা সিদ্দিকী, মিজানুর রহমান, মারুফ চোধুরী, মাহফুজা তালুকদারসহ আগাদির গমনের যাত্রীরা নির্দিষ্ট সময়ে গেটউইক এয়ারপোর্টে সমবেত হন। তার আগে এই ট্রিপ কিভাবে আনন্দদায়ক করা যায় তা নিয়ে গত তিন মাস ধরে চলেছে বিভিন্ন পরিকল্পনা।
এই ভ্রমণটি সদস্যদের মধ্যে আন্তরিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার, একে অপরের সঙ্গে মেলামেশার এবং আগাদির শহরের সৌন্দর্য একসাথে উপভোগ করার দারুণ সুযোগ এনে দেয়। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার ফ্লাইটে আগাদির আল-মাসিরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (AGA)-এ পৌঁছানোর পর, হোটেলের ব্যবস্থাপনায় একটি বাসে করে সবাইকে হোটেলে নেওয়া হয়। পৌঁছানোর পর সদস্যদের কক্ষ বরাদ্দ করা হয় এবং হোটেলের রেস্তোরাঁয় পরিবেশিত সুস্বাদু মধ্যাহ্নভোজ উপভোগ করেন আগতরা। মধ্যাহ্নভোজের পরে সবাই যাত্রাপথের ক্লান্তি ভুলে আড্ডায় মেতে উঠেন।
পরদিন সকালে নাস্তার পর সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্তন ছাত্র সংগঠনের ব্যানারসহ হোটেলের সুইমিং পুলের পাশে এক স্মরণীয় গ্রুপ ছবি তোলেন। এরপর বেশিরভাগ সদস্য অ্যাটলান্টিক মহাসাগরের সমুদ্র সৈকতে যান, সেখানে সাঁতার এবং আনন্দ-উল্লাসে সময় কাটে। বিকেলে শুরু হয় শহর ভ্রমণ, যার মধ্যে ছিল রোমাঞ্চকর ক্যাবল কার রাইড এবং উটের পিঠে চড়া। যেগুলো থেকে আগাদিরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, আটলান্টিক উপকূল ও সবুজ প্রান্তরের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ কবেছে সবাই।
দিনশেষে অনেকেই বিখ্যাত শহুরে বাজারে কেনাকাটা করেন এবং সন্ধ্যায় হোটেলে ফিরে রাতের খাবারের পর একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে মতবিনিময় করা হয়। একই দিন একটি ছোট দল সূর্যাস্তের সময় বোট ট্রিপ এবং উট ভ্রমণে অংশ নেয় — যা ছিল এক অনন্য, রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা।
পরদিন সদস্যরা দুটি দলে বিভক্ত হন —
• এক দল যায় মনোরম ও ঐতিহাসিক প্যারাডাইস ভ্যালি ভ্রমণে।
• অন্য দল অংশ নেয় অ্যাটলান্টিক কোস্ট বাগি ট্রিপ অ্যাডভেঞ্চারে, যার নেতৃত্ব দেন মাফুজা তালুকদার এবং সংগঠনের উপদেষ্টা শাহাগীর বখত ফারুক।
এই রোমাঞ্চকর যাত্রাকে আরও স্মরণীয় করে তোলে সুপ্রভা, কনক, মিজান, এম কিউ হাসান এবং সুপ্রভার ছেলে আলমীরসহ অন্যান্য সদস্যদের প্রাণবন্ত উপস্থিতি। ভ্রমণের সময় দুটি মনোরম বিরতি ছিল একটি অ্যাটলান্টিক মহাসাগরের তীরে, আরেকটি একটি আরামদায়ক চা ঘরে, যেখানে স্থানীয় সঙ্গীত দলের সুরেলা পরিবেশনা মুহূর্তটিকে আরও মায়াময় করে তোলে।

এটি ছিল সত্যিই এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা — হাসি, আনন্দ, বন্ধুত্ব ও মরক্কোর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা এক যাত্রা, যা অংশগ্রহণকারীদের মনে দীর্ঘদিন ধরে গেঁথে থাকবে।
আগাদির শহরটি ১৯১১ সালে ফ্রান্স ও জার্মানির মধ্যকার একটি সঙ্কটের কেন্দ্রস্থল ছিল, যা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আভাস দেয়। ১৯৬০ সালে একটি ভূমিকম্পে শহরটি বিধস্ত হয়। এরপর আবশ্যকীয় ভূমিকম্পরোধী আদর্শমান মেনে শহরটিকে পুনঃনির্মান করা হয়। বর্তমানে আগাদির শহরটি মরক্কোর বৃহত্তর সমুদ্রতীরবর্তী অবকাশযাপন কেন্দ্র। এখানে সারা বছর জুড়ে বহু পর্যটক বেড়াতে আসে। সুন্দর শহরটিতে ভ্রমণ করে ঢাকা ইউনিভার্সিটি আ্যলামনাই ইন দ্য ইউকের সদস্যরাও অনেক আনন্দিত। অনেকেই বলেছেন, এমন উপভোগ্য ভ্রমনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকবো।সংবাদ বিজ্ঞপ্তি