আবরার শাহরিয়ার
এটা চট্টগ্রাম, ভাষা ও সংস্কৃতির মত চট্টগ্রামের রক্তের ভাষা ও চিন্তার সংস্কৃতিটাও কিন্তু ভিন্ন। এ কারণে এখান থেকেই শুরু হয় ব্রিটিশ তাড়ানোর সশস্ত্র বিপ্লব— জন্ম নেয় সূর্যসেন, প্রীতিলতা, কল্পনা। বায়ান্নর সবচে প্রেরণাদায়ক কবিতা ও গান ‘ কাঁদতে আসি নি, ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি ‘ রচিত হয় চট্টগ্রামে — মাহবুব-উল-চৌধুরীর কলমে। একাত্তরে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণার তারবার্তা পাঠান চট্টগ্রামে, কামানের চেয়ে সুতীব্র গর্জে ওঠে কালুরঘাটের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র। সাগর পাড়ের চির বিস্ময় ও বিদ্রোহী রণবীর যোদ্ধাদের অঞ্চল এই চট্টগ্রাম। দরিয়ার ঝড়জলোচ্ছ্বাস সিনা দিয়ে ঠেকিয়ে রাখার জিগদার মানুষের ভূমি চট্টগ্রাম।
সেই চট্টগ্রামেরই ‘দোস্ত বিল্ডিং, আওয়ামী লীগ অফিস’ হল আজকের স্বাধীন বাঙালি জাতিসত্তার সার্বভৌম অস্তিত্ব বিনির্মানের অন্যতম আঁতুড়ঘর। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার মূল আর্সেনাল। এখন সেই দুর্ভেদ্য দুর্গ, আওয়ামী লীগের সম্ভ্রম চট্টলার পার্টি অফিস আক্রমণ করে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ভাঙচুর ও অবমাননা করার ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে কতিপয় ছাপড়ি সন্ত্রাসী। ভুলের ক্ষমা আছে, অপরাধের ক্ষমা নাই। এই ছাপড়ি সন্ত্রাসীদের বিচার দেশের প্রচলিত আদালতে, সচল আইনে হবে না — হবে চট্টগ্রামের স্বকীয় পদ্ধতিতে। সম্ভ্রমে কালেমা, সম্মানে আঘাত ও প্রাণের মর্মমূলে টান পড়লে চট্টগ্রাম কিভাবে জবাব দেয় তার একটা ধারণা পাওয়া যেতে পারে অধিকার ও অস্তিত্বের প্রশ্নে চট্টগ্রামের মানুষের নাছোড় লড়াই ও হার্ডকোর প্রতিরোধের ইতিহাস জানলে। সুতরাং শীঘ্রই ইতিহাসের আবারও পুনরাবৃত্তি হবে ওসব উদ্ধত হাতের আখেরি শক্তিপরীক্ষার মাধ্যমে।
