’ঢাকা, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫: বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে শরিফ ওসমান হাদিকে সমাধিস্থ করার সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ ও ক্ষোভ জানিয়েছেন কবির পরিবারের সদস্যরা। তারা এতে জাতীয় কবিকে অসম্মান করা হয়েছে বলে মনে করেন এবং এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন।
কবির নাতনি সোনালি কাজী এবং নাতি স্বরূপ কাজী বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অনৈতিক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ প্রাঙ্গণের কেন্দ্রীয় কবরস্থানে নিয়ম অনুসারে বিশেষ কয়েকজন ব্যক্তিকেই সমাধিস্থ করা হয়। দেশে এত জায়গা থাকতে নজরুলের সমাধির ঠিক পাশে হাদিকে সমাধিস্থ করার সিদ্ধান্তের নেপথ্যে স্পষ্ট রাজনীতি রয়েছে বলে তারা মনে করেন।
সোনালি কাজী বলেন, “আমাদের প্রাণের কবি বাংলাদেশে শেষ জীবন কাটিয়েছেন। এত দিন বাংলাদেশে আমরাও (পরিবারের অন্যেরা) ভালো ছিলাম। কিন্তু এখন যা হচ্ছে…”।
তিনি আরও বলেন, “ওই কবরস্থানে সকলকে সমাধিস্থ করা হয় না। কিন্তু ছায়ানট ভাংচুর করা, রবীন্দ্রনাথের বই পোড়ানো—এমন উগ্রবাদী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের প্রিয় নেতা হাদিকে সমাধিস্থ করা হলো কবির সমাধির পাশে! এটা হল কেন? নজরুল যেখানে সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে গিয়েছেন, জাতের নামে বজ্জাতির কথা বলেছেন, তাঁর সমাধির পাশে এমন একজনকে সমাধিস্থ করা হলো সরকারেরই নির্দেশে!”
কবির পরিবারের আশঙ্কা, আগামী দিনে হয়তো নজরুলের সমাধিও সেখানে নিরাপদ থাকবে না। সোনালি কাজী বলেন, “পৃথিবীতে ভালো মানুষের জায়গা কি হারিয়ে যাচ্ছে? রবীন্দ্রনাথ-নজরুলকে কি পরবর্তী প্রজন্ম অস্বীকার করবে? আমাদের আর্জি, নজরুলকে যেন অসম্মান করা না হয়।
তবে এই সরকারের (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) দায়বদ্ধতা নেই। আমরা ভীষণ মনোকষ্টে আছি। আমরা মর্মাহত।”
হাদির জানাজায় হাজারো মানুষের উপস্থিতি এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের অংশগ্রহণের মধ্যেই এই সমাধিস্থলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা কবির পরিবারের কাছে অগ্রহণযোগ্য। তারা মনে করছেন, এটি কেবল রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নয়, বরং কবির উত্তরাধিকার ও সম্প্রীতির বার্তাকে চ্যালেঞ্জ করার প্রয়াস।
