কবির য়াহমদ
৫ই আগস্টের ক্ষমতার পরিবর্তন নিয়ে আপনারা যারা নিজেদের রাজনৈতিক বিজয় ভাবছেন, তারা খেয়াল করে দেখুন–একটা আত্মমর্যাদাশীল দেশকে আপনারা কোথায় নিয়ে গেছেন? আগে বাংলাদেশ নাম সারাবিশ্বে মর্যাদার সঙ্গে উচ্চারিত হতো। আর এখন বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বিশ্বনেতারা একজন অন্যজনকে দেখভাল করার দায়িত্ব দেন।
আমেরিকার ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের বিষয়টা নিয়ে কথা বলতে দায়িত্ব দিচ্ছেন ভারতের নরেন্দ্র মোদিকে।
আমাদের অন্তর্বর্তীপ্রধান সারাবিশ্বে যাচ্ছেন আর একটা বই ফেরি করে বেড়াচ্ছেন। বইয়ে প্রদর্শিত ছবি দেখিয়ে বলছেন, দেখুন ওরা আমাদের কত সর্বনাশ করেছে। হাসিমুখে দেখাচ্ছেন মৃতদের ছবি ও সংবাদ।
বৈশ্বিক অনেকগুলো পুরস্কার জিতে কিছু টাকা আর কিছু পরিচিতি কামিয়েছেন তিনি। ক্ষমতা গ্রহণ করে হারিয়েছেন ব্যক্তিত্ব। এর প্রভাব পড়েছে দেশের ওপর। আজ বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন। স্রেফ সরকারের ব্যর্থতা ও আত্মমর্যাদাহীনতায় আমরা এখন বৈশ্বিক নেতাদের আলোচনার টেবিলে একজন অন্যজনকে দায়িত্ব দেওয়ার পর্যায়ে পৌঁছে গেছি।
কী লজ্জা। কী লজ্জা! নেতৃত্বের ব্যক্তিত্বহীনতায় হয়ে গেছে দেশের সর্বনাশ।
তারাপদ রায় লিখেছিলেন:
আমরা যে গাছটিকে কৃষ্ণচূড়া ভেবেছিলাম,
যার উদ্দেশে ধ্রুপদী বিন্যাসে কয়েক অনুচ্ছেদ
প্রশস্তি লিখেছিলাম
গতকাল বলাইবাবু বললেন, ‘ঐটি বানরলাঠি গাছ।’
অ্যালসেশিয়ান ভেবে যে সারমেয় শাবকটিকে
আমরা তিন মাস বকলস পরিয়ে মাংস খাওয়ালাম
ক্রমশ তার খেঁকিভাব প্রকট হয়ে উঠছে।
আমরা টের পাইনি
আমাদের ঝরনা কলম কবে ডট পেন হয়ে গেছে
আমাদের বড়বাবু কবে হেড অ্যাসিস্ট্যান্ট হয়ে গেছেন
আমাদের বাবা কবে বাপি হয়ে গেছেন।
আমরা বুঝতে পারিনি
আমাদের সর্বনাশ হয়ে গেছে।