আলী আকবর তাবাই
বাঙালিকে সংস্কৃতি জ্ঞান দিতে যেয়ে আপনি ‘ভ্যালেন্টান ডে’-কে ‘তামাশার ডে’ আখ্যায়িত করেছেন এবং দিবসটি বর্জন করতে বলেছেন! ভালবাসা মানুষ নানাভাবে প্রকাশ করতে পারে- কবিতা, গানে, উপন্যাসে। তাতে অন্যের ক্ষতি না হলে সমস্যা কোথায়? ‘ভালবাসা দিবস’ হঠাৎ আপনার মত নারীবাদীকে বিব্রত করলো কেন? মৌলবাদীদের খুশি করাই কী আপনার লক্ষ্য?
২০১৭ সালে আপনার বহুরূপী স্বামীর অপহরণ নাটকের কথা কী মনে পড়ে? সেই নাটকে পাত্র পাত্রীর ভেতর আপনিও একজন ছিলেন! নাটকের মূল চরিত্র ভুক্তভোগী অর্চনা রাণীর পরিণতির কথা আপনি ভুলে গেলেও বাঙালি কিন্তু ভুলেনি।
আসুন ২০১৭ সাল থেকে একটু ঘুরে আসি। সে বছর ৩ জুলাই ভোরে শ্যামলীর বাসা থেকে ফরহাদ মজহার বের হলেন। এরপর গুজব ছড়ানো হলো ফরহাদ মজহারকে পাওয়া যাচ্ছে না। আপনি আদাবর থানায় একটি অপহরণের মামলা ঠুকে দিলেন। পরবর্তীতে দেখা গেল এক রাতে খুলনা থেকে ঢাকায় ফেরার পথে একটি বাস থেকে পুলিশ আপনার স্বামীকে উদ্ধার করেছে। তখন থেকে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসেতে শুরু করলো।
খুলনা নিউমার্কেটের সিসিটিভিতে দেখা গেল আপনার স্বামী স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আরও দেখা যায় একটি দোকানে গিয়ে তিনি টাকা গুণে গুণে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কোথাও টাকাও পাঠাচ্ছেন।
পরে ১৩ জুলাই সংবাদ সম্মেলন ডেকে পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হক বলেন, ‘অর্চনা নামে এক নারীর সঙ্গে তার (ফরহাদ মজহার) অবৈধ সম্পর্ক ছিল। একবার তিনি গর্ভপাতও করান ওই নারীকে। পরে আবারও ওই নারী গর্ভবতী হন। আর ওই নারীকে টাকা দিতেই ওই ভোরে ফরহাদ বাসা থেকে বের হয়েছিলেন এবং স্ত্রী ফরিদা আখতারের কাছ থেকে টাকা নিতে চেয়েছিলেন তিনি।’
ফরহাদ মজহারের অপহরণের ঘটনার মামলায় সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দিও দেন অর্চনা রানী। তাতে তিনি উল্লেখ করেন, অপহরণের দিন তার সঙ্গে অন্তত ছয়বার মোবাইল ফোনে কথা বলেছেন ফরহাদ মজহার। প্রায় দশ বছর আগে ফরহাদ মজহারের এনজিও উবিনীগে চাকরি করতেন তিনি। চাকরি করার সুবাদে সম্পর্ক গড়ায় পরকীয়ায়।
পুলিশ জানায়, কথিত অপহরণের দিন ফরহাদ মজহার তার স্ত্রীর সঙ্গে ১০ বার এবং অর্চনার সঙ্গে ছয় বার ফোনে কথা বলেন এবং সন্ধ্যায় খুলনার একটি দোকান থেকে তাকে(অর্চনাকে) ১৫ হাজার টাকাও পাঠান। স্ত্রীর সঙ্গে ফরহাদ মজহারের কথোপকথনের একটি ক্লিপ তখন প্রকাশও হয়েছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
আপনি আপনার স্বামীর লাম্পট্য আড়াল করতে যেয়ে অপহরণের মিথ্যা মামলা সাজিয়েছিলেন। মিথ্যা মামলা সাজানোর অভিযোগে পুলিশও আপনার ও আপনার স্বামী ফরহাদ মজহার বিরুদ্ধে ৭ ডিসেম্বর (২০১৭) ২০১১ ও ১০৯ ধারায় মামলা করেছিল।
নিচের ছবিতে দেখা যাচ্ছে – উদ্ধারের পর পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। নাটকের যবনিকার পর ফরিদা আপা লজ্জায় মাথানত করে আছেন এবং মেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।