টেক্সাসে বিশাল এআই কারখানা নির্মাণ’সহ আগামী চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রে ৫০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে অ্যাপল।
গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ও অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী টিম কুকের মধ্যে বৈঠকের পর এমন ঘোষণা এলো বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
ধারণা করা হচ্ছে, চীন থেকে আমদানির ওপর শুল্ক আরোপের ফলে মারাত্মকভাবে ক্ষতির মুখে পড়তে পারে অ্যাপল। কারণ, কোম্পানিটির বেশিরভাগ ডিভাইস তৈরি হয় চীনে।
অ্যাপল বলেছে, এ বিনিয়োগের কারণে টেক্সাসে কারখানা তৈরির পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে গবেষণা ও উন্নয়নে ২০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানও তৈরি হবে।
৫০ হাজার কোটি ডলারের প্রত্যাশিত ব্যয়ের মধ্যে মার্কিন সরবরাহকারীদের কাছ থেকে কেনাকাটা থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রে টেলিভিশন অনুষ্ঠান ও সিনেমার চিত্রগ্রহণ পর্যন্ত সবকিছুই অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
আইফোনের জন্য ডিসপ্লে তৈরি করা ‘কর্নিং’য়ের মতো কোম্পানি’সহ যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ খাতে কত টাকা ব্যয় করার পরিকল্পনা করছে তা জানায়নি আইফোন নির্মাতা কোম্পানিটি।
এর আগে প্রথম ট্রাম্প প্রশাসনের সময় অর্থাৎ ২০১৮ সালেও নিজেদের মার্কিন ব্যয় পরিকল্পনা সম্পর্কে একইরকম ঘোষণা দিয়েছিল অ্যাপল। ওই সময় কোম্পানিটি বলেছিল, আগামী পাঁচ বছরে মার্কিন অর্থনীতিতে ৩৫ হাজার কোটি ডলার অবদান রাখবে তারা।
এ বিনিয়োগের খবরে প্রাক-বাজার লেনদেনে শেয়ারের দাম কিছুটা কমেছে অ্যাপলের।
এদিকে, নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশালে’ এক পোস্টে অ্যাপল ও কুককে ধন্যবাদ জানিয়ে ট্রাম্প বলেছেন, অ্যাপলের এই পদক্ষেপ তার প্রশাসনের প্রতি কোম্পানিটির আস্থারই প্রতিফলন।
অ্যাপলের বেশিরভাগ ভোক্তা পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে একাট্টা হলেও কোম্পানিটির অনেক উপাদান এখনও সেখানেই তৈরি হয়, যার মধ্যে রয়েছে ‘ব্রডকম’, ‘স্কাইওয়ার্কস সলিউশনস’ ও ‘কোরোভোর’-এর মতো বিভিন্ন চিপ।
অ্যাপল বলেছে, গত মাসে অ্যারিজোনায় ‘তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি’ বা টিএসএমসি’র মালিকানাধীন কারখানায় নিজস্ব ডিজাইনের চিপের উৎপাদন ব্যাপকহারে শুরু করেছে কোম্পানিটি।
টিএসএমসি’কে অ্যারিজোনায় নিয়ে আসা ও যুক্তরাষ্ট্রে চিপ উৎপাদন জোরদার করার জন্য নিজের প্রথম আমলে আইন প্রণয়নে সহায়তা করেছিলেন ট্রাম্প, যা পরবর্তী সময়ে চিপ আইনে পরিণত হয়েছিল, যা ছিল ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে তার গুরুত্বপূর্ণ দুটি শিল্প নীতির একটি।
সোমবার অ্যাপল বলেছে, হিউস্টনে আড়াই লাখ বর্গফুটের একটি স্থাপনা বানাতে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘হোন হাই প্রিসিশন ইন্ডাস্ট্রি’ নামে পরিচিত ফক্সকন-এর সঙ্গে কাজ করবে তারা, যেখানে নিজেদের সার্ভার একসঙ্গে করবে কোম্পানিটি। এটি বিভিন্ন ডেটা সেন্টারে কোম্পানিটির নিজস্ব এআই ‘অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স’কে শক্তি দেবে। এসব সার্ভার বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে তৈরি হচ্ছে বলে জানিয়েছে অ্যাপল।
কুপারটিনোভিত্তিক কোম্পানিটি বলেছে, নিজেদের ‘অ্যাডভান্সড ম্যানুফ্যাকচারিং ফান্ড’কে পাঁচশ কোটি ডলার থেকে বাড়িয়ে এক হাজার কোটি ডলারে করার পরিকল্পনা করছে তারা।
টিএসএমসির সঙ্গে নিজেদের চুক্তির বিষয়ে বিশদ তথ্য প্রকাশ করেনি অ্যাপল। তবে অতীতে অ্যাপলের জন্য পণ্য বা পরিষেবা সরবরাহের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরিতে অংশীদারদের সহায়তা করতে অনুদানটি ব্যবহার করেছে চিপ নির্মাতা কোম্পানিটি।
মিশিগানে একটি উৎপাদন একাডেমিও খুলবে অ্যাপল, যেখানে এর প্রকৌশলীরা যুক্তরাষ্ট্রের ইউনভার্সিটির কর্মীদের সঙ্গে, প্রকল্প পরিচালনার মতো ক্ষেত্রে ছোট ও মাঝারি আকারের বিভিন্ন উৎপাদন কোম্পানির জন্য বিনামূল্যে কোর্স অফার করবেন।
সাবস্ক্রাইব
সর্বশেষ খবরের সাথে আপডেট থাকুন।
৪ বছরে ৫০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা অ্যাপলের
Previous Articleকেনো বারবার কপালে দুঃখ জোটে!
Next Article নতুন ছাত্র সংগঠন ঘোষণার আগেই হাতাহাতি