কিয়েভের প্রতিরক্ষা শিল্পকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে যুক্তরাজ্য ইউক্রেনকে ২.২৬ বিলিয়ন পাউন্ড (২.৮৪ বিলিয়ন ডলার) ঋণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।যুদ্ধে রুশ বাহিনীকে প্রতিহত করতে সামরিক সহায়তা হিসেবে ইউক্রেনকে ওই অর্থ ঋণ হিসেবে দেবে যুক্তরাজ্য। রুশ বাহিনী ইউক্রেনে আক্রমণ করার পর রাশিয়ার যেসব সম্পদ জব্দ করা হয়, যুক্তরাজ্য সেগুলোর মুনাফা থেকে ওই ঋণ পরিশোধ করে নেবে। যুক্তরাজ্যের চ্যান্সেলর র্যাচেল রিভস এবং ইউক্রেনের অর্থমন্ত্রী সের্গেই মার্চেঙ্কোর মধ্যে একটি ভার্চুয়াল স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ঋণটি চূড়ান্ত করা হয়। ইতিমধ্যে, বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার জেলেনস্কির পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা শিল্পকে শক্তিশালী করা
ঋণের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ইউক্রেনের অভ্যন্তরে অস্ত্র উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বরাদ্দ করা হবে। রাশিয়ান বাহিনীর বিরুদ্ধে সামরিক প্রতিরোধ বজায় রেখে বহিরাগত সরবরাহকারীদের উপর নির্ভরতা হ্রাস করতে সাহায্য করবে। যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা সচিব জন হিলি এই তহবিলের গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে বলেছেন যে, ইউক্রেন ‘রাশিয়ান আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তার সম্মুখ যুদ্ধ চালিয়ে যেতে’ পারে তা নিশ্চিত করার জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সংহতির প্রদর্শন
ডাউনিং স্ট্রিটে তাদের বৈঠকের সময়, স্টারমার জেলেনস্কিকে বৃটেনের অটল সমর্থনের আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘যতদিন সময় লাগে লাগুক, আমরা আপনার এবং ইউক্রেনের সাথে আছি।’ ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা সমর্থকদের উল্লাসকে স্বাগত জানিয়ে জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেনের মানুষ খুবই খুশি যে আমাদের এমন বন্ধু আছে। এই যুদ্ধের শুরু থেকেই এত বড় সমর্থনের জন্য আমি যুক্তরাজ্যের জনগণকে ধন্যবাদ জানাই।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কূটনৈতিক উত্তেজনা
ইউক্রেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যে বৃটেনের সাথে এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হলো। মাত্র কয়েকদিন আগে হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কির সাথে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়েছিল, যেখানে ট্রাম্প রাশিয়ার সাথে শান্তি আলোচনার জন্য ইউক্রেনকে চাপ দিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। ওয়াশিংটন এবং কিয়েভের মধ্যে অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষা সম্পর্ক জোরদার করার উদ্দেশ্যে তৈরি খনিজ বাণিজ্য চুক্তিটি ট্রাম্প স্থগিত রাখার সাথে সাথে বৈঠকটি তিক্ততার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছিল। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি সহ ইউরোপীয় নেতারা ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র নীতি পরিবর্তনের উপর নির্ভর না করে ইউরোপকে তাদের নিজস্ব নিরাপত্তা নীতির উপর আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ নিতে হবে বলে জোর দিয়েছেন।
সামনে ইউরোপীয় নিরাপত্তা শীর্ষ সম্মেলন
লন্ডনে একটি গুরুত্বপূর্ণ জরুরি শীর্ষ সম্মেলনের আগে ঋণ চুক্তিটি ঘোষণা করা হলো, যেখানে ইউরোপীয় এবং কানাডিয়ান নেতারা ইউক্রেনকে সমর্থন এবং ইউরোপীয় নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য দীর্ঘমেয়াদী কৌশল নিয়ে আলোচনা করবেন। মার্কিন সহায়তার ব্যাপারে ক্রমবর্ধমান অনিশ্চয়তার মধ্যে, ইউরোপীয় দেশগুলো কিয়েভকে টেকসই সহায়তা নিশ্চিত করার জন্য স্বাধীন প্রতিরক্ষা উদ্যোগগুলো অনুসন্ধান করছে।
জেলেনস্কির সাথে দেখা করবেন রাজা চার্লস
জেলেনস্কি স্যান্ড্রিংহাম এস্টেটে রাজা চার্লসের সাথে দেখা করতে প্রস্তুত, যা ইউক্রেনের প্রতি যুক্তরাজ্যের প্রতিশ্রুতি আরও দৃঢ় করে তুলবে। রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে ইউক্রেনীয় জনগণের প্রতিরোধের ‘দৃঢ় সংকল্প এবং শক্তি’-এর প্রশংসা করেছেন রাজা। আলোচনার শুরুতে জেলেনস্কি স্টারমারকে বলেন, ‘আমি খুবই খুশি যে মহামান্য রাজা আমার সাথে সাক্ষাতের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।’ সূত্র : ইকোনোমিক টাইমস
সাবস্ক্রাইব
সর্বশেষ খবরের সাথে আপডেট থাকুন।
ইউক্রেনকে ২২৬ কোটি পাউন্ড সামরিক সহায়তা দেবে বৃটেন
Previous Articleজাপানে বয়স্ক ব্যক্তিদের যত্ন নেবে এআই রোবট
Next Article ছিনতাইকারীর কবলে অভিনেতা হারুন