।। জিয়াউল হাসান ।।
সুনসান পথ। কালো রঙের বিচিত্র গাড়ি ওই পথে চলতে হুট করেই ‘টেক অফ’ করল শূন্যে। কী, অবাক হয়েছেন! সেটাই তো স্বাভাবিক। সামনে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িকে টপকে আবারও ‘ল্যান্ড’ করল সেই পথে। ভিডিওচিত্রে দেখা এমন দৃশ্য নিছক কোনো কল্পিত ঘটনা নয়, বরং নিকট বাস্তবচিত্র।
গাড়ির এমন দুরন্তপনা দেখে সামনে আসতে পারে হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য চেম্বার অব সিক্রেটসের উড়ন্ত গাড়ির দৃশ্যপট। বইয়ের পাতায় ফোর্ড অ্যাংলিয়া দেখানো হলেও বাস্তবে এমন বর্ণনা প্রমাণ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের আলেফ অ্যারোনটিকস। ইতোমধ্যে প্রথম এমন গাড়ি ওড়ানোর পরীক্ষায় ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক সংস্থার প্রোটোটাইপ সফল হয়েছে বলে জানা গেছে।
আলেফের ব্যাটারি পরিচালিত প্রোটোটাইপের নাম আলেফ মডেল ‘জিরো আলট্রালাইট’। গাড়িটি রাস্তায় যেভাবে চলবে, ঠিক সেভাবেই প্রয়োজনে বনেট আর বুটের মধ্যে প্রপেলার সহায়তায় প্রয়োজনে যে কোনো সময়ে উড়তে পারবে ইচ্ছামতো। গাড়িটি ওড়াতে প্রয়োজন পড়বে না রানওয়ে।
দাঁড়িয়ে থেকেই প্রয়োজনে যে কোনো জায়গা থেকে শূন্যে উড়তে পারবে। ওড়ানোর পরীক্ষার বাস্তব ভিডিওচিত্র ধারণ করে এমন সাফল্যকে রাইট ব্রাদার্সের প্রথম বিমান ওড়ানোর সাফল্যের সঙ্গে তুলনা করেন আলেফ প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জিম দুখভনি।
অবশ্য কোনো রকম সম্ভাব্য দুর্ঘটনা না ঘটাতে রাস্তাঘাট জনশূন্য করে পরীক্ষা করা হয়। নিরাপত্তা ব্যবস্থার সব দিক নিশ্চিত করেই পরীক্ষা সফল হয়েছে।
২০২৬ সালে প্রাথমিকভাবে দু’জন যাত্রী বসতে পারে এমন আলেফ ‘মডেল এ’ আত্মপ্রকাশের প্রস্তুতি নিয়েছে নির্মাতারা। পূর্ণ চার্জে গাড়িটি ২০০ মাইল পথে আর ১১০ মাইল উড়তে সক্ষম বলে জানা গেছে।
উদ্যোক্তারা জানান, বিশেষ মডেলের গাড়িতে থাকবে ‘অটোপাইলট’ সুবিধা। গাড়িটির সম্ভাব্য দাম হতে পারে তিন লাখ ডলার। এরই মধ্যে গাড়িটি পেতে প্রিবুকিং করেছেন তিন হাজারের বেশি আগ্রহী। নির্মাতা সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে আলেফ মডেল ‘জেড’ সেডান গাড়ি বাজারে আনবে। সম্ভাব্য ওই গাড়ির মডেলে চারজন বসতে পারবেন। পূর্ণ চার্জে গাড়িটি পথে চলবে ৪০০ মাইল আর উড়বে ২০০ মাইল।