ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগের ঘটনায় অভিযুক্ত মোস্তফা আসিফ অর্ণবকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া তাঁকে চাকরিতে বহাল তবিয়তে রাখার চেষ্টা করা হলে তারা অবিলম্বে সকল ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করবে বলেও জানায়। এদিকে এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, গত বুধবার শাহবাগ থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে হেনস্তা করেছে মোস্তফা আসিফ–এমন অভিযোগ করে ভুক্তভোগী ঘটনার বিবরণ দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেন। হেনস্তার শিকার ওই শিক্ষার্থী প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করেন। পরে শাহবাগ থানায় মামলা করেন তিনি। পরে গ্রেপ্তার মোস্তফা আসিফ অর্ণবকে বৃহস্পতিবার জামিন দিয়েছেন আদালত।
এ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরা একটি ‘স্পষ্ট বিবৃতি’ দিয়েছে। ‘বৃহস্পতিবারের এই বিবৃতিতে তারা বলেছে, ইতোমধ্যে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের নজরে এসেছে যে মামলা তুলে নিতে পুলিশ প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভুক্তভোগীকে প্ররোচিত করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রথমত, তার নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। দ্বিতীয়ত, ভুক্তভোগীর ন্যায়বিচার পাওয়ার অন্তরায়। তৃতীয়ত, অভিযুক্তের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য প্রমাণাদি থাকা সত্ত্বেও তাকে চাকরিতে বহাল তবিয়তে রাখার পায়তারা করছে। এরূপ হীন প্রচেষ্টার প্রতিবাদ জানিয়ে আমরা সুষ্ঠু তদন্ত ও তদন্ত শেষে দোষী সাপেক্ষে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানাই।’
এতে আরও বলা হয়, ‘বিভাগে চলমান সকল নিপীড়নবিষয়ক তদন্ত প্রতিবেদন অতিসত্বর দাখিল করতে হবে অথবা প্রতিবেদন কোন পর্যায়ে আছে তা অভিযোগকারীকে অবহিত করতে হবে। ‘ফাইল পাঠিয়ে দিয়েছি, সিনেটের হাতে’ এরূপ কোনো প্রকার তালবাহানা বরদাস্ত করা হবে না।’
একইভাবে স্পষ্ট বিবৃতি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম এন্ড ফটোগ্রাফি এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এ ঘটনা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও প্রক্টরিয়াল বডি গতকাল (বুধবার) থেকে শিক্ষার্থীর বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে হেনস্তাকারীকে তাৎক্ষণিক থানায় প্রেরণ করেছে এবং মামলা গ্রহণের জন্য নির্দেশ প্রদান করেছে। এ ছাড়া ঘটনাটির বিষয়ে যথাযথ তদন্ত করার জন্য ইতোমধ্যে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
এর আগে এ ঘটনায় করা মামলার অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেন, ৫ মার্চ দুপুর দেড়টার দিকে জাতীয় যাদুঘরের সামনে থেকে তিনি ও তাঁর বন্ধু আতিক আখিয়ার পায়ে হেঁটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে যাওয়ার পথে রাজু ভাস্কর্যের সামনে পৌঁছালে আসামি মোস্তফা আসিফ বাদীর সামনে এসে তিনি পর্দা করেন নাই কেন বলে প্রশ্ন করেন। তাঁর ওড়না ঠিক নাই কেন বলাসহ আরো কুরুচিপূর্ণ কথা বলে তাকে যৌনপীড়ন করে। বাদী তখন প্রক্টরকে মোবাইলে কল দিতে চাইলে আসামি দৌঁড়ে পালিয়ে যায়।
সাবস্ক্রাইব
সর্বশেষ খবরের সাথে আপডেট থাকুন।