ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রাজনীতিবিদ টিউলিপ সিদ্দিক ২০২৫ সালে “দ্য হাউজ” ম্যাগাজিনের প্রতিষ্ঠিত “ওয়েস্টমিনস্টারের ১০০ নারী” তালিকায় স্থান পেয়েছেন। এই তালিকা ওয়েস্টমিনস্টারের রাজনীতি ও জনসেবায় নারীদের অসামান্য অবদানকে স্বীকৃতি দেয়। এছাড়াও, পলিটিকোহোমের লিডারবোর্ডে তার রাজনৈতিক যাত্রা ও কৃতিত্বের বিশেষ উল্লেখ করা হয়েছে।
হ্যাম্পস্টেড ও কিলবার্নের সংসদ সদস্য এবং লেবার পার্টির বিশিষ্ট নেত্রী টিউলিপ সিদ্দিক তাঁর কর্মজীবনে অসংখ্য কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। লেবার পার্টির শ্যাডো ট্রেজারি টিমের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে তিনি প্রায় তিন বছর ধরে ব্যবসায়ী ও আর্থিক খাত নিয়ে ব্যাপকভাবে কাজ করেছেন। এতে তার দল জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়।
২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে লেবার পার্টির জয়ের পর তিনি ট্রেজারির অর্থনৈতিক সচিব নিযুক্ত হন এবং ১৪ বছর পর প্রথম লেবার বাজেট প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তবে, ২০২৫ সালের শুরুতে তিনি এই পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
একজন জনপ্রিয়, দক্ষ ও নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতিবিদ হিসেবে পলিটিকোহোমের মতে, টিউলিপ সিদ্দিকের পিছনের সারিতে বেশিদিন থাকার সম্ভাবনা কম। তার শ্যাডো ট্রেজারি টিমের কাজ লেবার পার্টির নির্বাচনী প্রচারণায় অর্থনৈতিক দক্ষতার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।
একজন মনোনয়নকারী পলিটিকোহোমকে বলেন, “তিনি তার প্রিয় ইস্যুতে অক্লান্ত ও সদয় প্রচারক। তিনি তার অসাধারণ কাজকে এই লেবার সরকারের কেন্দ্রে নিয়ে এসেছেন।”
২০১৫ সালে কমন্সে প্রবেশের পর থেকে টিউলিপ একজন নিবেদিত স্থানীয় সংসদ সদস্য হিসেবে পরিচিত।
গত বছর তিনি পলিটিকোহোমকে বলেছিলেন, “যে এলাকায় আমার মা ১৯৭০-এর দশকে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে বসতি স্থাপন করেছিলেন, সেখানকার প্রতিনিধিত্ব করা আমার জন্য একটি বিশাল সম্মান।”
বাঙালি জাতির পিতা ও স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি হিসেবে টিউলিপ তার পরিবারের উত্তরাধিকারকে সম্মান জানিয়েছেন এবং ব্রিটিশ রাজনীতিতে নিজের একটি স্বতন্ত্র স্থান তৈরি করেছেন।
টিউলিপ তার প্রিয় বিষয়গুলোতে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। নমনীয় ও পরিবারবান্ধব কাজের অধিকারের জন্য তার অবিরাম লড়াইয়ের ফলে এই বিষয়ে সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপ গঠিত হয়, যা পূর্ববর্তী সরকারকে কর্মজীবী পিতামাতার জন্য উন্নত অধিকার প্রদানে চাপ সৃষ্টি করে।
তিনি কর্মক্ষেত্রে বিদ্যমান “অগ্রহণযোগ্য যৌনতাবাদী সংস্কৃতি”র বিরুদ্ধেও কথা বলে যাচ্ছেন। গত বছর পলিটিকোহোমকে তিনি বলেন, “এই সমস্যা চলে গেছে বলে ভান করার মানে মাথা বালিতে গুঁজে দেওয়ার মতো।”
২০২৪ সালের নির্বাচনে যুক্তরাজ্যে লেবার পার্টির জয়ের পর সংসদে রেকর্ড সংখ্যক নারী সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, প্রথম নারী চ্যান্সেলর নিযুক্ত হয়েছেন এবং সবচেয়ে লিঙ্গ-সাম্যবাদী মন্ত্রিসভা গঠিত হয়েছে। টিউলিপ সিদ্দিক এই পরিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
“ওয়েস্টমিনস্টারের ১০০ নারী” তালিকায় তার স্থান এবং পলিটিকোহোমের প্রশংসা তার কাজের প্রতি স্বীকৃতি এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা।