লালমনিরহাট শহরের বিডিআর রোডে শিশু পার্কের পাশে অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্মারক মঞ্চের ম্যুরালটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। রবিবার (৩০ মার্চ) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত শ্রমিকরা ম্যুরালটি ভাঙার কাজ সম্পন্ন করেন।
শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসকের নির্দেশে তারা ম্যুরালটি ভাঙছিলেন। তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দারের কাছে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অতিক্রমের আহ্বায়ক সাংবাদিক হেলাল কবির জানিয়েছেন, ম্যুরালটি ভাঙা হয়েছে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে এবং ঢেকে রাখার নির্দেশও তাঁরই ছিল। অন্য কেউ এ নিয়ে আপত্তি জানায়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ম্যুরালে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, স্বাধীনতা যুদ্ধ, মুজিবনগর সরকার গঠন, ৭১ সালের গণহত্যা, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিজয়, সাতজন বীরশ্রেষ্ঠ, পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ ও জাতীয় পতাকা হাতে উল্লাসিত জনতার ছবি ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে গত বুধবার জেলা প্রশাসন ম্যুরালটি কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখেছিল, যার জন্য তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। লালমনিরহাট সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) এ বিষয়ে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।
২৭ মার্চ জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেছিলেন, ম্যুরালটি ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। দুদিন পর ২৯ মার্চ জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের সংগঠক রাসেল আহমেদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমরা ৫২, ৭১-কে ২৪-এর মুখোমুখি দাঁড় করাতে চাই না।”
রবিবার বিকালে টিআইবির এরিয়া কোঅর্ডিনেটর মো. মোরশেদ আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ম্যুরাল ঢেকে রাখার বিষয়ে তারা আগে প্রতিবাদ জানিয়েছিল। তিনি এখন ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে আছেন এবং ম্যুরাল ভাঙার বিষয়টি তাঁর জানা নেই। লালমনিরহাট সনাকের সভাপতি বীর প্রতীক ক্যাপ্টেন (অব.) আজিজুল হক অসুস্থ রয়েছেন এবং তারা পরবর্তীতে এ নিয়ে প্রতিবাদ জানাবেন।
রংপুর বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ম্যুরাল ভাঙার সিদ্ধান্ত জেলা প্রশাসকের এবং এ বিষয়ে তাঁর কাছেই জানতে হবে।