অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূসের সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন যমুনায় আজ রোববার বিকেলে এক জরুরি বৈঠকে মিলিত হন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর-আইএসপিআর-এর পক্ষ থেকে ৫ই আগস্ট পরবর্তী সময়ে সেনা-হেফাজতে থাকা ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ, সেখানে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নাম উপস্থিত এবং ড. ইউনূসের শপথ গ্রহণের বিষয়ে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের রেফারেন্স নিয়ে নানা গুঞ্জন ভেসে বেড়ালেও আজকের এই বৈঠকের বিষয়ে গণমাধ্যমকে বলা হয়েছে, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে প্রধান বিচারপতির আলোচনা হয়েছে।
তবুও হঠাৎ জরুরি বৈঠকের খবরে জনমনে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
এদিকে বিকেলে আবারও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধান উপদেষ্টা। দুই দফায় অনুষ্ঠেয় এ বৈঠকে অংশ নেন মোট ৮টি রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
সেনা হেফাজতে বিচারপতিরা: ইউনূস সরকার নিয়ে ‘পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের’ রেফারেন্সে উঠেছে প্রশ্ন
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও বিচার বিভাগীয় ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে নতুন প্রশ্ন উঠেছে।
আন্তঃসেনাবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)-এর তথ্যমতে, গত বছরের ৫ই আগস্ট থেকে দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান সপরিবারে সেনাবাহিনীর আশ্রয়ে ছিলেন।
এই তথ্যের আলোকে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন সামনে এসেছে— তাহলে সুপ্রিম কোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের রেফারেন্স কে তৈরি করেছিল, যার ভিত্তিতে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের বৈধতা পেয়েছে? কোন ক্ষমতাবলে ড. ইউনূস নিজেকে সরকারপ্রধান হিসেবে দাবি করছেন?
প্রধান বিচারপতির আশ্রয় ও পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের রেফারেন্স
আইএসপিআর-এর তথ্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৫ই আগস্ট থেকে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ছিলেন। এই সময়ে দেশে তীব্র রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছিল। শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর সংসদ ভেঙে দেওয়া হয় এবং ৮ই আগস্ট ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ, প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে, ভার্চুয়াল শুনানির মাধ্যমে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের বৈধতা দেয়।
কিন্তু আইএসপিআর-এর তথ্য অনুযায়ী, প্রধান বিচারপতি যদি সেনাবাহিনীর আশ্রয়ে থাকেন, তাহলে এই রেফারেন্স তৈরি এবং শুনানির প্রক্রিয়া কে নিয়ন্ত্রণ করেছিল? এই প্রশ্নটি এখন আইনজীবী, রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।