আনোয়ারা বেগম। নামটা শোনার সঙ্গে সঙ্গে মাথা নত হওয়ার কথা। আশির কোঠায় বয়স। ছিলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু তাঁর সবচেয়ে বড় পরিচয়—তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে, দেশ যখন দখলদার পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হিংস্র থাবায় জর্জরিত, তখন তিনি আর তাঁর বোন মনু হাতে #অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন। যুদ্ধ করেছিলেন সম্মুখভাগে। বুক দিয়ে আগলেছেন দেশটাকে পাকিস্তানি হানাদারদের কাছ থেকে।
আজ সেই আনোয়ারা বেগম বিশ্ববিদ্যালয়ে যান প্রশাসনিক একটি কাজে। এবং সেখানে তাঁকে চিনতে দেরি করে না বর্তমান প্রশাসন। চিনে, এবং ভয় পায়। এই ভয় কোনো নিরাপত্তাজনিত নয়—এই ভয় ইতিহাসের। যারা আজ প্রশাসনের গদি গরম করে বসে আছেন, তাদের রক্তকণিকায় ’৭১-এর পরাজিত শক্তিরাই দৌড়ে বেড়াচ্ছে। তাই তাঁরা মুক্তিযোদ্ধাকে দেখে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
এই ঘটনাটি নিছক একটি প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নয়। এটি একটি রাজনৈতিক বার্তা। এই বার্তা বলছে—বাংলাদেশ এখন এমন এক পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে, যেখানে রাজাকার-ঘেঁষা প্রশাসন মুক্তিযুদ্ধকে ‘পরাজয়’ মনে করে আর মুক্তিযোদ্ধাকে ‘বিপজ্জনক’। এবং এই বার্তা এসেছে মোহাম্মদ ইউনুস নামক এক অনির্বাচিত, বিদেশী দালাল, এবং বিকৃত চরিত্রের ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠা অস্বীকৃত ‘সরকার’ থেকে—যার গোড়ায় বসে আছে পরাজিত রাজনীতির পরিত্যক্ত কঙ্কাল।
আনোয়ারা বেগমকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার মানে শুধু একজন মুক্তিযোদ্ধাকে অপমান করা নয় — এটি গোটা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি, আত্মত্যাগ, এবং আদর্শকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করা। এই বাংলাদেশ, যার জন্মই হয়েছিল পাকিস্তানি দুঃশাসনের বিরুদ্ধে, আজ তারই গন্ধমাখা লোকদের দখলে। যারা মুখে আইন, উন্নয়ন, প্রগতি বলে, ভেতরে এখনো মীর জাফরের মানসিকতা লালন করে।
রাষ্ট্র যখন নিজের বীরদের চিনতে পারে না, তখন বুঝে নিতে হয়—রাষ্ট্রটা আর আমাদের নিজেদের নেই।( আওয়ামীলীগ পেইজ)