সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার পুষ্পকাটিতে চাঁদার দাবিতে আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে হামলা ও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুটকালে ৩ সমন্বয়ককে আটকে সেনাবাহিনীর কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।
গতকাল দুপুরে উপজেলার পুষ্পকাটি গ্রামে কুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান মেম্বার ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য গোলাম রব্বানীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
রাজনীতি ও জনপ্রতিনিধিত্ব ছাড়াও এলাকায় মৎস্যঘের ও বিসমিল্লাহ ব্রিকস নামের একটি ইটভাটার মালিকানা রয়েছে গোলাম রব্বানীর।
আটক হওয়া সমন্বয়করা হলেন- দেবহাটা উপজেলার বহেরা গ্রামের আব্দুল আলিমের ছেলে নাহিদ হাসান, শ্যামনগর উপজেলার কৈখালি গ্রামের আত্তাব মোল্যার ছেলে আব্দুর রহিম ও আশাশুনি উপজেলার আব্দুর রহমান।
ইউপি সদস্য গোলাম রব্বানী ও তার ভাই আব্দুর রব জানান, কিছুদিন ধরে একটি চক্র তাদের কাছে মোটা অংকের টাকা চাঁদা দাবি করে ইটভাটাসহ ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়ে আসছিল।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ৫ জন যুবক অতর্কিতে তার বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে নিজেদের পুলিশ পরিচয় দেয়। তাদের মধ্যে ৩ জন গোলাম রব্বানীর ঘরে এবং বাকি ২ জন আব্দুর রবের ঘরে প্রবেশ করে অস্ত্র দেখিয়ে ঘরে থাকা ব্যবসার টাকা ও স্বর্ণলাঙ্কর লুটে নেয়।
একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ধাওয়া দিয়ে ওই ৩ সমন্বয়ককে আটক করে। তাদের সাথে থাকা অপর দুজন পালিয়ে যায়।
বিষয়টি জানতে পেরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র (বৈছা) আন্দোলনের দেবহাটা উপজেলার আহ্বায়ক মুজাহিদ বিন ফিরোজ ঘটনাস্থলে পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব সদস্যদের পাঠান। কিন্তু বিক্ষুব্ধরা পুলিশ বা র্যাব সদস্যদের হাতে আটককৃতদের তুলে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে সাতক্ষীরা সেনা ক্যাম্পে খবর দেন।
পরে সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে এলাকাবাসি আটক ৩ সমন্বয়ককে সেনাবাহিনীর কাছে সোপর্দ করেন। বৈছা আন্দোলনের আহ্বায়ক মুজাহিদ বিন ফিরোজ দাবি করেন, বিগত সরকারের সময়ে রব্বানী মেম্বার বিভিন্ন অপকর্ম করেছে। তাই জেলা সমন্বয়করা তাকে ধরতে গিয়েছিল।
তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, কেউ অপরাধ করলে সেটা ধরার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রয়েছে, সরকার-প্রশাসন সে কাজ করবে। কাউকে ধরার দায়িত্ব সমন্বয়কদের কে দিয়েছে? এমন প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি এই বৈছা নেতা।
দেবহাটা থানার ওসি গোলাম কিবরিয়া হাসান জানান, আটকের বিষয়টি আমি শুনেছি। যেহেতু সেনা সদস্যরা তাদের আটক করেছে, তারা আমাদের কাছে হস্তান্তর করলে বিস্তারিত জানাতে পারবো।