পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন জুলাই আন্দোলনে ১,৫০০ জনের মৃত্যুর দাবিকে “মাত্রাতিরিক্ত অতিরঞ্জিত ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত” বলে তীব্রভাবে প্রতিবাদ করেছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, নোবেল বিজয়ী ড. ইউনুস ও তার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনমত ও আন্তর্জাতিক মতামতকে প্রভাবিত করতে ইচ্ছাকৃতভাবে হতাহতের সংখ্যা ফুলিয়ে তুলছে।
দেশের শীর্ষ দুই সংবাদপত্র ‘ডেইলি স্টার’ ও ‘প্রথম আলো’ ১৬ই জুলাই থেকে ৫ই আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের মৃত্যুর হিসাব প্রকাশ করেছে, যা বিক্ষোভ ও অশান্তির শীর্ষ সময়কে কভার করে।
তাদের তথ্য অনুযায়ী, ৫ই আগস্টের আগে মোট ৩২৯ জনের মৃত্যু হয়। ৫ই আগস্ট থেকে ৮ই আগস্ট পর্যন্ত আরও ৩২৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। ফলে, মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ায় ৬৫৭।
এই সংখ্যা জাতিসংঘের একটি প্রাথমিক প্রতিবেদনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যেখানে বলা হয়েছে, ওই সময়কালে প্রায় ৬৫০ জন মারা গেছেন।
তবে, ইউনুস সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ৮২৪ জনের মৃত্যুর একটি ফুলিয়ে তোলা সংখ্যা প্রকাশ করেন। এর কিছুক্ষণ পরেই ড. ইউনুস প্রকাশ্যে দাবি করেন যে জুলাই আন্দোলনে ১,৫০০ জন মারা গেছেন। তার এই বক্তব্যের পর জাতিসংঘ তাদের প্রতিবেদন হালনাগাদ করে ১,৫০০ মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখ করে, যা অন্তর্বর্তী সরকারের বর্ণনার প্রভাবে হয়েছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
নিশ্চিত হওয়া ৬৫৭ মৃত্যুর মধ্যে ১৪৪ জন ছিলেন আওয়ামী লীগের সদস্য বা সমর্থক, যা মোট মৃত্যুর প্রায় ২২%।
এছাড়া, নিরাপত্তা উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন অভিযোগ করেন, কয়েকজন নিহত ৭.৬২ ক্যালিবারের বুলেটে নিহত হয়েছেন, যা বাংলাদেশ পুলিশ ব্যবহার করে না।
তিনি দাবি করেন, এই ধরনের গোলাবারুদ অশান্তির সঙ্গে জড়িত কয়েকজন “সমন্বয়কারীর” বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
ড. মোমেন বলেন, “প্রতিটি মৃত্যু দুঃখজনক, কিন্তু রাজনৈতিক সুবিধার জন্য সংখ্যা বিকৃত করা অনৈতিক ও বিপজ্জনক। আমরা প্রতিটি মৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ ময়নাতদন্ত তদন্ত দাবি করছি এবং সরকারকে প্রকাশ্যে ১,৫০০ মৃত্যুর দাবি মিথ্যা বলে স্বীকার করার আহ্বান জানাচ্ছি।”
এই বিতর্ক নাগরিক সমাজ ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মধ্যে স্বচ্ছতা, ফরেনসিক জবাবদিহিতা এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভুল তথ্য প্রচারণা বন্ধের আহ্বানকে পুনরুজ্জীবিত করেছে।