।।আমিনুল হক পলাশ।।
মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল, বাঙ্গালির সকল স্বাধিকার আন্দোলনের পথিকৃৎ, এদেশের খেটে খাওয়া আপামর জনসাধারনের আশা ভরসার একমাত্র আশ্রয়স্থল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৬ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পুরানো ঢাকার রোজ গার্ডেন থেকে যাত্রা শুরুর পর থেকে গত ৭৬ বছরে দলটি বারবার অত্যাচার, নিপীড়ন ও ষড়যন্ত্রের মুখোমুখি হয়েছে। একাধিকবার পড়েছে নিষেধাজ্ঞায়। শিকার হয়েছে ইতিহাসের নৃশংসতম রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের। তবুও দলটি ফিনিক্স পাখির মতো বারবার জেগে উঠেছে এদেশের মেহনতি মানুষকে সাথে নিয়ে, রচনা করেছে বিজয়ের নতুন কাব্যগাথা।
আজ যখন এই লিখা লিখতে বসেছি তখন ডঃ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন দখলদার অবৈধ অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন থেকে স্থগিত করা হয়েছে দলটির নিবন্ধন। মব সৃষ্টির মাধ্যমে বিগত দশ মাসে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে অন্ততপক্ষে চারশো জন আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী ও সমর্থককে। গ্রেফতার করা হয়েছে আড়াই লাখের উপর নেতাকর্মীকে। আক্ষরিক অর্থেই আওয়ামীলীগের উপর ‘গণহত্যা’ চালানো হচ্ছে বিগত দশ মাস ধরে। শুধুমাত্র রাজনৈতিক মতাদর্শের কারনে রাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ মদতে দেশের একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর উপর ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অবৈধ, অসাংবিধানিক সরকারে চলমান নিপীড়ন কেবলমাত্র গণহত্যার সাথেই তুলনীয়।
আমার আজকের লিখার উদ্দেশ্য আওয়ামীলীগের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস আলোচনা কিংবা চলমান সংকট বর্ণনা করা নয়। কেননা সমূদ্রের ঢেউ কে যেমন বাঁধ দিয়ে থামানো যায় না, ঠিক তেমনি আওয়ামী লীগকেও অতীতে ষড়যন্ত্র, অত্যচার, নিপীড়ন দিয়ে স্তব্ধ করা যায়নি। আওয়ামী লীগ তার আপন শক্তিতেই ফিরে আসবে। আমি আজ আলোচনা করতে চাই আওয়ামীলীগের উপর বিরোধীপক্ষের চাপিয়ে দেয়া আরোপিত কিছু মিথ্যা অভিযোগের বিষয়ে, যেগুলো দীর্ঘদিন ধরে অপপ্রচারের মাধ্যমে দেশের মানুষের মনে ঢুকানোর চেষ্টা করা হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে । মোটাদাগে আমার আজকের আলোচনার বিষয় হলো বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক সহনশীলতা এবং নির্বাচন ইস্যুতে আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ।
আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিরোধী পক্ষে একটা সাধারণ অভিযোগ হলো আওয়ামীলীগ মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুকে কুক্ষিগত করেছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করেছে। এই দাবিটা যে কতটা অসাড় এবং ভ্রান্ত তা বিগত দশমাসেই প্রমাণিত হয়েছে। এই সময়ে দেশের মুক্তিযুদ্ধের স্বারক প্রতিটি স্থাপনাকে ধ্বংস করা হয়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রামের আঁতুড়ঘর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের জাতির পিতার বাসভবন, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, মেহেরপুরের মুজিবনগর কমপ্লেক্স- স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির ধ্বংসযজ্ঞ থেকে রক্ষা পায়নি কিছুই। মহান মুক্তিযুদ্ধের শ্লোগান ‘জয় বাংলা’ বলার অভিযোগে খুন করা হয়েছে ছাত্রলীগকর্মীকে, মুক্তিযোদ্ধার গলায় পড়ানো হয়েছে জুতার মালা। কিন্তু এসকল বিষয়ে নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি দাবি করা দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলকে একটি টু শব্দও উচ্চারন করতে দেখা যায়নি।
এটা বাঙালি জাতির দূর্ভাগ্য যে স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরে এসেও এদেশে স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠী রাজনৈতিক ভাবে এখনো সক্রিয়। এই কিছুদিন আগেই কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত এটিএম আজাহারের সাজা মওকুফ হয়েছে। ঢাকার প্রাণকেন্দ্র শাহবাগে তাকে বীরোচিত সংবর্ধনা দিয়েছে যুদ্ধপরাধী দল জামায়াতে ইসলাম। রাজাকার শিরোমনি গোলাম আজমের নামেও শ্লোগান দেয়া হয়েছে। একদিকে মুক্তিযোদ্ধারা যখন প্রতিনিয়ত রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের শিকার হচ্ছে, তখন যুদ্ধাপরাধীদের এই আস্ফালনই বলে দিচ্ছে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি। এই যে স্বাধীনতার এতো বছর পরে এসেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন হয়নি বাংলাদেশে, এই দায় কার? এর উত্তরও ইতিহাসেই রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে দেশ ছেড়ে যাওয়া পরাজিত শক্তিকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। রাজাকার শাহ আজিজুর রহমানকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছিলেন তিনি, সুযোগ দিয়েছিলেন গোলাম আজমকে দেশে ফিরে এসে রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালানোর। সেই ধারা চালু রেখেছে খালেদা জিয়ার বিএনপিও। জামাতকে সঙ্গী করেই তিনি ১৯৯১ এবং ২০০১ সালে ক্ষমতার মসনদে বসেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে তুলে দিয়েছেন শহীদের রক্তস্নাত লাল সবুজের পতাকা। তারেক রহমানকেও আমরা বলতে শুনেছি, “ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির একই মায়ের পেটের দুই ভাই।”
অর্থাৎ এটি পরিষ্কার যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কুক্ষিগত করার যে অভিযোগ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তা সর্বৈব মিথ্যা। বরং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগই একমাত্র দল যারা সর্বদা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করেছে। বরং বিএনপিই তাদের রাজনৈতিক অভিলাষ চরিতার্থ করার জন্য এবং নিজেদের রাজনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য দেশবিরোধীদের আশ্রয় দিয়েছে, সঙ্গী করেছে। সেই একই চিত্র আমরা বর্তমানেও দেখতে পাচ্ছি। ডঃ ইউনুসের পাশে ভ্যানগার্ড হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে সেই যুদ্ধাপরাধী দল জামাত, ইউনুসের কিংস পার্টি এনসিপির অন্যতম সহায়ক শক্তিও তারাই। অর্থাৎ আওয়ামীলীগ বাদে দেশের অন্যান্য বড় রাজনৈতিকদলগুলোও কেবলমাত্র ক্ষমতার লোভে মুক্তিযুদ্ধকে প্রতিনিয়ত অপমান করেছে, মুক্তিযুদ্ধবিরোধীর সাথে হাত মিলিয়েছে। আর এ কারণেই স্বাধীনতার এতো দীর্ঘ সময় পরে এসেও আমাদের দেখতে হচ্ছে স্বাধীনতাবিরোধীদের আস্ফালন।
এবার আসা যাক রাজনৈতিক সহনশীলতার বিষয়ে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যে পরিমান রাজনৈতিক হত্যাকান্ড ও নিপীড়নের শিকার হয়েছে তা শুধু বাংলাদেশ কেন, একক ভাবে বিশ্বের আর কোন দল হয়েছে বলে মনে হয়না। ১৯৭৫ এর ১৫ই আগষ্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে, ৩ রা নভেম্বর কারা প্রকোষ্ঠে হত্যা করা হয়েছে জাতীয় চার নেতাকে। ১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসার পরেও একের পর এক প্রাণঘাতী হামলা চালানো হয়েছে উনার উপর। অন্ততপক্ষে ১৮ বার মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে এসেছেন তিনি। ২০০৪ সালের ২১ শে আগষ্ট গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিলো তৎকালীন বিএনপি জামাত জোট সরকারের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতায় যাতে নিহত হয়েছিলো ২৪ জন আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী, অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান শেখ হাসিনা। সেই হামলার পর খালেদা জিয়া সংসদে দাঁড়িয়ে দাবি করেছিলেন, শেখ হাসিনা নাকি ভেনেটি ব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে গিয়ে হামলা করেছিলেন। শুধু হামলা কিংবা নির্যাতনই নয়। বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় এসেই ৯২ সাল থেকে ১৫ই আগষ্ট জন্মদিন পালন শুরু করেছিলেন। অর্থাৎ আওয়ামী লীগের সবচেয়ে কষ্টের হৃদয়বিদারক দিনটিকে উনি বেছে নিয়েছিলেন উদযাপনের উপলক্ষ্য হিসেবে। ২০০১-২০০৬ সালের বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে অন্ততপক্ষে সাড়ে তিনহাজার আওয়ামীলীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনের কর্মী সমর্থকদের হত্যা করা হয়েছিলো।
অথচ আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে কখনোই প্রতিহিংসার পথ বেছে নেয়নি। বঙ্গবন্ধুর হত্যা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও হয়েছে সম্পূর্ণ দীর্ঘমেয়াদী এক আইনী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে। আজ বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর যে নির্মম নির্যাতন চালানো হচ্ছে আওয়ামীলীগের মেয়াদকালে কখনোই এমন কিছু ঘটেনি। তাই রাজনৈতিক যে সহনশীলতার গল্প তথাকথিত সুশীল সমাজ কিংবা বিরোধপক্ষের বয়ান থেকে উচ্চারিত হয় তা কেবলই লোক দেখানো, আওয়ামী বিরোধীদের ন্যারেটিভ তৈরির অপচেষ্টা। কেননা ক্ষমতার বাইরে থাকাকালীন আওয়ামীলীগ কখনোই নূন্যতম রাজনৈতিক সহনশীলতাটুকুও পায়নি ক্ষমতাসীনদের তরফ থেকে। বরং সর্বতোভাবে আওয়ামীলীগকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার চেষ্টাই করেছে তারা।
এবার আসা যাক নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে। বাংলাদেশের ইতিহাসে একবারই শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতার হস্তান্তর হয়েছিল এবং সেটা ২০০১ সালে। সেটাও আওয়ামীলীগই করেছিলো। গণআন্দোলনের মাধ্যমে ১৯৯১ এ বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরে আসার পর ১৯৯৬ সালেই বিএনপি সেটা ধ্বংস করেছিল ১৫ই ফেব্রুয়ারি একদলীয় নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আন্দোলন করেই সেই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছিল। চালু হয়েছিল তত্ত্ববধায়ক সরকার ব্যবস্থা এবং নতুন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিল আওয়ামীলীগ। ২০০১ সালে তত্ত্ববধায়ক সরকারের মাধ্যমে আয়োজিত নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও আওয়ামীলীগ শান্তিপূর্ণ ভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিল। ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর বিএনপিই সেই তত্ত্ববধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বিতর্কিত করেছিল। নিজেদের অনুগত লোককে প্রধান উপদেষ্টা বানাতে বিচারপতিদের চাকুরির বয়স বৃদ্ধি করেছিল। খালেদা জিয়া নিজেই বলেছিলেন, “পাগল ও শিশু ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নয়।” বিএনপির এই ধরনের কার্যক্রমের কারণে দেশে ১/১১ এসেছিল, বিরাজনীতিকরন এর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। সেখান থেকেও আওয়ামীলীগের নেতৃত্বেই আন্দোলনের মাধ্যমে নির্বাচন ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা হয়েছিলো এবং ২০০৮ সালে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা ক্ষমতায় এসেছিল আওয়ামীলীগ।
আদালতের রায়ে তত্ত্ববধায়ক সরকার ব্যবস্থা হয়ে যাবার পরও নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে আলোচনার জন্য ২০১৩ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে ফোন করেছিলেন, আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছিলন। নির্বাচনকালীন সরকারের বিএনপির অংশগ্রহনের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, প্রয়োজনে তাদের পছন্দের মন্ত্রণালয় ছেড়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু খালেদা জিয়া হরতালের অজুহাতে আলোচনায় বসেননি। বরং ২০১৪ এর নির্বাচন বয়কট করে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে বিএনপি বেছে নিয়েছিল জ্বালাও পোড়াও আর পেট্রোল বোমার রাজনীতি। দেশব্যাপী এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল তারা। ২০১৮ সালে বিএনপি জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহন করলেও প্রতি আসনে ২/৩ জন প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছিল। এতে তারেক রহমানের মনোনয়ন বাণিজ্য ভালো হলেও, নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে যে তারা মোটেও আন্তরিক ছিলো সেটার প্রমাণ হয়। আর ২০২৪ সালেও বিএনপি নির্বাচন বয়কট করে। বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা শতভাগ শুদ্ধ এটা দাবি করার সুযোগ নেই, কিন্তু এতে কার দায় কতটুকু সেটাও নির্মোহ বিশ্লেষণের দাবি রাখে।
আওয়ামীলীগের কাছে এদেশের মানুষের অনেক প্রত্যাশা। সেটা থাকাটাও স্বাভাবিক, কেননা জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এই দলটিই বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির জন্ম দিয়েছে। উনার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারই বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখিয়েছে, সেটাকে বাস্তবে রুপ দিয়েছে। কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে আওয়ামী লীগকে প্রতিনিয়ত দেশের অভ্যন্তরে, এমনকি দেশের বাইরেও ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করতে হয়েছে। শিকার হতে হয়েছে নানান অপপ্রচার ও প্রোপাগান্ডার। আওয়ামী লীগকে সর্বদা রাজনীতি করতে হয়েছে এমন একটি রাজনৈতিক পরিবেশে যেখানে বিরোধিপক্ষ শুধুমাত্র ক্ষমতায় যাবার লোভে যুদ্ধাপরাধী থেকে শুরু করে জঙ্গীগোষ্ঠী, এমনকি বিদেশী অপশক্তির সাথে হাত মিলিয়েছে। তাই আওয়ামীলীগের জন্য রাস্তাটা কখনোই সহজ ছিলো না। দেশের স্বার্থে আওয়ামীলীগ সর্বদাই সর্বোচ্চ সহনশীল রাজনৈতিক শিষ্টাচার দেখিয়েছে, কিন্তু বিনিময়ে কি পেয়েছে তা গত দশমাসেই দেশবাসী কাছে পরিষ্কার হয়েছে। তাই আওয়ামীলীগকে ক্রশবিদ্ধ করার আগে একটা বার ভেবে দেখবেন, এতোটুকুই প্রত্যাশা।
আওয়ামী লীগের ৭৬ বছরের ইতিহাস মূলত বাংলাদেশেরই ইতিহাস – সংগ্রাম, ত্যাগ ও অর্জনের বর্ণময় ইতিহাস। যুগে যুগে এই দলটি অত্যাচার ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধেই লড়ে এসেছে দেশের মানুষের অধিকার রক্ষার জন্য। আওয়ামী লীগ একটি আন্দোলনের নাম, একটি দর্শনের নাম, একটি বিপ্লবের নাম। যতদিন একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ থাকবে, ততদিন আওয়ামী লীগ থাকবে। এবং এই দলই আবার নেতৃত্ব দেবে মানুষের সরকার প্রতিষ্ঠায়। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
লেখক পরিচিতি: আমিনুল হক পলাশ সাবেক ছাত্রলীগ নেতা