আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মিথ্যা ও প্রহসন মূলক মামলায় বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্যান্যদের মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অজুহাতে যেনতেন ভাবে দোষী সাব্যস্ত করার হীন উদ্দেশ্যে পুলিশের প্রাক্তন আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুনকে অমানবিক নির্যাতনের মাধ্যমে বলপূর্বক রাজসাক্ষী বানানোর ঘটনায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। পাশাপাশি এই জঘন্য ও ন্যক্কারজনক ঘটনার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও ঘৃণা প্রকাশ করছে।
যেই মামলায় সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুনকে রাজসাক্ষী করা হচ্ছে সেই মামলায় আসামী ৩জন এবং তিনিই একমাত্র উপস্থিত। আব্দুল্লাহ আল মামুনকে রাজসাক্ষী করে এই অবৈধ আইসিটি ট্রাইব্যুনাল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে দোষী প্রমাণ করতে চায়। মূলত এই ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন যখন কোনো ধরনের তথ্য-প্রমাণ উদ্ধার করে ব্যর্থ হয়েছে তখনই তারা আব্দুল্লাহ আল মামুনকে রাজসাক্ষী বানানোর পরিকল্পনা করেছে। এটা থেকে স্পষ্ট যে, প্রসিকিউশন এতোদিন তদন্ত করে কোনো তথ্য-প্রমাণ হাজির করতে পারেনি এবং যার ফলে রাজসাক্ষীর উপর নির্ভর করছে। আসলে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের উপর প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে তাদের নেতাদের দোষী সাব্যস্ত করতে একই মামলার সহ-আসামীদের রাজসাক্ষী করা হয়। যেসব মামলায় অপরাধ প্রমাণের জন্য যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণের অভাব থাকে সেসব মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ এ ধরনের চাল দেয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনো অপরাধ করেননি। সুতরাং তার বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করতে ব্যর্থ হয়েই প্রসিকিউশন চাপ দিয়ে এটা করছে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনে করে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সময় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মানবতার বিরোধী অপরাধ এবং গণহত্যায় যুক্ত অপরাধীদের বিচারের প্রতিশোধ হিসেবে অবৈধ দখলদার খুনি ফ্যাসিস্ট ইউনূসের অবৈধ অন্তর্বর্তী জঙ্গিবাদী সরকার বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রহসনমূলক বিচারের নাটক মঞ্চস্থ করে যাচ্ছে।
আমরা জানতে পেরেছি, সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুনকে শুধু কারাগারে অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়নি, তাঁর পরিবারের উপরও অবর্ণনীয় অত্যাচার ও নিপীড়ন চালানো হয়েছে। তাঁর পরিবারকে জানানো হয়েছে যে যদি তিনি এই মামলায় রাজসাক্ষী না হয় তাহলে একদিকে আইজিপিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হবে, অন্যদিকে তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যকে গ্রেফতার করে জেলে প্রেরণ করা হবে এবং তাদের পরিণতিও একই ধরনের হবে। আমরা এও জানতে পেরেছি, কারাগারে খুনি ফ্যাসিস্ট ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আইজিপিকে বলা হয়েছে যে তিনি যদি রাজ সাক্ষী হন এবং তাদের কথামতো ও তাদের শেখানো বক্তব্য সাক্ষ্য হিসেবে প্রদান করে, তাহলে তাকে মুক্তি দেয়া হবে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনে করে, কারান্তরীণ কোনো ব্যক্তির সাথে এ ধরনের আচরণ কেবল অমানবিকই নয়, এটি অবৈধ, বেআইনি ও অসংবিধানিক। দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী এ ধরনের কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণরূপে অপরাধমূলক কাজ। এভাবে বলপূর্বক কাউকে রাজসাক্ষী করে তার মাধ্যমে নিজেদের বক্তব্য উপস্থাপন করা আইনের শাসনের পরিপন্থী।
এই অবৈধ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রহসনমূলক এবং প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশপ্রণোদিত বিচার দেশের জনগণকে ক্ষুব্ধ করেছে। দেশের জনগণের নিকট এটি স্পষ্ট যে, মহান মুক্তিযুদ্ধের মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রহসনমূলক এই বিচারের নাটক মঞ্চস্থ করা হচ্ছে। দিনশেষে মানুষের পক্ষের রাজনীতির ধারাই জয়ী হবে গণবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীরা ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। আমরা বিশ্বাস করি, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী দেশপ্রেমিক জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই দেশবিরোধী অপশক্তিকে দাঁতভাঙা জবাব দেবে। দেশের মানুষ ও বিশ্ব জনমতকে আমরা আহ্বান জানাবো, বাংলাদেশে সংঘটিত এই অন্যায়, অবিচার ও মানবিক বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে আপনারা সোচ্চার হোন। বাংলাদেশকে, বাঙালি জাতিকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন।
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।তারিখ: ১০ জুলাই ২০২৫