মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য প্রবেশে ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে। এতে বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত্তির প্রধান এই খাত বড় বিপর্যয়ে পড়তে যাচ্ছে। যার প্রভাব হবে সুদূরপ্রসারী।
গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের মোট রপ্তানি ছিল প্রায় ১০.৩ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে তৈরি পোশাক খাত থেকেই এসেছে ৮.৫ বিলিয়ন ডলার—মোট রপ্তানির ৮৩ শতাংশের বেশি।
বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি রুবানা হক বলেছেন, যখন ভিয়েতনাম ২০ শতাংশ শুল্ক দিয়ে মার্কিন বাজারে পণ্য রপ্তানি করবে, তখন আমাদের ৩৫ শতাংশ শুল্ক দিলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাবে।
ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, বাংলাদেশের সব রপ্তানির ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের কারণে সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়ে ইতিমধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার, ফলে এই শুল্কের প্রভাব অত্যন্ত গভীর হতে পারে। তাৎক্ষণিকভাবে রপ্তানি আদেশ কমে যাওয়ার আশঙ্কা ছাড়াও, দেশের অর্থনীতিতে কর্মসংস্থান হ্রাস এবং অস্থিরতার মতো বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু রপ্তানি আদেশ কমে যাওয়া নয়, এই শুল্কের প্রভাবে দেশের অর্থনীতিতে কর্মসংস্থান হ্রাস, শ্রমিক ছাঁটাই ও বৈদেশিক মুদ্রা আয় কমে যাওয়ার মতো বড় ঝুঁকি তৈরি হবে।
প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর মধ্যে ভিয়েতনাম বছরে প্রায় ১৮-২০ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করে এবং ভারতও মার্কিন বাজারে আগ্রাসীভাবে প্রবেশ করছে। তাদের তুলনায় বাংলাদেশ এখন বড় শুল্ক বৈষম্যের মুখোমুখি।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য দ্রুত কূটনৈতিক তৎপরতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনায় বসা জরুরি।
এর আগে, ট্যারিফ কমানোর অনুরোধ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস চিঠি দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। সেই চিঠি যে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
যদিও যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তোজা এক ফেসবুক পোস্টে দাবি করেন, ৩৫ শতাংশ শুল্ক চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়। আলোচনা এখনও চলছে। ৯ই জুলাই পরবর্তী বৈঠক হবে।