গতকাল ইউনূস সরকারের নির্দেশে সেনাবাহিনী ও পুলিশ কর্তৃক গোপালগঞ্জে সংঘটিত নারকীয় হামলা ও নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি দেশনেত্রী শেখ হাসিনা তীব্র প্রতিবাদ, নিন্দা ও ধিক্কার জানান।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, “৫ই আগস্ট থেকে জাতি প্রত্যক্ষ করছে, কারা আমাদের জাতীয় চেতনার প্রতীক — বঙ্গবন্ধুর বাসভবন, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি জাদুঘর, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সঙ্গীত ও পবিত্র সংবিধানকে অবমাননা করেছে। জনগণ দেখেছে কারা গণহত্যা, পুলিশ হত্যা, ধর্ষণ, ডাকাতি, ছিনতাই, লুটপাট চালিয়েছে — অসংখ্য ঘরবাড়ি, অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে আক্রমণ চালিয়ে ধ্বংসের চেষ্টা করেছে।”
তিনি আরো বলেন, “জাতির শত্রু, ঘাতক-ফ্যাসিস্ট, দেশবিরোধী এবং সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষক ইউনূস তার সন্ত্রাসী বাহিনী ও কথিত এনসিপির মাধ্যমে সদ্য-উত্থিত জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের উসকে দিয়েছে। ৫ই আগস্টের ধারাবাহিকতায় ইউনূস ও তার মবসন্ত্রাসী, এনসিপির মাধ্যমে পরিচালিত নব্য উত্থিত জঙ্গি-সন্ত্রাসীরা ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচির নামে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধি গুড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নেয়।”
বিবৃতিতে শেখ হাসিনা জোর দিয়ে বলেন, “বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ অভিন্ন। যে কোনো একটির ওপর আঘাত পুরো জাতির ওপর আঘাত হিসেবে বিবেচিত হবে। আজ গোপালগঞ্জবাসী নিশ্চুপ ছিল না। তারা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।”
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, “বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধুকে রক্ষার লড়াইয়ে গোপালগঞ্জের সাহসী জনগণ প্রতিকূলতার মধ্যেও টিয়ার গ্যাস, গুলি ও দমন-পীড়ন উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ রক্ষা করেছে। অথচ ঘাতক ইউনূসের ভাড়াটে বাহিনী নিরীহ মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। ফলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে বহু মানুষ শহিদ হয়েছেন, অসংখ্য আহত হয়েছেন। এই রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত বর্বরতা মধ্যযুগীয় নিষ্ঠুরতাকেও হার মানায়।”
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “ঘাতক-ফ্যাসিস্ট ইউনূস ও তার দলবল যেভাবে হত্যাযজ্ঞ ও নৃশংসতার মাধ্যমে বাংলাদেশকে পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে, তা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। তারা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অধিকারকে নির্মূল করতে চায়, দেশবিরোধী অপশক্তির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়।”
বিবৃতিতে তিনি বলেন, “এই চক্রান্তকারীদের অপচেষ্টায় জাতি ক্ষুব্ধ। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহ্য ও দেশের অস্তিত্ব ধ্বংস করতে উঠে পড়ে লেগেছে। কিন্তু বাংলার মানুষ এখন জেগে উঠেছে, ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। জনগণের শক্তিকে আর কেউ দমন করতে পারবে না। বাংলাদেশের জনগণ যা সিদ্ধান্ত নেয়, তা বাস্তবায়ন করে।”
তিনি দেশবাসীর উদ্দেশ্যে আহ্বান জানান, “দেশপ্রেম, অগ্রগামীতা, গণতন্ত্র, আধুনিকতা ও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে ঘাতক-ফ্যাসিস্ট ইউনূসের নৃশংসতা ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। সন্ত্রাসের গডফাদার ইউনূসের অপশক্তিকে পরাজিত করে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা রক্ষা করতে হবে।”
বিবৃতিতে তিনি গোপালগঞ্জের সাহসী জনগণকে কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, “এই বীর জনপদের জনগণ যে দৃঢ়তা, সাহস ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে, তা জাতিকে গর্বিত করেছে।”
তিনি শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন, শোকাহত পরিবার ও স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন। স্থানীয় নেতাকর্মীদেরকে আহতদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে ও সব ধরনের সহায়তা প্রদানের নির্দেশ দেন। সেই সাথে মুক্তিযুদ্ধের অবিনাশী স্লোগান- জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ চিরজীবী হোক বলে সবার প্রতি সংগ্রামী শুভেচ্ছা জানান।