স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর এবং মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শহীদ তাজউদ্দীন আহমদের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা এক বাণীতে গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
১৯২৫ সালের ২৩ জুলাই গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার দরদরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তাজউদ্দীন আহমদ। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি ব্রিটিশবিরোধী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রগতিশীল রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে খুব শিগগিরই বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য সহযোগী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।
ভাষা আন্দোলন, ছয় দফা, ১৯৭০ সালের নির্বাচন ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তাজউদ্দীন আহমদের নেতৃত্ব ছিল অসামান্য। ২৫ মার্চ কালরাত্রির পর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণহত্যার মধ্যে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ভারতে আশ্রয় নিয়ে তিনি স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের রূপরেখা তৈরি করেন এবং ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে গঠিত প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি তাঁর বাণীতে বলেন, তাজউদ্দীন আহমদ মেধা, প্রজ্ঞা, সততা ও আপসহীন নেতৃত্বের এক উজ্জ্বল প্রতীক। তাঁর দক্ষ নেতৃত্বেই মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত ও পরিচালিত হয়েছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধু তাঁকে অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেন।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে জাতীয় চার নেতার নির্মম হত্যাকাণ্ডের কথাও স্মরণ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। তিনি বলেন, দেশবিরোধী অপশক্তি আজও সক্রিয়। একাত্তরের পরাজিত শক্তির সহযোগিতায় তারা ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা করছে। জাতির পিতার বাড়ি ও সমাধি, তাজউদ্দীনের ভাস্কর্য ও ম্যুরালের ওপর হামলা সেই চক্রান্তেরই অংশ।
তিনি বলেন, “এই অপশক্তির নেতৃত্বে রয়েছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মতো কিছু ক্রীড়নক, যারা অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে রেখেছে।” তিনি দেশবাসীকে আহ্বান জানান আসন্ন লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হতে, যেন মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনাকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা যায়।
বাণীতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শহীদ তাজউদ্দীন আহমদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং বলেন, “তাঁর আদর্শ ও ত্যাগের ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।” তিনি বলেন, “শুভ জন্মশতবার্ষিকী বঙ্গতাজ। আপনার স্মৃতি অমর হোক। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। আঁধার কেটে ভোর হোক — বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”