দীর্ঘ ছয় বছর ধরে নিজের চুল খাওয়ার অদ্ভুত অভ্যাসে ভুগছিল এক কিশোরী। এর ফলে তার পাকস্থলিতে জমে ওঠে প্রায় ২ কেজি ওজনের বিশাল একটি ‘চুলের গোলা’। অবশেষে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সেটি অপসারণ করেন চিকিৎসকেরা।
গত জুলাই মাসে চীনের হুবেই প্রদেশে এ বিরল ঘটনাটি ঘটে। রোববার (১৭ আগস্ট) সাউথ মর্নিং চায়না পোস্টের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মধ্য চীনের হেনান প্রদেশের ১৫ বছর বয়সি কিশোরী নিনি তার মায়ের সঙ্গে হুবেই প্রদেশের উহান শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়। তীব্র পেট ব্যথায় ভুগছিল নিনি, খেতে পারছিল না এবং শারীরিকভাবে ভীষণ দুর্বল হয়ে পড়েছিল।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম হুবেই ডেইলি জানিয়েছে, মেয়েটির অবস্থা ছিল গুরুতর। উচ্চতা ১.৬ মিটার হলেও তার ওজন ছিল মাত্র ৩৫ কেজি। গত ছয় মাস ধরে তার ঋতুস্রাব বন্ধ ছিল এবং সে মারাত্মক রক্তাল্পতায় ভুগছিল।
নিনির মা চিকিৎসকদের জানান, তার মেয়ে প্রায় ছয় বছর ধরে নিজের চুল খাওয়ার অভ্যাসে আসক্ত। এ কারণে চিকিৎসকেরা তার পাকস্থলির ভেতরে জমে থাকা চুল ও খাবারের অবশিষ্টাংশে তৈরি এক বিশাল চুলের বল খুঁজে পান, যা পুরো পাকস্থলিকে ঢেকে ফেলেছিল।
গত ১৪ জুলাই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পাকস্থলি থেকে প্রায় ২ কেজি ওজনের সেই চুলের গোলা অপসারণ করা হয়। অস্ত্রোপচারের সময় চিকিৎসকেরা দেখতে পান, চুল জমে তার পাকস্থলি স্বাভাবিক আকারের দ্বিগুণ হয়ে ফুলে গেছে।
অস্ত্রোপচারের পাঁচ দিন পর নিনি ধীরে ধীরে স্বাভাবিকভাবে খাবার খাওয়া শুরু করে। এরপর তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। ৫ আগস্ট পুনরায় হাসপাতালে ফলোআপ পরীক্ষার জন্য গেলে চিকিৎসকেরা জানান, সে এখন সুস্থ হয়ে উঠেছে।
একজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘যদি কোনো শিশু এক মাসের বেশি সময় ধরে চুল কিংবা কাচের মতো অখাদ্য জিনিস খেতে থাকে এবং তা থামাতে না পারে, তবে অভিভাবকদের “ট্রাইকোফ্যাগিয়া” নামক মানসিক সমস্যার বিষয়ে সতর্ক হতে হবে এবং দ্রুত তাদের হাসপাতালে নিতে হবে।’ ইত্তেফাক/টিএইচ