ঢাকা, বাংলাদেশ – প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় অভিযোগ করেছেন যে, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আওয়ামী লীগকে আগামী নির্বাচন থেকে জোরপূর্বক দূরে রাখতে নতুন ‘কালো আইন’ তৈরির ষড়যন্ত্র করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে তিনি দাবি করেন, প্রস্তাবিত এই আইনগুলোর মূল উদ্দেশ্য হলো আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে তৃণমূল কর্মীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা।
সজীব ওয়াজেদ জয়ের মতে, এই লক্ষ্যে দুটি বিতর্কিত আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রথমত, ‘আইসিটি অর্ডিন্যান্স ২০২৫’-এর জন্য প্রস্তাবিত সংশোধনীতে বলা হচ্ছে, আইসিটি ট্রাইব্যুনালে অভিযুক্ত যেকোনো ব্যক্তি জাতীয় বা স্থানীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যোগ্যতা হারাবেন। দ্বিতীয়ত, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (RPO), ১৯৭২ সংশোধন করে ‘পলাতক’ হিসেবে অভিযুক্ত বা সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদেরও নির্বাচনে অযোগ্য করার বিধান রাখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এই সংশোধনীগুলো ‘Innocent until proven guilty’ বা ‘নির্দোষ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত নির্দোষ’—এই মৌলিক বিচারিক নীতিকে লঙ্ঘন করে। এর মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়া শুরুর আগেই অভিযুক্ত ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করার চেষ্টা হচ্ছে, যা সংবিধান ও বিচার ব্যবস্থার পরিপন্থী।
জয় তার পোস্টে উল্লেখ করেন, প্রস্তাবিত আইসিটি আইনের সংশোধনীটি মূলত আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব এবং বিগত সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে তৈরি করা হয়েছে। অন্যদিকে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের সংশোধনীটি তৃণমূলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকার “লাখ লাখ মিথ্যা মামলা” দিয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
ব্যক্তিগতভাবে তার পরিবারকে লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে উল্লেখ করে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, “ইউনুস সরকার এখন যত দ্রুত সম্ভব আমার পরিবারের সদস্যদের রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এজন্য দুদক-কে ব্যবহার করে একের পর এক মিথ্যা দুর্নীতির মামলা সাজানো হচ্ছে।” তিনি অভিযোগ করেন, এর মূল উদ্দেশ্য হলো সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ ব্যবহার করে তার পরিবারের সদস্যদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা।
ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘জনসমর্থনহীন পাপেট সরকার’ আখ্যা দিয়ে জয় বলেন, একদিকে এই সরকার ও তার সমর্থকরা আওয়ামী লীগকে ‘জনবিচ্ছিন্ন’ বলে প্রচার করছে, অন্যদিকে দলটিকে নির্বাচনে আসতে না দেওয়ার জন্য সব ধরনের চেষ্টা চালাচ্ছে।
তিনি তার বক্তব্যের শেষে মন্তব্য করেন, “এটার একটাই অর্থ দাঁড়ায়—তারা ভীত। একটি স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দিলে কী ফল আসবে সেটা ভেবে তারা প্রচণ্ড ভয় পাচ্ছে। এবং, ভয় তাদের পাওয়াই উচিত।”