বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার পুত্র এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয় অভিযোগ করেছেন, বর্তমান অবৈধ ইউনূস সরকার আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে নিশ্চিহ্ন করতে নতুন নতুন কালো আইন প্রণয়নের চেষ্টা করছে। ফেসবুক প্রোফাইলে এক পোস্টে এই অভিযোগ তুলে ধরে তিনি সরকারের প্রস্তাবিত আইন সংশোধনীগুলোকে ‘অসাংবিধানিক’ ও ‘প্রতিহিংসামূলক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
জয়ের পোস্টে বলা হয়, সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম ইতিমধ্যে অবৈধভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এরপরও ইউনূস সরকার বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে নতুন কৌশল অবলম্বন করছে।
তিনি বলেন, প্রস্তাবিত আইসিটি অর্ডিন্যান্স ২০২৫-এর সংশোধনী এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর সংশোধনীর মাধ্যমে সরকার এমন বিধান প্রণয়ন করতে চায়, যার ফলে আইসিটি ট্রাইব্যুনালে অভিযুক্ত বা ‘পলাতক’ ব্যক্তিরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। এই ট্রাইব্যুনালকে তিনি ‘ক্যাঙ্গারু কোর্ট’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
জয় আরও অভিযোগ করেন, এই সংশোধনীগুলো আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা, শেখ হাসিনা সরকারের কর্মকর্তা এবং তৃণমূল পর্যায়ের কর্মী-সমর্থকদের লক্ষ্য করে তৈরি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এই আইনগুলো ন্যায়বিচারের মূলনীতি ‘ইনোসেন্ট আনটিল প্রোভেন গিল্টি’ (অপরাধ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত নির্দোষ) বাতিল করে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে বিচার শুরুর আগেই অপরাধী হিসেবে বিবেচনা করছে। ফলে, আইসিটি ট্রাইব্যুনালে অভিযুক্ত বা পলাতক ব্যক্তিরা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার যোগ্যতা হারাবেন।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বর্তমান আইন অনুযায়ী নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে দুই বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা সাজাভোগের পাঁচ বছর পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন না। এছাড়া, ১৯৭২ সালের দালাল আইনে সাজাপ্রাপ্তরাও সংবিধানের ৬৬ নং অনুচ্ছেদ অনুসারে নির্বাচনে অযোগ্য। তবে, নতুন সংশোধনীগুলো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিশেষভাবে টার্গেট করছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
জয় অভিযোগ করেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-কে ব্যবহার করে তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা দুর্নীতির মামলা সাজানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিএনপি-সমর্থিত আমলা মোমেনের নেতৃত্বে দুদক এই মামলাগুলো দায়ের করছে, যার উদ্দেশ্য সংবিধানের ৬৬ নং অনুচ্ছেদ ব্যবহার করে তার পরিবারকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া।
তিনি ইউনূস সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ইউনূস সরকার ও তাদের সমর্থকরা একদিকে দাবি করেন আওয়ামী লীগ ‘জনপ্রিয়তা হারিয়েছে’, অন্যদিকে তারা নিশ্চিত করতে চান যেন এই দল নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে। এটি তাদের ভীতি ও আতঙ্কের প্রমাণ বলে তিনি মন্তব্য করেন।
জয় শেষে বলেন, “ভয় তাদের পাওয়াই উচিত।”
তিনি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আহ্বান জানান, যেখানে আওয়ামী লীগ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে।
তার এই পোস্টটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তবে, সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।