৪, ৩, ৪, ২, ১- ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ নারী দলের প্রথম পাঁচ ব্যাটারের ব্যক্তিগত রানের সংখ্যা। দুইশর বেশি রান তাড়া করতে নেমে সর্বোচ্চ ৪৪ রানের জুটি এসেছে অষ্টম উইকেটের জুটিতে। আর সর্বোচ্চ ৩৪ রান করেন ৭ নম্বরে নামা ফাহিমা খাতুন। ব্যাটিং নিয়ে চিন্তা নতুন নয়। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের পরও ব্যাটিং নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। তবে সংবাদ সম্মেলনে সহ অধিনায়ক নাহিদা বলেছিলেন তারা বিশ্বাস করেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ থেকেই ছন্দে ফিরবেন ব্যাটাররা। কিন্তু হলো উল্টোটা, প্রথম দুই ম্যাচের তুলনায় এই ম্যাচে আরও বাজে ব্যাটিং দেখা গেলো। আর তাতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে লড়াইও করতে পারলো না নিগার সুলতানা জ্যোতির দল।
নারী বিশ্বকাপে আজ গুহায়াটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১০০ রানে হেরেছে বাংলাদেশ নারী দল। টস জিতে আগে ব্যাটিং করে ২২৭ রান করে নিউজিল্যান্ড। জবাবে ১২৭ রানে গুটিয়ে যায় টাইগ্রেসরা।
রান তাড়ায় শুরু থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে শারমিন আক্তার সুপ্তার বিদায়ে শুরু হয় ড্রেসিংরুমে ফেরার মিছিল। এরপর একেকজন আসেন আর মিছিলে যোগ দিয়ে ফিরে যান। অষ্টম ওভারে ফেরেন আরেক ওপেনার রুবেয়া হায়দার ঝিলিক।
আগের ম্যাচে ফিফটি করা সোবহানা মোস্তারিও এদিন ফেরেন আগেভাগে। ইনিংসের দশম ওভারে ফেরার আগে করেন মাত্র ২ রান। ১০ ওভার শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে জমা হয় ২২ রান। চলতি আসরে প্রথম পাওয়ার প্লেতে কোনো দলের এটাই সর্বনিম্ন সংগ্রহ। ১৩তম ওভারে নিগার সুলতানা জ্যোতির বিদায়ে কার্যত ম্যাচ থেকে পুরোপুরি ছিটকে যায় টাইগ্রেসরা। ৪ রান করতে বাংলাদেশ অধিনায়ক খরচ করেন ২৮ বল। এক ওভার পর বিদায় নেন সুমাইয়া, মাঝের ৬ বলে আসেনি কোনো রান। ৩৩ রানে ষষ্ট ব্যাটার হিসেবে স্বর্না ফিরলে নাহিদাকে নিয়ে ধাক্কা সামলানোর চেষ্টা করেন ফাহিমা আক্তার। দুজনের জুটিতে যোগ হয় ৩৩ রান। ১৭ রান করা নাহিদা ফিরলে ভাঙে তাদের জুটি। এরপর রাবেয়াকে নিয়ে আরও ৪৪ রানের জুটি গড়েন ফাহিমা। ২ চারে ২৫ রান করে ফেরেন রাবেয়া। শেষদিকে টেল এন্ডারদের নিয়ে লড়াই করেন ফাহিমা। তার ব্যাট থেকে আসে ৩৪ রান।
এর আগে ব্যাটিং করতে নেমে মারুফার সুইং সামলাতে শুরুতে সতর্ক ছিল নিউজিল্যান্ড। তবে খোলস ছেড়ে বের হতে সময় লাগেনি, ষষ্ঠ ওভার করতে আসা মারুফাকে এক ওভারেই ৩ চার মারেন সুজি বেটস। এরপর নবম ওভারে এসে কিউইদের আটকে দেন রাবেয়া খাতুন। ওই ওভারে প্রথমে ফেরান জর্জিয়া প্লিমারকে। একই ওভারে সুজিকে রান আউট করেন মারুফা আক্তার। ১২তম ওভারে আবার আক্রমণে ফিরে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে অ্যামেলিয়া কেরকে বোল্ড করেন রাবেয়া। সবমিলিয়ে দারণ শুরু করা কিউই নারীদের চেপে ধরে নিগার সুলতানা জ্যোতির দল।
এরপর কিউইদের ব্যাটিংয়ের হাল ধরেন অধিনায়ক ডিভাইন ও ব্রুক। বাংলাদেশি স্পিনারদের বিরুদ্ধে চাপের মুহূর্তে বাউন্ডারি আদায় করতে পারছিলেন না দুজনের কেউ। তবে ঠিকই সিঙ্গেল বের করে রানের চাকা সচল রাখছিলেন। ডিভাইন শুরুতে ভুগলেও ব্রুক ঠিকই ছন্দে ছিলেন। দুজনে মিলে প্রাথমিক বিপদ সামাল দিয়ে নিউজিল্যান্ডকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন। ব্রুককে আউট করে ১১২ রানের জুটি ভাঙেন ফাহিমা। ফেরার আগে ৬৯ রান করেন ব্রুক। তিনি ফেরার পর অবশ্য বেশিক্ষণ টেকেননি কিউই অধিনায়কও। সমান ২টি করে চার ও ছক্কায় ৬৩ রান করেন তিনি। এরপর শেষদিকে বাংলাদেশের দুর্দান্ত বোলিংয়ে বেশি বড় হয়নি কিউইদের ইনিংস।